অনলাইন ডেস্ক : সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি গত ১৬ বছর ধরে যেভাবে ধরে রেখেছেন তা বিশ্বের বিস্ময়। বর্তমানে তার এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। এই দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো যথাসময়ে শেষ হয় না। তার ফলে খরচ বাড়ে, জনগণের হয়রানি বাড়ে। আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছেন এবং তাতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে। এই স্বল্প সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ আমলাদের জন্য সারা আমলাতন্ত্র বদনামের ভাগী হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আব্দুল মোমেন। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সংসদে মোমেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এই বাজেটে দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচার বন্ধের নির্দেশনা এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে। সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছু সংখ্যক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এসব ব্যাপারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে।
সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাজেট শুধু বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, বাজেট এদেশের মানুষের প্রত্যাশা, তাদের জীবন মানের উন্নয়ন, তাদের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত, সরকারের ভিশন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং সেই সব ভিশন অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও তার রূপরেখা জানানোর হাতিয়ার। সেদিক থেকে বাংলাদেশের বাজেট অনন্য। মোমেন বলেন, সাধারণ নাগরিক এখন অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছেন। তাই তারা সবাই জাতির আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন। সাধারণ নাগরিকের বড় প্রশ্ন হচ্ছে-এক-দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুই-অধিকতর কর্মসংস্থান, তিন-রাজস্ব বৃদ্ধি, চার-রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, ও প্রশাসনের হয়রানি বন্ধকরণ।
তিনি আরও বলেন, দেশে যথেষ্ট কর্মসংস্থান না থাকায় প্রতিবছর হাজার হাজার কর্মক্ষম লোক বৈধ ও অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। সরকারি তথ্যমতে আমাদের দেশে ৩.৬% ভাগ বেকার। অর্থনীতির ছাত্র জানে যে ৪% ভাগের নীচে বেকার থাকলে তাকে Full employment বলে। অর্থাৎ দেশে কোনো বেকার নাই। কিন্তু আমার অফিসে প্রতি দশজন দর্শনার্থীর মধ্যে ছয়জনই চাকরির জন্য আসে।
ইতিমধ্যেই ব্যাংকের বেহাল অবস্থা। বাজেটে এর প্রতিকারের কথা থাকলে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো। বরং কালো টাকাকে শতকরা ১৫% ভাগ কর দিয়ে সাদা করার ঘোষণায় যারা সৎ করদাতা তারা হতাশ হয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পরিমার্জন প্রয়োজন বোধ করি। মোমেন বলেন, বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য অর্থ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি Smart Card চালু করার সুপারিশ করেছে। তা গ্রহণ করলে রেমিট্যান্স বাড়বে এবং প্রবাসীদের পরিবারকে শুধু সম্মান নয়, তাদের হয়রানি কমবে।