সিনিয়র রিপোর্টার
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন,সরকার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান করতে চায়। আমরা সংঘাত এড়ানোর জন্য আলোচনার দরজা খোলা রেখেছি। আমরা সংঘাতে যেতে চাচ্ছি না। সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস করলে আইনের প্রয়োগও ঘটাতে হবে। কিন্তু অশান্তি সৃষ্টি করা হলে তা শক্ত হাতে দমন করা হবে। আমরা সন্ত্রাসকে দমন করবো।
রবিবার (৪ আগস্ট) বিকালে সংসদ ভবনের টানেলে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন আর আন্দোলনের জায়গায় নেই। এখন সন্ত্রাস-সহিংসতায় চলে গেছে। আমাদের শান্তির পক্ষে অবস্থান ছিল। আমরা আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। সহিসংতার ফলে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল তার বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। যারা আহত-নিহত হয়েছেন এদের মধ্যে অনেকে শিশু ছিল। এই মৃত্যুগুলোর জন্য বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষ কাঁদছে। এই মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার করতে হবে।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, তদন্ত করে জানতে হবে কারা এই হত্যাগুলো করেছে। এই শিশুরা সরকার পতনের আন্দোলন করছিল না। এই শিশুরা বেঁচে থাকলে সরকারের কী ক্ষতি হতো? এই শিশুদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সরকারের কি লাভ হয়েছে? আমি সাধারণ মানুষের বিবেকের কাছে এ প্রশ্নগুলো করতে চাই। এই মৃত্যুগুলো, এই লাশের ওপর দাড়িয়ে কারা এর সুবিধা নিয়েছে, মানুষকে উসকে দিয়েছে? কারা মানুষকে উসকে দিয়ে বিপথে পরিচালিত করেছে এবং তাদের বিভিন্ন ধরণের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছে?
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই বিচার চাই। কিন্তু রায় দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার মানে বিচার চাওয়া হচ্ছে না। সরকার বিচার চায় সেজন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় কমিশন কাজ শুরু করেছে। আজ তারা রংপুরে গেছে। তারা বিদেশি এক্সপার্টদের আনছে।তাঁরাও এ তদন্তে ঢুকবে।তাঁরাও বলবে তদন্তে কি পাচ্ছে, না পাচ্ছে। একবারে স্বচ্ছতার সাথে। তদন্তের পর জানা যাবে কে, কিভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। আমরা সঠিক বিচারের মাধ্যমে আসল অন্যায়কারীকে ধরতে চাই। কিন্তু যারা তদন্তের আগে, বিচারের আগে রায় দিতে চাচ্ছে, বলছে সরকার দায়ী, সরকার খুনি তাহলেতো তারা বিচার চাচ্ছে না। তারা আসল অন্যায়কারীকে ধরতে চাচ্ছে না। এটা পরিস্কার। তারা কি চাচ্ছে সে ঘোষণা তারা গতকাল দিয়েছে। কোটা, অধিকার এ আসল জায়গায় তারা নেই। এ ঘোষণার পরে তারা এটা অর্জন করতে চাচ্ছে সন্ত্রাস এবং সহিংসতার পথে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আরাফাত বলেন, বিএনপি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। আন্দোলনকারীরা বিএনপির সঙ্গে একাক্মতা প্রকাশ করেছে। এখন আর তারা আলাদা থাকলো না। এটা বিএনপি জামায়াতই হয়ে গেলো। মূলত এতদিন তাদের দাবি ছিল কোটা। সেটা পূরণ হলো। তারপর দাবি ছিল, আলোচনা, সেটার দ্বার খুলে দেওয়া হলো। দাবি ছিল বিচার সেটাও পূরণ হচ্ছে। তাদের সব দাবি পূরণ হয়ে গেলো। তারপর এখন তাদের এক দফার দাবি। এখন ওখানে তারা যেতেই চাইবে। তারা বিএনপি-জামায়াতদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে নিজস্ব পরিচয় ডিজলভ করে। ২৮ অক্টোবর যাদের মোকাবিলা করেছিলাম তারাই সামনে চলে এসেছে। এটা এখন জনগণ আর ছাত্রদের অধিকারের যায়গায় থাকলো না। এখন যদি তারা সন্ত্রাস করে সেটা আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো।
সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে যে সন্ত্রাসীরা ঢুকেছে, তারা প্রতিহতের শিকার হয়েছে। সাধারণ মানুষ এটা প্রতিহত করেছে। সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে জাগছে এবং জাগবে এটাই বাস্তবতা। দেশে একটা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং শৃঙ্খলা থাকলে বিচারকার্য থেকে শুরু করে সব ধরণের দাবির সমাধান করা যাবে। সন্ত্রাস-সহিংসতার মাধ্যমে কিছু করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবার পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিগুলো হয়েছে। কোটা আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা কোথাও কোনও কর্মসূচি দেইনি। আমাদের অবস্থান ছিল পুরো শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল। আমরা অশান্তি,সংঘাত-সহিংসতা চাই না।