অনলাইন ডেস্ক
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর থেকে ভারতের দিল্লিতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। এক মাসের অধিক সময় ধরে দিল্লির উপকণ্ঠে একটি আধাসামরিক বাহিনীর অতিথি নিবাস বা ‘সেফ হাউসে’ থাকছেন তারা। তবে তার চূড়ান্ত গন্তব্য ভারত নয়।
প্রশ্ন হলো, ভারত ছাড়লে কোথায় যাবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী? এ বিষয়ে ভারত সরকার পুরোপুরি নিশ্চুপ। এদিকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করেছে, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এটা নিয়েও এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায়নি।
জানা যায়, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুরুতেই দেশের পার্লামেন্টে জানিয়েছিলেন, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন। শেখ হাসিনা এখনও অন্তত চারটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব অথবা ফিনল্যান্ডে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল দ্য কনভারসেশনের প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে।
সেই সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান, তার মা আপাতত কোথাও যাচ্ছেন না। কোথাও যাবার জন্য আবেদনও করেননি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে তিনি দেশে ফিরবেন।
ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে ফেরত পাঠানোর সমীকরণটা কেমন হবে? প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত যদি শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা দেয়, সে ক্ষেত্রে হাসিনাকে ফেরানো কঠিন হবে। তার কারণ কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তবে ঢাকা-দিল্লির মধ্যকার নতুন সম্পর্ক জোরদার করতে হাসিনা ইস্যু ভারতের জন্য অস্বস্তির হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে ভারতীয় সংবাদ সংস্থার পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গণমাধ্যম তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার যে ‘ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট’ ছিল তা এখনো বৈধ এবং সেই পাসপোর্টের সুবাদে তিনি অন্তত দেড় মাস কোনো ভিসা ছাড়াই অনায়াসে ভারতে অবস্থান করতে পারেন। ইতিমধ্যে ৩২ দিন পার হয়েছে এবং ভারতের আইন অনুযায়ী, আর ১৩ দিন দেশটিতে থাকতে পারবেন তিনি। এদিকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অবনতি হচ্ছে।
শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপি। টিউলিপ যুক্তরাজ্য সরকারের সিটি মিনিস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি শেখ রেহানার মেয়ে। শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল কর্মসূত্রে দিল্লিতে বসবাস করেন।