ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা সংস্কার আন্দোলন : স্মারকলিপি দিতে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
  • 107

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের নামে মামলার প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিতে বঙ্গভবনের ভেতরে প্রবেশ করেছে আন্দোলনকারীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বঙ্গভবনে যাওয়া ১২ জনই আন্দোলনের সমন্বয়ক।

রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে স্মারকলিপি নিয়ে বঙ্গভবনের সামনে পুলিশের চেকপোস্ট দিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন তারা। বাকি শিক্ষার্থীরা গুলিস্তানের আন্ডারপাস থেকে বঙ্গভবন অভিমুখী সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তাদের কোটাবিরোধী নানান স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এর আগে, রবিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। এতে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী।

পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন সকাল ১১ টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সেখান থেকে দুপুর ১২টার দিকে গণপদযাত্রা নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা করেন তারা। এ সময় গুলিস্তানে জিরো পয়েন্টে পুলিশের বাধার মুখে পড়লে ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দিকে রওয়ানা দেন। পুলিশ সেখানে শিক্ষার্থীদের বাধা দিলেও কোনো লাঠিচার্জ করেনি।

এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণপদযাত্রা শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন হয়ে শিক্ষাভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে ব্যারিকেড ভেঙে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে সামনে দিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার পথে জিরো পয়েন্ট এসে আবার বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দোলনকারীরা।

দুপুর দেড়টার পর শিক্ষার্থীরা ওই ব্যারিকেড ভেঙে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট ধরে এগোতে থাকেন। তবে যানজটের কারণে সেখানে আটকা পড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশেই ব্যাপক যানজট দেখা যায়। পৌনে ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেই নানা স্লোগান দিয়ে চলেছেন সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।

সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাশ করতে হবে-এই এক দফা দাবিতে এ গণপদযাত্রা করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৩ জুলাই) আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, রবিবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে গণপদযাত্রা শুরু হবে। এই পদযাত্রা রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে সেখানে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, শেরে বাংলা কলেজসহ ঢাকার সব প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।

এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রধান মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন তারা।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলন : স্মারকলিপি দিতে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে

আপডেট সময় ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা সংস্কার ও শিক্ষার্থীদের নামে মামলার প্রতিবাদে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিতে বঙ্গভবনের ভেতরে প্রবেশ করেছে আন্দোলনকারীদের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। বঙ্গভবনে যাওয়া ১২ জনই আন্দোলনের সমন্বয়ক।

রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে স্মারকলিপি নিয়ে বঙ্গভবনের সামনে পুলিশের চেকপোস্ট দিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন তারা। বাকি শিক্ষার্থীরা গুলিস্তানের আন্ডারপাস থেকে বঙ্গভবন অভিমুখী সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় তাদের কোটাবিরোধী নানান স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এর আগে, রবিবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিল নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। এতে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী।

পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন সকাল ১১ টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। এতে স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সেখান থেকে দুপুর ১২টার দিকে গণপদযাত্রা নিয়ে বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা করেন তারা। এ সময় গুলিস্তানে জিরো পয়েন্টে পুলিশের বাধার মুখে পড়লে ব্যারিকেড ভেঙে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের দিকে রওয়ানা দেন। পুলিশ সেখানে শিক্ষার্থীদের বাধা দিলেও কোনো লাঠিচার্জ করেনি।

এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণপদযাত্রা শুরু হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন হয়ে শিক্ষাভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে ব্যারিকেড ভেঙে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে সামনে দিয়ে বঙ্গভবনে যাওয়ার পথে জিরো পয়েন্ট এসে আবার বাধাপ্রাপ্ত হয় আন্দোলনকারীরা।

দুপুর দেড়টার পর শিক্ষার্থীরা ওই ব্যারিকেড ভেঙে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেট ধরে এগোতে থাকেন। তবে যানজটের কারণে সেখানে আটকা পড়েন আন্দোলনকারীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশেই ব্যাপক যানজট দেখা যায়। পৌনে ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেই নানা স্লোগান দিয়ে চলেছেন সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।

সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া/অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) আইন পাশ করতে হবে-এই এক দফা দাবিতে এ গণপদযাত্রা করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৩ জুলাই) আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, রবিবার সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে গণপদযাত্রা শুরু হবে। এই পদযাত্রা রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে গিয়ে সেখানে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। গণপদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, শেরে বাংলা কলেজসহ ঢাকার সব প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে।

এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়, প্রধান মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন তারা।