ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পাশে থাকবে চীন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
  • 105

নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চাইনিজ পিপল’স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এদিন দুপুরে বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সিপিপিসিসি’র জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের এ বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে উভয়পক্ষ গুরুত্বারোপ করেন। দলীয় নেতারা পারস্পরিক সফরের বিষয়েও ঐক্যমত হয়। এ সময় ওয়াং হুনিং বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং আওয়ামী লীগ উভয়েরই অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ।

এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং নিবাস সেন্ট রেজিস হোটেলের পার্লার রুমে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে সৌজন্য সাক্ষাতের ওপর আলোকপাত করেন।

এ সময় ড. হাছান মাহমুদ জানান, প্রধানমন্ত্রী এআইআইবি-কে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন। এআইআইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়য়ন-অগ্রগতিকে অভূতপূর্ব বলে বর্ণনা করেন।

এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেইজিংয়ের সাংগ্রিলা সার্কেলে ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ সম্মেলনে মঙ্গলবার দুপুরে যোগ দেন। এই বিষয়ে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও চীনের শতাধিক ব্যবসায়ী এই সম্মেলনে যোগ দেয় এবং বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি এমওইউ স্বাক্ষর হয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহবান জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনারাও এ বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহ দেখান। বাংলাদেশ দূতাবাস, বিআইডিএ, বিএসইসি চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স জনাব লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জনাব ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট এবং সিইও জনাব মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব সাইমন লিন তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সকল অনুষ্ঠান অপরিবর্তিত রয়েছে। শুধু ১১ তারিখ সকালের পরিবর্তে ১০ জুলাই রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

শেখ হাসিনা সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রাষ্ট্রীয় সফরে চীন গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এর আগে বুধবার (১০ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীকে চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ অভ্যর্থনা জানানো হবে। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ও দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণার কথা রয়েছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে পাশে থাকবে চীন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪

নিউজ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে চাইনিজ পিপল’স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থেকে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় বেইজিংয়ের সেন্ট রেজিস হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এদিন দুপুরে বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সিপিপিসিসি’র জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যানের এ বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে উভয়পক্ষ গুরুত্বারোপ করেন। দলীয় নেতারা পারস্পরিক সফরের বিষয়েও ঐক্যমত হয়। এ সময় ওয়াং হুনিং বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি এবং আওয়ামী লীগ উভয়েরই অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ।

এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং নিবাস সেন্ট রেজিস হোটেলের পার্লার রুমে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে সৌজন্য সাক্ষাতের ওপর আলোকপাত করেন।

এ সময় ড. হাছান মাহমুদ জানান, প্রধানমন্ত্রী এআইআইবি-কে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন। এআইআইবি’র প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়য়ন-অগ্রগতিকে অভূতপূর্ব বলে বর্ণনা করেন।

এদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেইজিংয়ের সাংগ্রিলা সার্কেলে ‘সামিট অন ট্রেড, বিজনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ সম্মেলনে মঙ্গলবার দুপুরে যোগ দেন। এই বিষয়ে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও চীনের শতাধিক ব্যবসায়ী এই সম্মেলনে যোগ দেয় এবং বাংলাদেশ ও চীনের বেশ কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি এমওইউ স্বাক্ষর হয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চীনা ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বিশ্বের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানান। অবকাঠামো, আইসিটি, পর্যটন, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ জ্বালানি খাত, জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট ফার্মিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সবুজ প্রযুক্তি ও উন্নয়ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহবান জানান শেখ হাসিনা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ও সেখানে চীন রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগের সুযোগের কথা উল্লেখ করলে চীনারাও এ বিষয়ে যথেষ্ট উৎসাহ দেখান। বাংলাদেশ দূতাবাস, বিআইডিএ, বিএসইসি চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স জনাব লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান জনাব ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট এবং সিইও জনাব মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব সাইমন লিন তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সকল অনুষ্ঠান অপরিবর্তিত রয়েছে। শুধু ১১ তারিখ সকালের পরিবর্তে ১০ জুলাই রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

শেখ হাসিনা সোমবার (৮ জুলাই) সকালে রাষ্ট্রীয় সফরে চীন গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এর আগে বুধবার (১০ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীকে চীনের গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ অভ্যর্থনা জানানো হবে। অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ও দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণার কথা রয়েছে।