ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন : সাজানো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 119
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার ও দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে তারুণ্যের মিছিলে রাজপথে নেমেছি। সরকারকে আর একতরফা নির্বাচন করতে দেবে না জনগণ। সরকারকে হটাতে এক দফার আন্দোলন জোরদার করতে হবে। বিএনপি ও শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাজানো নির্বাচনে যাবে না।’রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়বাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এই রোডমার্চ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।রোডমার্চ উপলক্ষে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের বগুড়া সদরের এরুলিয়া হাট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার নানা ছলে, কৌশল করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ অসহায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে। চালের দাম, তেলের দাম, লবণের দাম সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
বিদ্যুতের দামও বেড়েছে অনেক। কিন্তু বিদুৎ মানুষে পায় না। লোডশেডিং হতেই আছে। কৃষিকাজের সেচ দিতে পারে না।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ দেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে। রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এ জন্য অর্থনীতির চাকা ঘুরছে না। আজকে এই তরুণেরা সবচেয়ে ভুক্তভোগী। তারাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশের জনসংখ্যা ও তাদের এখন চাকরি নেই।’ ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার বিগত ১৫ বছরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলেছে। তাই আমরা বারবার আমাদের দাবিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে তুলে ধরবার চেষ্টা করছি। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পেরেছেন? পারেননি। ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে জনগণ ভোট দিতে পারে না, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যেতে পারে না। শুধু বিএনপি নয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ঘোষণা দিয়েছে যে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বলছে তাদের অধীনে আগে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, এবারও সুষ্ঠু হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। ২০১৪ সালে দেখেছি, ২০১৮ সালেও দেখেছি। আজকে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। আদালতে গেলে জামিন দেওয়া হয় না বিরোধী আন্দোলনকারী দলগুলোকে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সাঈদীকে জেলে ঢুকিয়ে যেভাবে মেরে ফেলা হয়েছে ঠিক সেভাবে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে ঢুকিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেওয়া হলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করে যদি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন করতে পারি এবং জনগণের ভোটে সেই নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারি, তাহলে আন্দোলনরত দলগুলোকে নিয়ে আমরা একটি জাতীয় সরকার গঠন করবো।’এদিকে রোডমার্চ শুরুর আগে সকাল থেকে বগুড়ার পার্শ্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জ, নাটোর, জয়পুরহাট জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা কার, মাইক্রোবাস, বাস, মিনিবাস, মোটরসাইকেলে করে বগুড়ায় এরুলিয়া হাটে জড়ো হতে থাকেন। শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা। রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ, জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাসহ আরও অনেকে। উদ্বোধনের পর বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বগুড়া থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রোডমার্চ শুরু হয়। বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে যাওয়া এই গাড়ি বহর বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার, নওগাঁয় সমাবেশ ও পথসভা করবে। সেখানে নওগাঁ জেলার গাড়ি রোডমার্চে যুক্ত হবে। এরপর রাজশাহী গিয়ে শেষ হবে সেই গাড়িবহর।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন : সাজানো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি

আপডেট সময় ০৩:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মানুষের ভোটের অধিকার ও দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির প্রতিবাদে তারুণ্যের মিছিলে রাজপথে নেমেছি। সরকারকে আর একতরফা নির্বাচন করতে দেবে না জনগণ। সরকারকে হটাতে এক দফার আন্দোলন জোরদার করতে হবে। বিএনপি ও শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাজানো নির্বাচনে যাবে না।’রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়বাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এই রোডমার্চ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।রোডমার্চ উপলক্ষে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কের বগুড়া সদরের এরুলিয়া হাট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার নানা ছলে, কৌশল করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষ অসহায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে। চালের দাম, তেলের দাম, লবণের দাম সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
বিদ্যুতের দামও বেড়েছে অনেক। কিন্তু বিদুৎ মানুষে পায় না। লোডশেডিং হতেই আছে। কৃষিকাজের সেচ দিতে পারে না।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ দেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে। রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এ জন্য অর্থনীতির চাকা ঘুরছে না। আজকে এই তরুণেরা সবচেয়ে ভুক্তভোগী। তারাই এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অংশের জনসংখ্যা ও তাদের এখন চাকরি নেই।’ ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার বিগত ১৫ বছরে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফেলেছে। তাই আমরা বারবার আমাদের দাবিগুলো শান্তিপূর্ণভাবে তুলে ধরবার চেষ্টা করছি। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে আপনারা ভোট দিতে পেরেছেন? পারেননি। ১৫৩ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে জনগণ ভোট দিতে পারে না, সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যেতে পারে না। শুধু বিএনপি নয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ঘোষণা দিয়েছে যে এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বলছে তাদের অধীনে আগে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, এবারও সুষ্ঠু হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। ২০১৪ সালে দেখেছি, ২০১৮ সালেও দেখেছি। আজকে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। আদালতে গেলে জামিন দেওয়া হয় না বিরোধী আন্দোলনকারী দলগুলোকে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সাঈদীকে জেলে ঢুকিয়ে যেভাবে মেরে ফেলা হয়েছে ঠিক সেভাবে খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলে ঢুকিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দেওয়া হলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করে যদি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচন করতে পারি এবং জনগণের ভোটে সেই নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারি, তাহলে আন্দোলনরত দলগুলোকে নিয়ে আমরা একটি জাতীয় সরকার গঠন করবো।’এদিকে রোডমার্চ শুরুর আগে সকাল থেকে বগুড়ার পার্শ্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জ, নাটোর, জয়পুরহাট জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা কার, মাইক্রোবাস, বাস, মিনিবাস, মোটরসাইকেলে করে বগুড়ায় এরুলিয়া হাটে জড়ো হতে থাকেন। শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে এলাকা। রোডমার্চ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ, জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাসহ আরও অনেকে। উদ্বোধনের পর বাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বগুড়া থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রোডমার্চ শুরু হয়। বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক ধরে যাওয়া এই গাড়ি বহর বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার, নওগাঁয় সমাবেশ ও পথসভা করবে। সেখানে নওগাঁ জেলার গাড়ি রোডমার্চে যুক্ত হবে। এরপর রাজশাহী গিয়ে শেষ হবে সেই গাড়িবহর।