ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত : প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
  • 31

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও নারী কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছে। যারা এর আগে কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিল তারা কয়জন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল আর কতজন পাশ করেছিল সেই হিসেবটা একটু বের করা দরকার। তারা দেখাক যে পরীক্ষা দিয়ে তারা বেশি পাশ করেছিল, মেয়েরা বেশি পরীক্ষা দিয়ে বেশি চাকরি পেয়েছে কী না? সেটা আগে তারা প্রমাণ করুক। এটা সাবজুডিস  ম্যাটার, আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট করছে। এটা হলো বাস্তবতা। তাই এ আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

রবিবার (৭ জুলাই) সকালে গণভবনে যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার কোটা বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে, সেখানে মেয়েরাও করছে। অনেক অনেক জেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরী পাচ্ছে না। আর এরকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে যাতে হাইকোর্ট একটা রায় দেয়। হাইকোর্টের রায়টা আমরা সবসময়ই মেনে নেই। আমরা সরকারে থেকে এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে পারি না। কারণ হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে। এ সময় তাঁর সরকারের নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সার্বজনীন পেনশন স্কীম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বজনীন পেনশন স্কীম আমরা দিয়েছি এটা সকলের জন্য। এটা আমাদের ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। যেটা আমরা করতে পেরেছি। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবী তারাই পেনশন পায় আর বাকীরা বঞ্চিত থাকে। কাজেই কেউ যাতে বঞ্চিত না থাকে সেজন্য এই পেনশন স্কীমে বিভিন্ন স্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের যুব মহিলা লীগের প্রত্যেকেই এই সার্বজনীন পেনশন স্কীমে যুক্ত হতে পার। যুক্ত হতে পার নিজেদের একটা ভবিষ্যতের জন্য। যখন মানুষের বয়স হয়ে যাবে বা তারা কর্মক্ষম থাকবে না এর মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবকা নির্বাহের জন্য একটি নিশ্চিত অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এটা আজীবন পাবে। আমি মনে করি, যারা আমাদের রাজনীতির সাথে যুক্ত তাদের এ ধরনের পেনশন স্কীমে ঢোকা দরকার। আর যারা একেবারে প্রান্তিক বা নিন্ম আয়ের মানুষ রয়েছে তাদের জন্য এতে বিশেষ প্রণোদণা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগ সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। বিএনপি-জামায়াত যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের অকথ্য নির্যাতন করেছে। তাদের সেই অত্যাচারের অনেক ছবি, চিত্র অনেক কিছুই এখনো রয়েছে। তারপরেও সকল বাধা অতিক্রম করে প্রত্যেকটা সংগ্রামে যুব মহিলা লীগ রাজপথে থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি আমাকে গ্রেফতারের সময় বাধা দিতে গিয়ে অনেকে গ্রেফতার হয়ে করা বরণ করেন। যাদের অনেককে ছোট বাচ্চা ঘরে রেখেও কারাগারে যেতে হয়েছে। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আজকে আমরা সরকারে আসতে পেরেছি। আমরা একটাই জিনিষ চেয়েছিলাম গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠিত হোক।

এ সময় খালেদা জিয়ার ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান, দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগে বাধ্য হওয়া, দেড় কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের চেষ্টা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাঁকে প্রেফতার করা হলে তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন এবং স্বাক্ষর সংগ্রহে যুব মহিলা লীগের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণীর চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। এক পর্যায়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০০২ সালের ৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের এক ঝাঁক সাবেক নেত্রীকে নিয়ে যুব মহিলা লীগ গঠন করেন।

ট্যাগস

বাংলাদেশে কোন সংখ্যালঘু নেই, আমরা সবাই বাংলাদেশী  :  মাওঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৫:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও নারী কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছে। যারা এর আগে কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিল তারা কয়জন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল আর কতজন পাশ করেছিল সেই হিসেবটা একটু বের করা দরকার। তারা দেখাক যে পরীক্ষা দিয়ে তারা বেশি পাশ করেছিল, মেয়েরা বেশি পরীক্ষা দিয়ে বেশি চাকরি পেয়েছে কী না? সেটা আগে তারা প্রমাণ করুক। এটা সাবজুডিস  ম্যাটার, আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট করছে। এটা হলো বাস্তবতা। তাই এ আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

রবিবার (৭ জুলাই) সকালে গণভবনে যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আবার কোটা বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে, সেখানে মেয়েরাও করছে। অনেক অনেক জেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরী পাচ্ছে না। আর এরকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে যাতে হাইকোর্ট একটা রায় দেয়। হাইকোর্টের রায়টা আমরা সবসময়ই মেনে নেই। আমরা সরকারে থেকে এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে পারি না। কারণ হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে। এ সময় তাঁর সরকারের নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সার্বজনীন পেনশন স্কীম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সার্বজনীন পেনশন স্কীম আমরা দিয়েছি এটা সকলের জন্য। এটা আমাদের ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। যেটা আমরা করতে পেরেছি। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবী তারাই পেনশন পায় আর বাকীরা বঞ্চিত থাকে। কাজেই কেউ যাতে বঞ্চিত না থাকে সেজন্য এই পেনশন স্কীমে বিভিন্ন স্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের যুব মহিলা লীগের প্রত্যেকেই এই সার্বজনীন পেনশন স্কীমে যুক্ত হতে পার। যুক্ত হতে পার নিজেদের একটা ভবিষ্যতের জন্য। যখন মানুষের বয়স হয়ে যাবে বা তারা কর্মক্ষম থাকবে না এর মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবকা নির্বাহের জন্য একটি নিশ্চিত অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এটা আজীবন পাবে। আমি মনে করি, যারা আমাদের রাজনীতির সাথে যুক্ত তাদের এ ধরনের পেনশন স্কীমে ঢোকা দরকার। আর যারা একেবারে প্রান্তিক বা নিন্ম আয়ের মানুষ রয়েছে তাদের জন্য এতে বিশেষ প্রণোদণা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যুব মহিলা লীগ সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছিল। বিএনপি-জামায়াত যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীদের অকথ্য নির্যাতন করেছে। তাদের সেই অত্যাচারের অনেক ছবি, চিত্র অনেক কিছুই এখনো রয়েছে। তারপরেও সকল বাধা অতিক্রম করে প্রত্যেকটা সংগ্রামে যুব মহিলা লীগ রাজপথে থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি আমাকে গ্রেফতারের সময় বাধা দিতে গিয়ে অনেকে গ্রেফতার হয়ে করা বরণ করেন। যাদের অনেককে ছোট বাচ্চা ঘরে রেখেও কারাগারে যেতে হয়েছে। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আজকে আমরা সরকারে আসতে পেরেছি। আমরা একটাই জিনিষ চেয়েছিলাম গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠিত হোক।

এ সময় খালেদা জিয়ার ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান, দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগে বাধ্য হওয়া, দেড় কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের চেষ্টা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাঁকে প্রেফতার করা হলে তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন এবং স্বাক্ষর সংগ্রহে যুব মহিলা লীগের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণীর চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। এক পর্যায়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

২০০২ সালের ৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের এক ঝাঁক সাবেক নেত্রীকে নিয়ে যুব মহিলা লীগ গঠন করেন।