ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপের ৪ দেশ বাংলাদেশি কর্মী নেবে তিন হাজার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪
  • 31

সিনিয়র রিপোর্টার

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) চারটি দেশ ইতালি, জার্মানি, গ্রিস ও রোমানিয়া বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজার কর্মী নেবে। এই তিন হাজার কর্মীর দক্ষতার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে আরও কর্মী নেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। পাশাপাশি বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও ২০৩২ সাল পর্যন্ত যাতে আমাদের পণ্যের জন্য ইইউ থেকে জিএসপি বা শুল্কহ্রাস সুবিধাসহ এখন যেসব সুবিধা পাই, সেগুলো যেন অব্যাহত থাকে- সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বিদায়ী সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের রিট্রিট

সাংবাদিকরা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গত ১১-১২ জুলাই অনুষ্ঠিত বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় রিট্রিট সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে- জবাবে ড. হাছান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, চিকিৎসা, জ্বালানি নিরাপত্তা খাতে সহায়তা এবং নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সবুজ শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে রিট্রিটে কথা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের চার তারিখে থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ।

রিট্রিটের সাইডলাইনে ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের জন্য পচনশীল পণ্য আমদানিতে কোটা নির্ধারণের বিষয়টি আবারও এসেছে। তিস্তা বিষয়ে কারিগরী দল প্রেরণ, ব্রিকসে অন্তর্ভুক্তি ও জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়। কিন্তু সেটি রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পর। তাদের বাণিজ্যিক লেনদেনের স্বার্থও আছে, সেটাও তারা গুরুত্ব দিয়েছে।

ট্রাম্পের ওপর গুলির নিন্দা

সাংবাদিকরা এ সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে গুলির ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে- জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। রাজনীতিতে এ ধরণের ঘটনা নিন্দনীয়। রাজনীতিতে আমরা কোনো সংঘাত চাই না। আমাদের দেশে যেমন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, মানুষের সম্পত্তি পোড়ানো হয়, সেটি কখনো কাম্য নয়। এটি অনভিপ্রেত, আইনবিরোধী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে কখনো ভায়োলেন্স ছিল না। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন। রাজনীতিতে সহিংসতা থাকা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের ঘটনা দেখা যায় না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ হামলায় আমরা কনসার্ন এবং নিন্দা জানাই। রাজনীতিতে ভায়োলেন্স থাকা উচিত নয়, সেটি আমরা মনে করি।

এর আগে, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভ্যানিয়ায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ট্রাম্পের ওপর এ হামলা সংঘঠিত হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন

সাংবাদিকরা চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে জানতে চাইলে- জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে এসেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের ওপর সহানুভূতিশীল হয়ে পুরো কোটাই বাতিল করে দিয়েছিল। হাইকোর্ট সেটি পুনর্বহাল করেছিল, সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছে। কোটা আদালতের একটি বিচারাধীন বিষয়। সে কারণে এর ওপর সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালত অবমাননা হবে। আদালতের মাধ্যমেই এর সমাধান হতে হবে।

ড. হাছান বলেন, এখন যে আন্দোলন হচ্ছে সেটির কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না। এটি আসলে আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলিও বটে। সরকার সবসময় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। সে কারণে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল। তবে বাতিল করার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। যেমন অনেক জেলা থেকে অনেক ক্যাডারে কেউ সুযোগ পাচ্ছে না, মেয়েদের অংশগ্রহণ কমে গেছে।

কোটা আন্দোলন থেকে বিএনপি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তো সবসময় চায় দেশকে অস্থিতিশীল করতে। নিজেদের তো কিছু করার ক্ষমতা নেই, তারা অপরের ঘাড়ে চেপে বসে। কোনো সময় কোটার ওপর ভর করে, কোনো সময় তেল-গ্যাসের ওপর ভর করে, কোনো সময় আবার অন্য কিছুর ওপর ভর করে। বিএনপি কোটা আন্দোলন থেকেও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। হাইকোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দিয়েছে। অর্থাৎ সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সেটিই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরও যখন আন্দোলন হয়, বুঝতে হবে এটির সঙ্গে রাজনীতি যুক্ত হয়েছে।

