ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শোকাবহ আগস্ট এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিস্মৃত অধ্যায়

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ১২:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • 112
রফিক সুলায়মান

আগস্ট মানেই শোকের মাস। আগস্ট মানেই জাতির সবচেয়ে বেদনাবহ মাস। আগস্ট মানেই বঙ্গবন্ধুকে হারানোর মাস, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে হারানোর মাস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর পরবর্তী সরকারগুলো এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার তো করেইনি, বরং বিচার বন্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। সে কারণে বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত।

একটি দেশের সরকারপ্রধানকে হত্যার বিচার করতে হলে মামলার অত্যাবশ্যকীয় তথ্য-উপাত্তের দরকার হয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেই কাজটি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃতাধীন একটি টিম। তদন্ত টিমটি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে মামলার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে চার্জশিট দেয়। ২১ বছর রাজপথের রাজনীতি করে ১৯৯৬ সালের জুনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলে ২৩ জুন সরকার গঠন করার পরই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারের পথ সুগম হয়।

৩১ আগস্ট ১৯৯৬ এ ঘটলো এক অভাবনীয় ঘটনা। রাজশাহী আইন কলেজের ছাত্র তাঈদ উদ্দিন খান এবং তার বন্ধু মোহসিনুল হক ধানমণ্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির আওতায় আনার অনুরোধ জানিয়ে একটি মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে এজাহার করেন। ধানমণ্ডি থানা এজাহারটি গ্রহণ করলেও তেমন অগ্রগতি চোখে পড়েনি। সেসময়ের সকল পত্রিকা এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। এমনকি কিছুদিন আগেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আবদুল মান্নান ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই ঘটনার উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অধ্যাপক ড. নীলিমা ইব্রাহিম এক বক্তৃতায় এই ঘটনার উল্লেখ করেছিলেন।

সেদিন তরুণদ্বয় ধানমণ্ডি থানায় যে অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলেন সেটি কেবল সাদামাটা একটি অভিযোগপত্র ছিল না। বাংলাদেশের সংবিধানের নানা অনুচ্ছেদের চুম্বক অংশ তুলে ধরে তারা প্রমাণ করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন যে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর হত্যাকাণ্ডটি ছিল গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারিতে সোপর্দ কিংবা দণ্ডদান করিবার বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না কিংবা কখনো বাতিল বা বেআইনী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না।

সংবিধানের প্রস্তাবনার চতুর্থ প্যারাতে বলা হয়েছে- ‘আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তার সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রতি প্রগতিশীল আশা-আকাক্সক্ষার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’

সংবিধানের এরকম অনেক উদ্ধৃতি ব্যবহার করে লিখিত হয়েছিল অভিযোগপত্রটি। অভিযোগপত্রে অনেক সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন মেজর দেওয়ান এশায়েতউল্লাহ সৈয়দ ফারুক রহমান; পিতা অজ্ঞাত, মেজর খন্দকার আবদুর রশিদ; পিতা অজ্ঞাত, মেজর (অব) শরিফুল হক ডালিম; পিতা অজ্ঞাত, মেজর আজিজ পাশা; পিতা অজ্ঞাত, মেজর শাহরিয়ার; পিতা অজ্ঞাত, মেজর বজলুল হুদা; পিতা অজ্ঞাত, মেজর রশিদ চৌধুরী; পিতা অজ্ঞাত, মেজর মহিউদ্দিন; পিতা অজ্ঞাত, মেজর নূও; পিতা অজ্ঞাত, মেজর শরিফুল হুসাইন; পিতা অজ্ঞাত, ক্যাপ্টেন কিসমত হোসেন; পিতা অজ্ঞাত, লে. খায়রুজ্জামান; পিতা অজ্ঞাত এবং লে. আবদুল মজিদ; পিতা অজ্ঞাত। তাদের মধ্যে আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ির বিশেষ কর্মকর্তা এবং পিএ আ ফ ম মহিতুল ইসলামের দায়ের করা মামলার অন্তত এক মাস আগে এই অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মহিতুল ইসলামের মামলাটির রেশ ধরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়। এখন পর্যন্ত ছয় জন অভিযুক্তের ফাঁসি কার্যকর হয়, বাকি ছয় আসামী পলাতক।

কেন সেদিন অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলেন, এর জবাবে তাঈদ উদ্দিন খান বলেন, সাংবিধানিকভাবে বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। তাই জাতির পিতার সন্তান হিসেবে হৃদয়ের তাগিদ থেকে আমরা অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলাম। তিনি আরো বলেন, আমরা যে কাজ করেছিলাম এ দেশের প্রতিটি নাগরিকেরই এই দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল।

তিনি মনে করেন, পলাতক সকল আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে এই রায় শতভাগ কার্যকর করতে হবে। মানবাধিকারের দোহাই তোলা যেসব দেশ বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে; তাদের কাছে বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার অনুরোধ তারা যেন খুনিদের বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগের কাছে ফিরিয়ে দেয়। অভিযুক্ত সকল খুনির শাস্তি কার্যকর করতে পারলেই বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হবে।

শোকাবহ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগকারী তাঈদ উদ্দিন খান (বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট) এবং মোহসিনুল হকের অনন্য উদ্যোগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

লেখক : সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

আইনজীবী হত্যার তদন্তের নির্দেশ, দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

শোকাবহ আগস্ট এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিস্মৃত অধ্যায়

আপডেট সময় ১২:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
রফিক সুলায়মান

