সিনিয়র রিপোর্টারবিসিএস পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়।
রবিবার (১৪ জুলাই) ইমেইল ও ডাকযোগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছাড়াও বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ‘ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, পিএসসির সাবেক গাড়িচালক ও অন্যান্য কর্মচারী গত কয়েক দশক ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার্থীদের নিকট সরবরাহ করে আসছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় আবেদ আলীসহ এ পর্যন্ত পিএসসির ১৭ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আবেদ আলী ও অন্যান্য অসাধু কর্মচারীরা কীভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পরীক্ষার্থীদের মাঝে টাকার বিনিময়ে বিতরণ করে প্রত্যেকে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তার বিবরণ দিয়েছেন। পুলিশ আবেদ আলী ও পিএসসির অন্যান্য কর্মচারীদের কাছ থেকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকা করছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা হচ্ছে বিসিএস। লাখ লাখ পরীক্ষার্থীদের লিখিত-মৌখিকসহ বিভিন্ন স্তরে নিবিড়ভাবে যাচাই-বাছাই করে একজন যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়া হয়। এই পুরো প্রক্রিয়ার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ পিএসসি। পিএসসি পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরীক্ষা কেন্দ্রে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পিএসসির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কারণে বিসিএস পরীক্ষা প্রশ্নপত্র নিয়মিত ফাঁস হচ্ছে।
এতে করে একদিকে যেমন অযোগ্য এবং অদক্ষ ব্যক্তিরা প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ লাভের কারণে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়ম বাড়ছে, একইসঙ্গে যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাবে সাধারণ জনগণ প্রজাতন্ত্রের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ফাঁস করা প্রশ্নে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন সরকারি পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতারক কর্মকর্তাদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
নোটিশে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষায় প্রতারণার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগপ্রাপ্ত বিসিএস কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা, বর্তমান পদবি উল্লেখ করে তালিকা প্রণয়ন করে পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত বেতন ভাতাসহ যাবতীয় আর্থিক সুবিধা ফেরত নেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।