ট্যাগস

ইউরোপের ৪ দেশ বাংলাদেশি কর্মী নেবে তিন হাজার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) চারটি দেশ ইতালি, জার্মানি, গ্রিস ও রোমানিয়া বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজার কর্মী নেবে। এই তিন হাজার কর্মীর দক্ষতার ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতে আরও কর্মী নেওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত। পাশাপাশি বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও ২০৩২ সাল পর্যন্ত যাতে আমাদের পণ্যের জন্য ইইউ থেকে জিএসপি বা শুল্কহ্রাস সুবিধাসহ এখন যেসব সুবিধা পাই, সেগুলো যেন অব্যাহত থাকে- সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

রবিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির বিদায়ী সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের রিট্রিট

সাংবাদিকরা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গত ১১-১২ জুলাই অনুষ্ঠিত বিমসটেক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিতীয় রিট্রিট সম্মেলনের বিষয়ে জানতে চাইলে- জবাবে ড. হাছান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, চিকিৎসা, জ্বালানি নিরাপত্তা খাতে সহায়তা এবং নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সবুজ শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে রিট্রিটে কথা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের চার তারিখে থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ।

রিট্রিটের সাইডলাইনে ভারত ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের জন্য পচনশীল পণ্য আমদানিতে কোটা নির্ধারণের বিষয়টি আবারও এসেছে। তিস্তা বিষয়ে কারিগরী দল প্রেরণ, ব্রিকসে অন্তর্ভুক্তি ও জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়। কিন্তু সেটি রাখাইনের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পর। তাদের বাণিজ্যিক লেনদেনের স্বার্থও আছে, সেটাও তারা গুরুত্ব দিয়েছে।

ট্রাম্পের ওপর গুলির নিন্দা

সাংবাদিকরা এ সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে গুলির ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে- জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। রাজনীতিতে এ ধরণের ঘটনা নিন্দনীয়। রাজনীতিতে আমরা কোনো সংঘাত চাই না। আমাদের দেশে যেমন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, মানুষের সম্পত্তি পোড়ানো হয়, সেটি কখনো কাম্য নয়। এটি অনভিপ্রেত, আইনবিরোধী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে কখনো ভায়োলেন্স ছিল না। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন। রাজনীতিতে সহিংসতা থাকা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরণের ঘটনা দেখা যায় না। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ হামলায় আমরা কনসার্ন এবং নিন্দা জানাই। রাজনীতিতে ভায়োলেন্স থাকা উচিত নয়, সেটি আমরা মনে করি।

এর আগে, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভ্যানিয়ায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ট্রাম্পের ওপর এ হামলা সংঘঠিত হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলন

সাংবাদিকরা চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে জানতে চাইলে- জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটার বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে এসেছে। সরকার শিক্ষার্থীদের ওপর সহানুভূতিশীল হয়ে পুরো কোটাই বাতিল করে দিয়েছিল। হাইকোর্ট সেটি পুনর্বহাল করেছিল, সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছে। কোটা আদালতের একটি বিচারাধীন বিষয়। সে কারণে এর ওপর সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালত অবমাননা হবে। আদালতের মাধ্যমেই এর সমাধান হতে হবে।

ড. হাছান বলেন, এখন যে আন্দোলন হচ্ছে সেটির কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করি না। এটি আসলে আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলিও বটে। সরকার সবসময় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল। সে কারণে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল। তবে বাতিল করার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। যেমন অনেক জেলা থেকে অনেক ক্যাডারে কেউ সুযোগ পাচ্ছে না, মেয়েদের অংশগ্রহণ কমে গেছে।

কোটা আন্দোলন থেকে বিএনপি সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তো সবসময় চায় দেশকে অস্থিতিশীল করতে। নিজেদের তো কিছু করার ক্ষমতা নেই, তারা অপরের ঘাড়ে চেপে বসে। কোনো সময় কোটার ওপর ভর করে, কোনো সময় তেল-গ্যাসের ওপর ভর করে, কোনো সময় আবার অন্য কিছুর ওপর ভর করে। বিএনপি কোটা আন্দোলন থেকেও সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। হাইকোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্ট স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আদেশ দিয়েছে। অর্থাৎ সরকার যে কোটা বাতিল করেছিল, সেটিই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরও যখন আন্দোলন হয়, বুঝতে হবে এটির সঙ্গে রাজনীতি যুক্ত হয়েছে।