সিনিয়র রিপোর্টার
লে. কর্নেল মোশাররফ বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অগ্রভাগে ছিল। সাবেক ও বর্তমান সৈনিক থেকে সব স্তরের কর্মকর্তারা এই সফলতার অংশীদার। অথচ অভ্যুত্থানের এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আমরা অবহেলিত।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাওয়া কমপ্লেক্সে রাওয়া রিসার্চ অ্যান্ড স্টাডি ফোরাম (আরআরএসএফ) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান এবং বিপ্লবোত্তর ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
লে. কর্নেল মোশাররফ বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গণঅভ্যুত্থানে দুইভাবে ভূমিকা রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি মাঠে নেমেছেন এবং চাকরিরতরা চূড়ান্ত সময়ে অবদান রেখেছেন। আবু সাইদ হত্যার পর সেনাবাহিনীর সব স্তরের সদস্যরা মাঠে নামেন। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে তারা প্রতিবাদ ও জনসংযোগ শুরু করেন। গত ১৮ জুলাই মিরপুর ডিওএইচএস থেকে প্রতিবাদের সূচনা হয়। এটাই সর্বপ্রথম সশরীরে আন্দোলন।
তিনি বলেন, সরকার পতনের এক মাস পার হলেও এখনও আমাদের বিষয়ে জানার আগ্রহ কারো নেই। আমাদের দাবি আদায়ে কোর্টে যাওয়ার অধিকারও নেই। অন্যান্য সেক্টরের মতো মেধাহীন পদোন্নতির মাধ্যমে এই সেক্টরকেও ধ্বংস করা হয়েছে। এ নিয়ে আগে থেকেই সশস্ত্র বাহিনীতে ক্ষোভ ছিল।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিমুল গনি (অব.) বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ গড়ার নতুন সুযোগ হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত দেশ গড়তে দেশপ্রেমিক, নিবেদিত মানুষ এবং সঠিক তদারকি প্রয়োজন। সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি বেসরকারি অফিসার, প্রবাসী এবং বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্টদের দিয়ে সংস্কার কাজ করা সম্ভব। সশস্ত্র বাহিনীতে বিভিন্ন খাতে দক্ষ অবসরপ্রাপ্ত ৪ হাজার জনবল আছে।
অপরাধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকার সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় মেধাহীন নিয়োগ দিয়ে নৈরাজ্য তৈরি করেছে। অনেক সংকট ও ৪০ লাখ মামলা রেখে গেছে। এখনো প্রতিবিপ্লবের জন্য টাকা ছড়ানো হচ্ছে। চিহ্নিতদের ভাসানচর নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
লে. কর্নেল মনীষ দেওয়ান (অব.) এর সঞ্চালনায় জুলাই-আগস্ট ২০২৪ বিপ্লবে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদ ও ছাত্র জনতার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয়।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক মাহবুবুল্লাহ, অধ্যাপক ড. শহীদুজ্জামান, ডা. জাহেদ উর রহমান এবং লে. আবু রুশদ। এ সময় বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের ও বিনির্মাণে জাতীয় সংহতি উন্নয়ন এবং লেজুরভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা হতে উত্তরণের পথ নির্দেশনার উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন।