ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
  • 132

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ এই অবস্থানে উঠে এসেছে। অপরদিকে বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থান, ক্রাস্টাশিয়ান্স উৎপাদনে বিশ্বে ৮ম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম ও  মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর ।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ২য়। বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ৩য়।

বিগত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হয়েছে। পক্ষান্তরে চীনের উৎপাদন ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন থেকে কমে ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন টন হয়েছে। ফলে দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪-এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশ চীনকে টপকে ২য় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে- যা বর্তমান সরকারের একটি অভাবনীয় সাফল্য।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু আবেগঘন এক বক্তব্যে বলেছিলেন- আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমার মাটি আছে, আমার সোনার বাংলা আছে, আমার পাট আছে, আমার মাছ আছে, আমার লাইলস্টক আছে। এসব ডেভেলপ করতে পারলে এদিন আমাদের থাকবে না। তার সেই কথা আজ বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিকনির্দেশনা ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়। বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনায় মৎস্যখাতে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সফল বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৯ দশমিক ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন।

মো. আব্দুর রহমান বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকল্পে সেক্টরাল এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়াও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে- যা সুনীল অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা সংযোজনের পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত এবং কৃষিখাতকে গুরুত্ব দিয়েছেন। নিজে মাছ চাষ করছেন। এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।

সংবাদ সম্মেলনে চাহিদার বেশি যোগান থাকার পরও গরুর দাম এতো বেশি কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ, সেখানে প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। ফলে চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি আছে। এরপরও কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাছ চাষে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে। কারেন্ট জাল গোটা বাংলাদেশকে ছেয়ে ফেলেছে। কারেন্ট জাল দিয়ে মাছের রেনু পোনা পর্যন্ত ধরে ফেলা হচ্ছে। এ সময় তিনি এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।

ট্যাগস

মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

আপডেট সময় ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ এই অবস্থানে উঠে এসেছে। অপরদিকে বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম স্থান, ক্রাস্টাশিয়ান্স উৎপাদনে বিশ্বে ৮ম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম ও  মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর ।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২২-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ২য়। বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে ৩য়।

বিগত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হয়েছে। পক্ষান্তরে চীনের উৎপাদন ১ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন টন থেকে কমে ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন টন হয়েছে। ফলে দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪-এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশ চীনকে টপকে ২য় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে- যা বর্তমান সরকারের একটি অভাবনীয় সাফল্য।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু আবেগঘন এক বক্তব্যে বলেছিলেন- আমরা বাংলাদেশের মানুষ, আমার মাটি আছে, আমার সোনার বাংলা আছে, আমার পাট আছে, আমার মাছ আছে, আমার লাইলস্টক আছে। এসব ডেভেলপ করতে পারলে এদিন আমাদের থাকবে না। তার সেই কথা আজ বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিকনির্দেশনা ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৬-১৭ সালে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়। বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনায় মৎস্যখাতে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সফল বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মৎস্য উৎপাদন হয়েছে ৪৯ দশমিক ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন।

মো. আব্দুর রহমান বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও টেকসই মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিতকল্পে সেক্টরাল এ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়নপূর্বক তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়াও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ’ শীর্ষক একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে- যা সুনীল অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা সংযোজনের পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত এবং কৃষিখাতকে গুরুত্ব দিয়েছেন। নিজে মাছ চাষ করছেন। এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।

সংবাদ সম্মেলনে চাহিদার বেশি যোগান থাকার পরও গরুর দাম এতো বেশি কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ১ কোটি ৭ লাখ, সেখানে প্রস্তুত আছে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। ফলে চাহিদার চেয়ে যোগান বেশি আছে। এরপরও কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাছ চাষে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে জবাবে মন্ত্রী বলেন, এটি একটি চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে। কারেন্ট জাল গোটা বাংলাদেশকে ছেয়ে ফেলেছে। কারেন্ট জাল দিয়ে মাছের রেনু পোনা পর্যন্ত ধরে ফেলা হচ্ছে। এ সময় তিনি এর ক্ষতিকর দিক তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।