আগস্ট মানেই শোকের মাস। আগস্ট মানেই জাতির সবচেয়ে বেদনাবহ মাস। আগস্ট মানেই বঙ্গবন্ধুকে হারানোর মাস, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে হারানোর মাস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর পরবর্তী সরকারগুলো এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার তো করেইনি, বরং বিচার বন্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। সে কারণে বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা পর্যন্ত।

একটি দেশের সরকারপ্রধানকে হত্যার বিচার করতে হলে মামলার অত্যাবশ্যকীয় তথ্য-উপাত্তের দরকার হয়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেই কাজটি করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃতাধীন একটি টিম। তদন্ত টিমটি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে মামলার প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে চার্জশিট দেয়। ২১ বছর রাজপথের রাজনীতি করে ১৯৯৬ সালের জুনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলে ২৩ জুন সরকার গঠন করার পরই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারের পথ সুগম হয়।

৩১ আগস্ট ১৯৯৬ এ ঘটলো এক অভাবনীয় ঘটনা। রাজশাহী আইন কলেজের ছাত্র তাঈদ উদ্দিন খান এবং তার বন্ধু মোহসিনুল হক ধানমণ্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তির আওতায় আনার অনুরোধ জানিয়ে একটি মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে এজাহার করেন। ধানমণ্ডি থানা এজাহারটি গ্রহণ করলেও তেমন অগ্রগতি চোখে পড়েনি। সেসময়ের সকল পত্রিকা এমনকি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। এমনকি কিছুদিন আগেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আবদুল মান্নান ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এই ঘটনার উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অধ্যাপক ড. নীলিমা ইব্রাহিম এক বক্তৃতায় এই ঘটনার উল্লেখ করেছিলেন।

সেদিন তরুণদ্বয় ধানমণ্ডি থানায় যে অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলেন সেটি কেবল সাদামাটা একটি অভিযোগপত্র ছিল না। বাংলাদেশের সংবিধানের নানা অনুচ্ছেদের চুম্বক অংশ তুলে ধরে তারা প্রমাণ করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন যে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর হত্যাকাণ্ডটি ছিল গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের জন্য কোন সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য কিংবা যুদ্ধবন্দীকে আটক, ফৌজদারিতে সোপর্দ কিংবা দণ্ডদান করিবার বিধান সংবলিত কোন আইন বা আইনের বিধান এই সংবিধানের কোন বিধানের সহিত অসামঞ্জস বা তাহার পরিপন্থী, এই কারণে বাতিল বা বেআইনী বলিয়া গণ্য হইবে না কিংবা কখনো বাতিল বা বেআইনী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে না।

সংবিধানের প্রস্তাবনার চতুর্থ প্যারাতে বলা হয়েছে- ‘আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তার সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রতি প্রগতিশীল আশা-আকাক্সক্ষার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেইজন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ন রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’

সংবিধানের এরকম অনেক উদ্ধৃতি ব্যবহার করে লিখিত হয়েছিল অভিযোগপত্রটি। অভিযোগপত্রে অনেক সেনা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন মেজর দেওয়ান এশায়েতউল্লাহ সৈয়দ ফারুক রহমান; পিতা অজ্ঞাত, মেজর খন্দকার আবদুর রশিদ; পিতা অজ্ঞাত, মেজর (অব) শরিফুল হক ডালিম; পিতা অজ্ঞাত, মেজর আজিজ পাশা; পিতা অজ্ঞাত, মেজর শাহরিয়ার; পিতা অজ্ঞাত, মেজর বজলুল হুদা; পিতা অজ্ঞাত, মেজর রশিদ চৌধুরী; পিতা অজ্ঞাত, মেজর মহিউদ্দিন; পিতা অজ্ঞাত, মেজর নূও; পিতা অজ্ঞাত, মেজর শরিফুল হুসাইন; পিতা অজ্ঞাত, ক্যাপ্টেন কিসমত হোসেন; পিতা অজ্ঞাত, লে. খায়রুজ্জামান; পিতা অজ্ঞাত এবং লে. আবদুল মজিদ; পিতা অজ্ঞাত। তাদের মধ্যে আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ির বিশেষ কর্মকর্তা এবং পিএ আ ফ ম মহিতুল ইসলামের দায়ের করা মামলার অন্তত এক মাস আগে এই অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মহিতুল ইসলামের মামলাটির রেশ ধরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হয়। এখন পর্যন্ত ছয় জন অভিযুক্তের ফাঁসি কার্যকর হয়, বাকি ছয় আসামী পলাতক।

কেন সেদিন অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলেন, এর জবাবে তাঈদ উদ্দিন খান বলেন, সাংবিধানিকভাবে বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। তাই জাতির পিতার সন্তান হিসেবে হৃদয়ের তাগিদ থেকে আমরা অভিযোগপত্রটি দায়ের করেছিলাম। তিনি আরো বলেন, আমরা যে কাজ করেছিলাম এ দেশের প্রতিটি নাগরিকেরই এই দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল।

তিনি মনে করেন, পলাতক সকল আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে এই রায় শতভাগ কার্যকর করতে হবে। মানবাধিকারের দোহাই তোলা যেসব দেশ বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে; তাদের কাছে বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার অনুরোধ তারা যেন খুনিদের বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগের কাছে ফিরিয়ে দেয়। অভিযুক্ত সকল খুনির শাস্তি কার্যকর করতে পারলেই বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হবে।

শোকাবহ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগকারী তাঈদ উদ্দিন খান (বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট) এবং মোহসিনুল হকের অনন্য উদ্যোগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।

লেখক : সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী।