অনলাইন ডেস্ক : মনা-তুহিন-বাপ্পী ও এজাজের পৃথক প্রশাসন খুলনায়! এই মুহুর্তে তারাই ওই এলাকার মা-বাবা। খুলনায় কাগজে-কলমে প্রশাসন থাকলেও কার্যত নিস্ক্রিয়। এদের চাদাঁবাজি ও দখল উৎসবে ভয়ে থর থর করে কাঁপছে খুলনা! অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এমন ভয়াবহ ও নাজুক চিত্র! খুলনার স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা বলেছেন, আমরা কী এমন পরিবর্তন চেয়েছিলাম! এ কেমন পরিবর্তন হলো! বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এবং চার শতাধিক মানুষ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। আর ওরা দখল ও চাদাঁবাজির উৎসব করছে। এদিকে সেপ্টেম্বরে আসছে যৌথবাহিনীর বিশেষ অভিযান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে।
বন্যার কথা বলে খুলনা থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছে মনা ও তুহিনরা।এসব টাকা তুলে চারভাগের একভাগও পাঠানোর সম্ভাবনা নেই বলে খুলনা বিএনপির কর্মি-সমর্থকরা জানিয়েছেন। সর্বশেষ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্ট এশোসিয়েশন এর সভাপতি বেলায়েত কাজীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল তারা। সেখান থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে এই গ্রুপটি।
কয়েকদিন আগে খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতাল দখলে নিয়েছে মনা-তুহিন গ্রুপ। একইসঙ্গে শফিকুল আলম মনা সেখানকার আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। এ বিষয় এক প্রশ্নে মি. মনা এর কাছে দাবি করেন তাকে নাকি সেখানে ওয়েলকাম জানিয়ে নেয়া হয়েছে। এদিকে খুলনা আরেকটি সূত্র জানিয়েছে মি. মনাকে মেয়র খালেক তালুকদারের বিজনেস পার্টনার আমজাদ নিকারি তার ওয়েস্টার্ন ইন হোটেলে একটি রুম গিফট করেছেন। ভারতে পালাতে গিয়ে আটক হওয়া খুলনার এই ব্যাংক ডাকাত নিকারিকেও সেফ করার চেষ্টা করছেন এই মনা। এই গরমে তার হোটেলের এসির বাতাস খেয়ে খেয়ে অনুসারীদের নিয়ে খুবলে খাচ্ছেন খুলনা।
নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন মি. মনা। ওই ওয়ার্ড থেকে বিনা ভোটে পর পর কমিশনার নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বিকু কাজী। সরকার পতনের পর শহর ছেড়ে আত্নগোপনে চলে যান বিকু। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় নেগোশিয়েশন করে বিকুকে এলাকায় ফিরিয়ে আনেন তিনি। এলাকাবাসী জানায়, শুধু তাই নয় লেনদেনের কারণে বিকুর বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। একই চিত্র নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের। আত্নগোপনে থাকা আওয়ামী ও শেখ বাড়ির সহযোগীরা ফিরে এসেছে মি.মনা, তুহিন, বাপ্পী ও এজাজের সঙ্গে লেনদেন করে।
এছাড়া কয়েকদিন আগে মাফলার ব্যবসায়ী দুলালের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে শফিকুল আলম তুহিন সদস্য সচিব খুলনা মহানগর বিএনপি, মনিরুল হাসান বাপ্পি সদস্য সচিব খুলনা জেলা বিএনপি, মোঃ সফি সদস্য সচিব মহানগর শ্রমিক দল ও মোল্লা ফরিদ আহমেদ সদস্য সচিব সদর থানা বিএনপি। পাশাপাশি এই গ্রুপটি সাবেক কমিশনার আনিসুর রহমানের নগরীর ৫ ও ৭ নম্বর ঘাটের বিজনেস দখল করে নিয়েছে। এছাড়াও মোল্লা ফরিদ ঘাট এলাকায় সিনিয়র নেতা ও সাবেক এমপি গফফার বিশ্বাসকে লাঞ্চিত করেছে। সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি খুলনার শেখ বাড়ির সহযোগী সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতা বুলু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি জমি ও বাড়ি দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। খুলনা বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ মিছিলে হামলা ও খুলনায় প্রয়াত মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর নামাজে জানাজায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে বাধাসহ নিরীহ মুসল্লীদের মারধর করার পাশাপাশি অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বুলু বিশ্বাস ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। বিএনপির শত্রু এই বাপবেটাকে আশ্রয় দিয়েছিলো মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন এবং তার ভাই মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আলম তাদের বাড়িতেই। খুলনার সূত্র জানায় সরকার পতনের পর এই গ্রুপটি এভাবেই হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
আগের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলাম খুলনা বিএনপির অভিবাবক হিসাব রয়েছেন বা দেখভাল করেন হাওয়া ভবনের সেই আলোচিত কর্মকর্তাদের একজন সাবেক ছাত্রদল নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল। সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে মাইনাস করে এ কেমন কুমিড়ের হাতে খুলনার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও জেলার দায়িত্ব দিয়েছে দলটির নীতি নির্ধারকরা? যারা খুবলে খাচ্ছে খুলনা। প্রশ্ন উঠেছে বকুল কী এসব জানেন? নাকি না জানার ভান করছেন?