ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কত শোক নিয়ে বেঁচে আছি : প্রধানমন্ত্রী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪
  • 85

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতায় নিহত ৩৪ পরিবারের সদস্যরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বান্তনা দিয়ে বলেন, ‘আমাকে দেখেন, আমি কত শোক নিয়ে বেঁচে আছি।’

রবিবার (২৮ জুলাই)সকালে গণভবনে আসেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারসহ ৩৩টি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজ-খবর নেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আবেগাপ্লুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয় তখন।

তাদের পাশে আছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের ব্যথা বুঝতে পারছি। কারন, আপনাদের মতো স্বজন হারানোর বেদনা আমিও বহন করছি। এটা আমার দুর্ভাগ্য যে আমাকে আপনাদের অশ্রু দেখতে হচ্ছে। এ সময় আন্দোলনে সহিংসতায় নিহত ৩৪ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং নগদ অর্থ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।

দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশব্যাপী সাম্প্রতিক তাণ্ডবের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রচেষ্টা থাকবে। আমার প্রচেষ্টা থাকবে যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের খুঁজে বের করা, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে এটি আমার প্রচেষ্টা হবে, আমি তা করব। এ সময় অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে নিহতদের স্বজনদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদেরও সাহায্য চাই। যদি আপনারা কিছু জানেন আমাদের জানাবেন।

তাদের বিচার করতে হবে, তা না হলে মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না। আমি আপনাদের কষ্টটা অনুভব করতে পারছি। কারণ স্বজন হারাবার বেদনা কখনো ভোলার নয়। আল্লাহ আপনাদের সবর করার শক্তি দিন। আর দোয়া করেন যেন এর একটা বিহিত করা যেতে পারে। আল্লাহকে ডাকেন যেন এই সমস্ত খুনি-জালেম এদের হাত থেকে আমাদের দেশটা রেহাই পায়।

সরকার প্রধান বলেন, মানুষ কী দোষ করলো যে, এভাবে মানুষ খুন করতে হবে! মানুষ খুন করে সরকার পতন এটি কবে হয়, কখন হয়? সাধারণ মানুষ কী দোষ করেছে? তিনি বলেন, এভাবে বারবার বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা করা আর হতে দেওয়া যায় না। কাজেই আমি আপনাদেরই সাহায্য চাই। মানুষ মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখার মতো এই বর্বরতা, জানোয়ারের মতো ব্যবহার, এটি কি কেউ করতে পারে। একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের লাশ ঝুলিয়ে রাখবে পা বেঁধে! যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত অবশ্যই তাদের বিচার হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা দেখেছেন প্রত্যেকটি জিনিস জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। যেখানে মানুষ সেবা পাবে সেই জায়গাগুলো। সেই কোভিড হাসপাতাল থেকে শুরু করে যে যে জায়গায় আমরা মানুষের জন্য কাজ করবো সেইসব জায়গা, প্রত্যেকটি জায়গা একে একে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এইভাবে মানুষকে মারা হয়েছে।

কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবি মানা এবং ধৈর্য্য ধরে তাদের বোঝানো হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য্য ধরে সব সময় তাদের বোঝানো, তাদের সঙ্গে কথা বলা, সব চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে চারদিকে এই হাহাকার। এটি তো সহ্য করা কষ্টকর। শেখ হাসিনা বলেন, যারা আন্দোলন করেছে, তাদের সব দাবিই তো মেনে নিয়েছি। তাতেও নাকি দাবি শেষ হয় না।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বজন হারানোর স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত বাপ-মা-ভাই-বোনদের হারানোর ব্যথা নিয়ে আমাদের চলতে হয়। এমনকি লাশটাও তো দেখতে পারিনি, কাফন-দাফনটাও করতে পারিনি। দেশেও ফিরতে পারিনি, ছয় বছর আসতে দেয়নি আমাকে। যখন (দেশে) এসেছি, সারা বাংলাদেশ ঘুরছি। চেয়েছি যেমন আমার বাবা বলতেন, এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো। সেই চেষ্টাই আমি করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে, এই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটাবে এটিতো কাম্য না।

নিহতদের স্বজনরা গণভবনে আসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সরকার প্রধান বলেন, সবাই এসেছেন কষ্ট করে, দুঃসময়ে। আজকে যদি ভালো সময় হতো কত হাসিখুশি করে সবাই যেতে পারতেন। আর এখন আমারও আপনাদের চোখের পানি দেখতে হচ্ছে। এটিই সবচেয়ে কষ্ট।

সূত্র জানায়, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা শনিবার রংপুর থেকে ঢাকায় পৌঁছে গণভবনে আসেন। গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ মারা যান।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে সঞ্চয়পত্র ও নগদ অর্থসহায়তা দিয়েছেন।

আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী : সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকালে প্রধানমন্ত্রী রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি আহত পুলিশ সদস্যদের মাঝে বেশ কিছু সময় কাটান এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। উন্নত চিকিৎসা এবং দ্রুত সুস্থতার জন্য আহত পুলিশ সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।

