ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যার্তদের জন্য ২০ হাজার মার্কিন ডলার দিলো চীন

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪
  • 16

সিনিয়র রিপোর্টার

বাংলাদেশে চলমান বন্যাকবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। বন্যার্তদের সহায়তার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ২০ হাজার মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে দেশটি।

রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অনুদানের চেক তুলে দেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীনের কিছু সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানান।

সাক্ষাতে ইয়াও ওয়েন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনা রেড ক্রসও বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদান করবে। গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারকে চীন সহযোগিতা করবে।

প্রধান উপদেষ্টাও বেইজিং ও ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে  তিনি বলেন, চীন সোলার প্যানেলের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তবে রপ্তানি বাজারে ক্রমবর্ধমান বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, চীনা উৎপাদনকারীরা তাদের সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারেন। এটি বাংলাদেশকে রপ্তানি  বৈচিত্র্যকরণ ও সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরে সহায়তা করবে। এ সময় তিনি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে চীনে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানি সম্প্রসারণের পাশাপাশি তিনি উভয় দেশের মধ্যে প্রযুক্তি স্থানান্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও কৃষিখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বানও জানান।

বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় চীনা নেতৃবন্দ এবং জনগণের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত এবং আমি আশাবাদী যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ সফল হবে।

এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল এবং সমৃদ্ধ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও বাংলাদেশের কৌশলগত এবং সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উচ্চ শিখরে রয়েছে। উভয় দেশ আগামী বছর তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বছর উদযাপন করবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা কবলিত অঞ্চলে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে চীনা সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

বৈঠকে ড. ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে চীন বাংলাদেশে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

প্রধান উপদেষ্টা চীনে তার স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং অনেক তরুণ ত্রি-জিরো ক্লাব গঠন করেছে। এসব ক্লাবের সদস্যরা দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূত ড. ইউনূসকে তার সুবিধাজনক সময়মত চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটা সন্ধিক্ষণ পার করছে তবে বাংলাদেশের জনগণ এই চ্যলেঞ্জ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।

ট্যাগস

খুলনা থানায় ঝুলিয়ে নির্যাতনের এক যুগ পর সাবেক ওসিসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

বন্যার্তদের জন্য ২০ হাজার মার্কিন ডলার দিলো চীন

আপডেট সময় ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

বাংলাদেশে চলমান বন্যাকবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। বন্যার্তদের সহায়তার লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ২০ হাজার মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে দেশটি।

রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ অনুদানের চেক তুলে দেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীনের কিছু সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানান।

সাক্ষাতে ইয়াও ওয়েন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনা রেড ক্রসও বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদান করবে। গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অন্তর্বর্তী সরকারকে চীন সহযোগিতা করবে।

প্রধান উপদেষ্টাও বেইজিং ও ঢাকার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে  তিনি বলেন, চীন সোলার প্যানেলের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তবে রপ্তানি বাজারে ক্রমবর্ধমান বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, চীনা উৎপাদনকারীরা তাদের সোলার প্যানেল কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করতে পারেন। এটি বাংলাদেশকে রপ্তানি  বৈচিত্র্যকরণ ও সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তরে সহায়তা করবে। এ সময় তিনি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে চীনে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানি সম্প্রসারণের পাশাপাশি তিনি উভয় দেশের মধ্যে প্রযুক্তি স্থানান্তর, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও কৃষিখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বানও জানান।

বাংলাদেশের অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় চীনা নেতৃবন্দ এবং জনগণের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বেইজিং ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত এবং আমি আশাবাদী যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ সফল হবে।

এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল এবং সমৃদ্ধ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও বাংলাদেশের কৌশলগত এবং সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উচ্চ শিখরে রয়েছে। উভয় দেশ আগামী বছর তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বছর উদযাপন করবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা কবলিত অঞ্চলে অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে চীনা সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।

বৈঠকে ড. ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে চীন বাংলাদেশে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

প্রধান উপদেষ্টা চীনে তার স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, চীনের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনূস সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং অনেক তরুণ ত্রি-জিরো ক্লাব গঠন করেছে। এসব ক্লাবের সদস্যরা দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূত ড. ইউনূসকে তার সুবিধাজনক সময়মত চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটা সন্ধিক্ষণ পার করছে তবে বাংলাদেশের জনগণ এই চ্যলেঞ্জ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে।