সিনিয়র রিপোর্টার
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বেলা পৌনে ১২টার দিকে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে দুজনের মরদেহের ওপরে পুলিশের পোশাক দেখা গেছে। আরেকজনের মরদেহের হাতে হাতকড়া পরানো রয়েছে।
মরদেহগুলো ঘিরে শত শত মানুষের জটলা দেখা গেছে। থানার সামনে অন্তত সাত থেকে আটটি পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পোড়া গাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিস লুট করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে মানুষকে। থানার ভেতরেও মানুষজনকে ঢুকতে দেখা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছিলেন যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায়। তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। এতে নিহত হন অনেকে।
ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গুলিতে মারা যাওয়া ৩০ জনকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে তারা থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের মারধর করেন। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য হতাহত হন।
যাত্রাবাড়ীর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. শোয়াইব ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বলেন, ‘জোহরের নামাজ আদায়ের পর আমরা সবাই যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ছিলাম। হঠাৎ পুলিশ আমাদের ওপর গুলি করতে শুরু করে। আমি অন্তত ১০–১৫ জনকে থানার সামনে মরে পড়ে থাকতে দেখি। পরে যখন গোলাগুলি থামে, তখন থানার সামনে পড়ে থাকা লাশগুলো নিয়ে আসি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালান। সোমবার দিনভর পুলিশ সদর দপ্তরসহ রাজধানী ঢাকার ১৩টি ও ঢাকার বাইরে সাতটি থানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরা ও শেরপুর জেলা কারাগারে হামলা হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কতজন হতাহত হয়েছেন ও কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আন্দোলনকারীরা পুলিশ সদর দপ্তরের প্রধান ফটক ভেঙে ঢুকে ভাঙচুর চালান। পুলিশ সদর দপ্তরের অনেক কর্মকর্তা এ সময় কার্যালয়ে আটকা পড়েন। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তারা পূর্ব দিকের দেয়াল টপকে নগর ভবনের ভেতরে চলে যান। পরে সেখান থেকে বের হয়ে যে যার গন্তব্যে চলে যান।