ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোটা সংস্কার আন্দোলন, রাজাকার স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে : কাদের

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
  • 217

সিনিয়র রিপোর্টার

শিক্ষার্থীদের রাজাকার স্লোগানের কারণে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি আওয়ামী লীগ করবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের- জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কতিপয় নেতা ছাত্র আন্দোলনের যে বক্তব্য দিয়েছেন, যারা তাদের আত্মস্বীকৃত রাজাকার, নিজেদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে গত রাতে, তার জবাব ছাত্রলীগই দেবে। ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে। তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের- জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রদের স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী  বলেন, যে বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এখানে আমাদেরও অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করে বলতে হয়। যাতে আদালত অবমাননা না হয়। আদালত অবমাননার বিষয়টি আদালতকেই দেখতে হবে। সেটি আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কোনো কিছুই করার নেই। বিচারাধীন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা বারবার আন্দোলনকারীদের বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত বাদ রেখে অন্য কোনো উপায়ে বা বলপ্রয়োগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ মেনে নেবো না, রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সভা-সমাবেশ মেনে নিতে পারি না। আমরা লক্ষ্য করছি, এ আন্দোলনের কুশীলব বিএনপি-জামায়াত, তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলনকারীদের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী  বলেন, এটা অবশ্যই ধৃষ্টতা। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আস্ফালনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের অনেকের রাজনৈতিক বক্তব্য ও স্লোগান আমরা শুনেছি। এতদিন আমরা যে আশঙ্কা করেছি, তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনই করতে যাচ্ছে। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ আছে। সমর্থন তারা প্রকাশ্যেই করেছে। তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানে আমাদের আশঙ্কা গতকাল রাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে।

কাদের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত শিক্ষার্থীদের রাজাকার পরিচয় সংশ্লিষ্ট স্লোগান আমাদের জাতীয় মৌলিক চেতনার সঙ্গে ধৃষ্টতার শামিল। মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সংবেদনশীল। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করতে চায়। তাদের কারসাজিতে গতকাল রাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে। তারা সমগ্র ছাত্রসমাজকে সরকারের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যকে আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা কুশীলবরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন- কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবেন না, তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবেন? এ কথা তিনি যথার্থই বলেছেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে রাজাকারের ঠাঁই হতে পারে না। আমরা বলতে চাই মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান বাঙালি সহ্য করবে না। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেবো না।

যে ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। যারা নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে তাদের ঢাবির শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করা উচিত। তারা কীভাবে নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দেয়? যারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল চেতনাকে অবজ্ঞা করে তারা কীভাবে মেধাবী? তারা কীভাবে জাতি ও ছাত্রসমাজের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

কোটা সংস্কার আন্দোলন, রাজাকার স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে : কাদের

আপডেট সময় ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

শিক্ষার্থীদের রাজাকার স্লোগানের কারণে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি আওয়ামী লীগ করবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের- জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কতিপয় নেতা ছাত্র আন্দোলনের যে বক্তব্য দিয়েছেন, যারা তাদের আত্মস্বীকৃত রাজাকার, নিজেদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে গত রাতে, তার জবাব ছাত্রলীগই দেবে। ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে। তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের- জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রদের স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী  বলেন, যে বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এখানে আমাদেরও অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করে বলতে হয়। যাতে আদালত অবমাননা না হয়। আদালত অবমাননার বিষয়টি আদালতকেই দেখতে হবে। সেটি আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কোনো কিছুই করার নেই। বিচারাধীন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য করা আদালত অবমাননার শামিল। আমরা বারবার আন্দোলনকারীদের বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত বাদ রেখে অন্য কোনো উপায়ে বা বলপ্রয়োগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ মেনে নেবো না, রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সভা-সমাবেশ মেনে নিতে পারি না। আমরা লক্ষ্য করছি, এ আন্দোলনের কুশীলব বিএনপি-জামায়াত, তাদের স্বরূপ উন্মোচিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলনকারীদের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী  বলেন, এটা অবশ্যই ধৃষ্টতা। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী আস্ফালনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের অনেকের রাজনৈতিক বক্তব্য ও স্লোগান আমরা শুনেছি। এতদিন আমরা যে আশঙ্কা করেছি, তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সরকারবিরোধী আন্দোলনই করতে যাচ্ছে। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ আছে। সমর্থন তারা প্রকাশ্যেই করেছে। তাদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী স্লোগানে আমাদের আশঙ্কা গতকাল রাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে।

কাদের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত শিক্ষার্থীদের রাজাকার পরিচয় সংশ্লিষ্ট স্লোগান আমাদের জাতীয় মৌলিক চেতনার সঙ্গে ধৃষ্টতার শামিল। মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সংবেদনশীল। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তি সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত করতে চায়। তাদের কারসাজিতে গতকাল রাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্লোগান উচ্চারিত হয়েছে। তারা সমগ্র ছাত্রসমাজকে সরকারের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যকে আন্দোলনের নেপথ্যে থাকা কুশীলবরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন- কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবেন না, তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবেন? এ কথা তিনি যথার্থই বলেছেন। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে রাজাকারের ঠাঁই হতে পারে না। আমরা বলতে চাই মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান বাঙালি সহ্য করবে না। পরাজিত শক্তির আস্ফালন মেনে নেবো না।

যে ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। যারা নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে তাদের ঢাবির শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করা উচিত। তারা কীভাবে নিজেদের রাজাকার বলে স্লোগান দেয়? যারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল চেতনাকে অবজ্ঞা করে তারা কীভাবে মেধাবী? তারা কীভাবে জাতি ও ছাত্রসমাজের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।