ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার ৫০০ কোটি ডলার ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা : রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৪:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪
  • 87

সিনিয়র রিপোর্টার

বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বা ৫০০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব।

রবিবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি বলেন, পাঁচ বিলিয়ন ডলার একটি বড় অঙ্কের অর্থ, যেখানে প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান, সেখান থেকে এত বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা কি এতই পাগল হয়ে গেছি, একজনকে ৫০০ কোটি ডলার দেবো! ইটস রিউমারস অ্যান্ড কমপ্লিটলি ফলস। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই এই গুজবের প্লট তৈরি করা হয়েছিল বলে জানান রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত। সে সময় রাশিয়া নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে ভবিষ্যতে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা এবং বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানান আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি।

এর আগে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ঘুষ হিসেবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদ ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল ডিফেন্স কোর’ (জিডিসি)। এই কাজে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেন তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। শনিবার (১৭ আগস্ট) জিডিসি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। যাতে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। নিজের ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কোরের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন তিনি। এর আগে, ২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও জুমানা ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি কোম্পানি রয়েছে তাদের।

গ্লোবাল ডিফেন্স কোরের অভিযোগ, এ কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন শেখ হাসিনা। তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।

উল্লেখ্য, গ্লোবাল ডিফেন্স কোর নামে পোর্টালটি ২০১৮ সালে চালু হয়। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধান করে থাকে তারা।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনার ৫০০ কোটি ডলার ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা : রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত

আপডেট সময় ০৪:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বা ৫০০ কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব।

রবিবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি বলেন, পাঁচ বিলিয়ন ডলার একটি বড় অঙ্কের অর্থ, যেখানে প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান, সেখান থেকে এত বেশি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা কি এতই পাগল হয়ে গেছি, একজনকে ৫০০ কোটি ডলার দেবো! ইটস রিউমারস অ্যান্ড কমপ্লিটলি ফলস। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই এই গুজবের প্লট তৈরি করা হয়েছিল বলে জানান রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত। সে সময় রাশিয়া নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে ভবিষ্যতে সব ধরনের আর্থিক সহায়তা এবং বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে জানান আলেক্সান্ডার ম্যান্টিটস্কি।

এর আগে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ঘুষ হিসেবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংবাদ ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল ডিফেন্স কোর’ (জিডিসি)। এই কাজে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেন তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। শনিবার (১৭ আগস্ট) জিডিসি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। যাতে মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাটম। নিজের ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।

২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কোরের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন তিনি। এর আগে, ২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও জুমানা ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি কোম্পানি রয়েছে তাদের।

গ্লোবাল ডিফেন্স কোরের অভিযোগ, এ কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন শেখ হাসিনা। তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।

উল্লেখ্য, গ্লোবাল ডিফেন্স কোর নামে পোর্টালটি ২০১৮ সালে চালু হয়। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধান করে থাকে তারা।