ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী শোক পালন

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
  • 96

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দেশব্যাপী শোক পালন করা হয়। এদিন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করেন। মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া মন্দির-গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ পরে অফিস করেন। এ উপলক্ষে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এমনকি সচিবালয়ের ফটকে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও পোশাকে কালো ব্যাজ পরেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে অফিস শুরু হয়েছে। অনেকেই বাইরে কালো ব্যাজ সংগ্রহ করতে পারেননি। তাই সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সবার জন্য দর্শনীয় জায়গায় কালো ব্যাজ রাখা হয়েছে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাজ পরেই তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।

সচিবালয়ের মূল ফটকে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সকাল থেকেই কালো ব্যাজ ধারণ করে দায়িত্ব পালন করছি।

বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিহতদের স্মরণে দিনব্যাপী শোক পালন চলে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কালো ব্যাজ ধারণ করে দায়িত্ব পালন করেছেন। দিনের পুরোটা সময়ই এই কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মসূচিতে একাত্ম থেকেছি আমরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক পালন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া নিহতদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দুপুরে মন্ত্রণালয়ের মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সবাই এতে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে শোক পালন করেছে আওয়ামী লীগও। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহানগর উত্তর দক্ষিণসহ সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতেই সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের স্মরণে দোয়া করা হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কালো ব্যাজ ধারণ করতে দেখা গেছে।

এদিকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এ ছাড়া মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।  

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, বৈঠকে কোটা আন্দোলন নিয়ে যে পরিস্থিতি হয়েছিল, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। পরে এ নিয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার ভিত্তিতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় এবং মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার এ ঘটনায় ১৪৭ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। তারপর আরো তিনজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখন ১৫০।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে দেশব্যাপী শোক পালন

আপডেট সময় ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দেশব্যাপী শোক পালন করা হয়। এদিন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কালো ব্যাজ ধারণ করে অফিস করেন। মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া মন্দির-গির্জা-প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এদিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কালো ব্যাজ পরে অফিস করেন। এ উপলক্ষে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এমনকি সচিবালয়ের ফটকে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও পোশাকে কালো ব্যাজ পরেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে অফিস শুরু হয়েছে। অনেকেই বাইরে কালো ব্যাজ সংগ্রহ করতে পারেননি। তাই সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সবার জন্য দর্শনীয় জায়গায় কালো ব্যাজ রাখা হয়েছে। সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যাজ পরেই তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।

সচিবালয়ের মূল ফটকে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাইনুদ্দিন বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সকাল থেকেই কালো ব্যাজ ধারণ করে দায়িত্ব পালন করছি।

বাণিজ্য সচিব মো. সেলিম উদ্দিন জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিহতদের স্মরণে দিনব্যাপী শোক পালন চলে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কালো ব্যাজ ধারণ করে দায়িত্ব পালন করেছেন। দিনের পুরোটা সময়ই এই কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মসূচিতে একাত্ম থেকেছি আমরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক পালন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া নিহতদের আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দুপুরে মন্ত্রণালয়ের মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সবাই এতে অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে শোক পালন করেছে আওয়ামী লীগও। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহানগর উত্তর দক্ষিণসহ সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতেই সাম্প্রতিক সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের স্মরণে দোয়া করা হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কালো ব্যাজ ধারণ করতে দেখা গেছে।

এদিকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন। এ ছাড়া মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।  

গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, বৈঠকে কোটা আন্দোলন নিয়ে যে পরিস্থিতি হয়েছিল, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। পরে এ নিয়ে আলোচনা হয়। সেই আলোচনার ভিত্তিতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় এবং মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার এ ঘটনায় ১৪৭ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিলেন। তারপর আরো তিনজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এখন ১৫০।