ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন নিশ্চিত করবে ভারত, আশা জয়ের

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • 88

সিনিয়র রিপোর্টার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমি আশা করব, ভারত নিশ্চিত করবে যে ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অরাজকতা বন্ধ হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে। যদি তা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনও নিশ্চিত যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হবো। আমরা এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। এখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের আশা, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে পদক্ষেপ নিবে ভারত সরকার। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে ‘ভারতের প্রতি জয়ের কী বার্তা’ জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমি মনে করি, আমাদের সরকারের উচিত ছিল কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা এবং আদালতের হাতে বিষয়টি ছেড়ে না দিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। কোটা কমাতে আমাদের সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। আদালত ভুল করেছেন এবং আমরা কোটা চাইনি বলে আমি জনসমক্ষে অবস্থান নিতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের সরকার তা করেনি, তাদের আশা ছিল, আদালত এটি দেখবে।

জয় বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। গত ১৫ জুলাই থেকে আন্দোলনকারীদের অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গত ১৫ বছরে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতার কারণে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া খুবই কঠিন। কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা-ই দেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার এবং বিক্ষোভকারীদের তা সরবরাহ করতে সক্ষম।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে তার মায়ের বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার একদিন আগেও তিনি বা হাসিনা কেউই অনুমান করেননি পরিস্থিতির অবনতি কতটা দ্রুত ঘটবে। বাংলাদেশে পরিস্থিতি কেমন হয়, তা দেখার জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন। তিনি আপাতত ভারতে থাকবেন।

তিনি বলেন, মায়ের দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন এবং জনগণের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেবেন। তিনি বিবৃতির খসড়া তৈরি করেছিলেন এবং সেটি রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি যখন রেকর্ডিং শুরু করতে যান, তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ম্যাম, সময় নেই। আমাদের এখন যেতে হবে। সবকিছুই পরিকল্পিত ছিল।

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে সামরিক বিমানঘাঁটির মধ্যে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তিনি যেতে চাননি। তখনই আমার খালা (শেখ রেহানা) আমাকে ডাকলেন। আমি মাকে বোঝালাম যে তোমার নিরাপত্তার জন্য তোমাকে চলে যেতে হবে। যদি এই জনতা তোমাকে খুঁজে পায়, কোথাও ধরে ফেলে এবং সেখানে গুলি চলে, তাহলে অনেক মানুষ মারা যাবে। হয় তোমাকে এই হত্যার জন্য দায় দেবে কিংবা যদি তোমাকে ধরে ফেলে তাহলে মেরে ফেলবে। তাই সবচেয়ে ভালো হবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং আমিই তাকে চলে যেতে রাজি করিয়েছি।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতা নিহত এবং গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দাললন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দ্রুত তা রুপ নেয় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে। সোমবার (৫ আগস্ট) কারফিউ ভেঙে ঢাকায় রাস্তায় জনতার ঢল নামে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মা শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

(ছবি: সংগৃহীত) ভিডিও সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা

৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন নিশ্চিত করবে ভারত, আশা জয়ের

আপডেট সময় ০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, আমি আশা করব, ভারত নিশ্চিত করবে যে ৯০ দিনের সাংবিধানিক সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অরাজকতা বন্ধ হবে এবং আওয়ামী লীগকে প্রচারণা ও পুনর্গঠনের অনুমতি দেওয়া হবে। যদি তা নিশ্চিত করা হয়, আমি এখনও নিশ্চিত যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হবো। আমরা এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। এখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের আশা, বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে পদক্ষেপ নিবে ভারত সরকার। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে ‘ভারতের প্রতি জয়ের কী বার্তা’ জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমি মনে করি, আমাদের সরকারের উচিত ছিল কোটার বিরুদ্ধে কথা বলা এবং আদালতের হাতে বিষয়টি ছেড়ে না দিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। কোটা কমাতে আমাদের সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। আদালত ভুল করেছেন এবং আমরা কোটা চাইনি বলে আমি জনসমক্ষে অবস্থান নিতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের সরকার তা করেনি, তাদের আশা ছিল, আদালত এটি দেখবে।

জয় বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আন্দোলন সহিংস রূপ নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। গত ১৫ জুলাই থেকে আন্দোলনকারীদের অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গত ১৫ বছরে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আমাদের সফলতার কারণে বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া খুবই কঠিন। কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা-ই দেশে আগ্নেয়াস্ত্র পাচার এবং বিক্ষোভকারীদের তা সরবরাহ করতে সক্ষম।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে তার মায়ের বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার একদিন আগেও তিনি বা হাসিনা কেউই অনুমান করেননি পরিস্থিতির অবনতি কতটা দ্রুত ঘটবে। বাংলাদেশে পরিস্থিতি কেমন হয়, তা দেখার জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন। তিনি আপাতত ভারতে থাকবেন।

তিনি বলেন, মায়ের দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না। তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছিলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন এবং জনগণের উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তায় এই ঘোষণা দেবেন। তিনি বিবৃতির খসড়া তৈরি করেছিলেন এবং সেটি রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি যখন রেকর্ডিং শুরু করতে যান, তখন বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বলেন, ম্যাম, সময় নেই। আমাদের এখন যেতে হবে। সবকিছুই পরিকল্পিত ছিল।

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী তাকে সামরিক বিমানঘাঁটির মধ্যে একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত ছিল। কিন্তু তিনি যেতে চাননি। তখনই আমার খালা (শেখ রেহানা) আমাকে ডাকলেন। আমি মাকে বোঝালাম যে তোমার নিরাপত্তার জন্য তোমাকে চলে যেতে হবে। যদি এই জনতা তোমাকে খুঁজে পায়, কোথাও ধরে ফেলে এবং সেখানে গুলি চলে, তাহলে অনেক মানুষ মারা যাবে। হয় তোমাকে এই হত্যার জন্য দায় দেবে কিংবা যদি তোমাকে ধরে ফেলে তাহলে মেরে ফেলবে। তাই সবচেয়ে ভালো হবে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া এবং আমিই তাকে চলে যেতে রাজি করিয়েছি।

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতা নিহত এবং গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দাললন শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। দ্রুত তা রুপ নেয় সরকার পতনের এক দফা দাবিতে। সোমবার (৫ আগস্ট) কারফিউ ভেঙে ঢাকায় রাস্তায় জনতার ঢল নামে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মা শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন সজীব ওয়াজেদ জয়।

(ছবি: সংগৃহীত) ভিডিও সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয়।