গুরুতর আহত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থা দেখে এবং অমানবিক নির্যাতনের কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে অশ্রুসজল হতে দেখা যায়।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। পরে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজ-খবর নেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কত শোক নিয়ে বেঁচে আছি : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতায় নিহত ৩৪ পরিবারের সদস্যরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বান্তনা দিয়ে বলেন, ‘আমাকে দেখেন, আমি কত শোক নিয়ে বেঁচে আছি।’

রবিবার (২৮ জুলাই)সকালে গণভবনে আসেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারসহ ৩৩টি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যরা।

প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজ-খবর নেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আবেগাপ্লুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয় তখন।

তাদের পাশে আছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের ব্যথা বুঝতে পারছি। কারন, আপনাদের মতো স্বজন হারানোর বেদনা আমিও বহন করছি। এটা আমার দুর্ভাগ্য যে আমাকে আপনাদের অশ্রু দেখতে হচ্ছে। এ সময় আন্দোলনে সহিংসতায় নিহত ৩৪ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র এবং নগদ অর্থ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।

দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশব্যাপী সাম্প্রতিক তাণ্ডবের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রচেষ্টা থাকবে। আমার প্রচেষ্টা থাকবে যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের খুঁজে বের করা, তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে এটি আমার প্রচেষ্টা হবে, আমি তা করব। এ সময় অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে নিহতদের স্বজনদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদেরও সাহায্য চাই। যদি আপনারা কিছু জানেন আমাদের জানাবেন।

তাদের বিচার করতে হবে, তা না হলে মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না। আমি আপনাদের কষ্টটা অনুভব করতে পারছি। কারণ স্বজন হারাবার বেদনা কখনো ভোলার নয়। আল্লাহ আপনাদের সবর করার শক্তি দিন। আর দোয়া করেন যেন এর একটা বিহিত করা যেতে পারে। আল্লাহকে ডাকেন যেন এই সমস্ত খুনি-জালেম এদের হাত থেকে আমাদের দেশটা রেহাই পায়।

সরকার প্রধান বলেন, মানুষ কী দোষ করলো যে, এভাবে মানুষ খুন করতে হবে! মানুষ খুন করে সরকার পতন এটি কবে হয়, কখন হয়? সাধারণ মানুষ কী দোষ করেছে? তিনি বলেন, এভাবে বারবার বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা করা আর হতে দেওয়া যায় না। কাজেই আমি আপনাদেরই সাহায্য চাই। মানুষ মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখার মতো এই বর্বরতা, জানোয়ারের মতো ব্যবহার, এটি কি কেউ করতে পারে। একজন মুসলমান আরেকজন মুসলমানের লাশ ঝুলিয়ে রাখবে পা বেঁধে! যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত অবশ্যই তাদের বিচার হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা দেখেছেন প্রত্যেকটি জিনিস জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। যেখানে মানুষ সেবা পাবে সেই জায়গাগুলো। সেই কোভিড হাসপাতাল থেকে শুরু করে যে যে জায়গায় আমরা মানুষের জন্য কাজ করবো সেইসব জায়গা, প্রত্যেকটি জায়গা একে একে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এইভাবে মানুষকে মারা হয়েছে।

কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবি মানা এবং ধৈর্য্য ধরে তাদের বোঝানো হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ধৈর্য্য ধরে সব সময় তাদের বোঝানো, তাদের সঙ্গে কথা বলা, সব চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে চারদিকে এই হাহাকার। এটি তো সহ্য করা কষ্টকর। শেখ হাসিনা বলেন, যারা আন্দোলন করেছে, তাদের সব দাবিই তো মেনে নিয়েছি। তাতেও নাকি দাবি শেষ হয় না।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বজন হারানোর স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত বাপ-মা-ভাই-বোনদের হারানোর ব্যথা নিয়ে আমাদের চলতে হয়। এমনকি লাশটাও তো দেখতে পারিনি, কাফন-দাফনটাও করতে পারিনি। দেশেও ফিরতে পারিনি, ছয় বছর আসতে দেয়নি আমাকে। যখন (দেশে) এসেছি, সারা বাংলাদেশ ঘুরছি। চেয়েছি যেমন আমার বাবা বলতেন, এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো। সেই চেষ্টাই আমি করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে, এই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটাবে এটিতো কাম্য না।

নিহতদের স্বজনরা গণভবনে আসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সরকার প্রধান বলেন, সবাই এসেছেন কষ্ট করে, দুঃসময়ে। আজকে যদি ভালো সময় হতো কত হাসিখুশি করে সবাই যেতে পারতেন। আর এখন আমারও আপনাদের চোখের পানি দেখতে হচ্ছে। এটিই সবচেয়ে কষ্ট।

সূত্র জানায়, আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা শনিবার রংপুর থেকে ঢাকায় পৌঁছে গণভবনে আসেন। গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ মারা যান।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে সঞ্চয়পত্র ও নগদ অর্থসহায়তা দিয়েছেন।

আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী : সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকালে প্রধানমন্ত্রী রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি আহত পুলিশ সদস্যদের মাঝে বেশ কিছু সময় কাটান এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন। উন্নত চিকিৎসা এবং দ্রুত সুস্থতার জন্য আহত পুলিশ সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।

গুরুতর আহত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থা দেখে এবং অমানবিক নির্যাতনের কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে অশ্রুসজল হতে দেখা যায়।

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। পরে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন আহতদের খোঁজ-খবর নেন।