ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবির হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনি, যুবক নিহত

ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তাকে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা।

নিহত যুবকের নাম তোফাজ্জল (৩২)। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার এক বন্ধু। এর আগে ঢাকা মেডিকেল মর্গে তার লাশ শনাক্ত করেন বন্ধু বেলাল গাজী।

বেলাল বলেন, ‘বরিশাল বিএম কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টটিংয়ে মাস্টার্স করলেও মানসিক সমস্যার কারণে তোফাজ্জল কোনো কাজকর্ম করছিল না। গত ৩-৪ বছর ধরে তার এই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরপর থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ভবঘুরের মত বেড়াত সে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেও থাকত অনেক সময় ‘

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে ফজলুল হক হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে ধরে শিক্ষার্থীরা। আটকের পর রাত ১০টা পর্যন্ত হলের গেস্টরুমে কয়েক দফা মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ওই যুবককে ক্যান্টিনে বসিয়ে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর আবারও মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। তার কী হয়েছিল জানতে চাইলে জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক বলেন, ‘ফজলুল হক হলে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করে মারধর করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিল। তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’

তোফাজ্জলের মৃত্যুর খবরটি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছেন অনেকে।

ট্যাগস

আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাবির হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনি, যুবক নিহত

আপডেট সময় ৯ ঘন্টা আগে

ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিন সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তাকে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা।

নিহত যুবকের নাম তোফাজ্জল (৩২)। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিনি ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার এক বন্ধু। এর আগে ঢাকা মেডিকেল মর্গে তার লাশ শনাক্ত করেন বন্ধু বেলাল গাজী।

বেলাল বলেন, ‘বরিশাল বিএম কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টটিংয়ে মাস্টার্স করলেও মানসিক সমস্যার কারণে তোফাজ্জল কোনো কাজকর্ম করছিল না। গত ৩-৪ বছর ধরে তার এই মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরপর থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ভবঘুরের মত বেড়াত সে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেও থাকত অনেক সময় ‘

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে ফজলুল হক হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে ধরে শিক্ষার্থীরা। আটকের পর রাত ১০টা পর্যন্ত হলের গেস্টরুমে কয়েক দফা মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ওই যুবককে ক্যান্টিনে বসিয়ে ভাতও খাওয়ানো হয়। এরপর আবারও মারধর করা হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। চিকিৎসক তোফাজ্জলকে মৃত ঘোষণা করার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে সরে যান।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক বলেন, ‘রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন। তার কী হয়েছিল জানতে চাইলে জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক বলেন, ‘ফজলুল হক হলে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করে মারধর করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিল। তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’

তোফাজ্জলের মৃত্যুর খবরটি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে এই নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছেন অনেকে।