ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রেনেড হামলা দিবসের ২০তম বার্ষিকী আজ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪
  • 94

সিনিয়র রিপোর্টার

আজ ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংস হামলা হয়। ঘাতকরা সমাবেশ মঞ্চকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড হামলা চালায়। পাশাপাশি চলে গুলিবর্ষণও। 

সেদিনের সেই ঘটনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। নিহত অন্যরা হলেন- নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া প্রমুখ।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সাংবাদিক, পথচারীসহ অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হন। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। নেতাকর্মীদের তৈরি ‘মানবঢালে’ শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ- তাদের দলকে নেতৃত্ব শূন্য করতে শেখ হাসিনাসহ প্রথম সারির জাতীয় নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ওই ঘৃণ্য হামলা চালানো হয়েছিল। ওই ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিল এখন হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ-সংক্রান্ত হত্যা মামলায় হাইকোর্টে আংশিক শুনানি হয়েছে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি শুরুর পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। 

ওই হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথরেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় পৃথক জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি শুরু করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি পরিবর্তন হয়েছে। গত রবিবার আসামিপক্ষের এক আইনজীবীর সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অবকাশকালীন ছুটি শেষে খোলার পর শুনানির জন্য রেখেছেন।

এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন দণ্ডিত ব্যক্তির পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পেপারবুক উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। পরবর্তী সময়ে কারফিউ ও সাধারণ ছুটির মধ্যে আদালতের কার্যক্রম চলেনি। বিষয়টি আংশিক শ্রুত হিসেবে ছিল। 

এদিকে প্রতি বছর ২১ আগস্ট উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বাণী দিলেও এবার তা হয়নি। আর ছাত্র আন্দোলনের কারণে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার কারণে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রেনেড হামলা দিবসের ২০তম বার্ষিকী আজ

আপডেট সময় ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

আজ ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ মিছিলপূর্ব সমাবেশে ইতিহাসের জঘন্যতম নৃশংস হামলা হয়। ঘাতকরা সমাবেশ মঞ্চকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গ্রেনেড হামলা চালায়। পাশাপাশি চলে গুলিবর্ষণও। 

সেদিনের সেই ঘটনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। নিহত অন্যরা হলেন- নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া প্রমুখ।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সাংবাদিক, পথচারীসহ অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হন। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। নেতাকর্মীদের তৈরি ‘মানবঢালে’ শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ- তাদের দলকে নেতৃত্ব শূন্য করতে শেখ হাসিনাসহ প্রথম সারির জাতীয় নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ওই ঘৃণ্য হামলা চালানো হয়েছিল। ওই ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিল এখন হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ-সংক্রান্ত হত্যা মামলায় হাইকোর্টে আংশিক শুনানি হয়েছে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি শুরুর পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। 

ওই হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত মামলা দুটির রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত।

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ২০১৮ সালে এটি হাইকোর্টে ডেথরেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত ব্যক্তিরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দুই মামলায় পৃথক জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানি শুরু করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি পরিবর্তন হয়েছে। গত রবিবার আসামিপক্ষের এক আইনজীবীর সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অবকাশকালীন ছুটি শেষে খোলার পর শুনানির জন্য রেখেছেন।

এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন দণ্ডিত ব্যক্তির পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পেপারবুক উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। পরবর্তী সময়ে কারফিউ ও সাধারণ ছুটির মধ্যে আদালতের কার্যক্রম চলেনি। বিষয়টি আংশিক শ্রুত হিসেবে ছিল। 

এদিকে প্রতি বছর ২১ আগস্ট উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বাণী দিলেও এবার তা হয়নি। আর ছাত্র আন্দোলনের কারণে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার কারণে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেনি আওয়ামী লীগ।