ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা : ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, হল প্রভোস্টকে অপসারণ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 37

সিনিয়র রিপোর্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত আট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হলে তাদের বরাদ্দ করা সিটও বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া ওই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে অপসারণ করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক মুসলিম হলের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত আট জন ছাত্রের আবাসিক সিট হল প্রশাসন বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত আট জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। 

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বুধবার রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলের মর্মান্তিক ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় হল প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং এই কমিটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় রিপোর্ট পেশ করেছে।

ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তদন্ত কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত আট জন অভিযুক্তের মধ্যে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত এই আট জনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে ও সকলের সহযোগিতা কামনা করছে।

প্রসঙ্গত, হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষার্থীরা (প্রাথমিক তদন্তে চিহ্নিত) হলেন- পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জালাল মিয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আল হোসাইন সাজ্জাদ, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম। এই ছয়জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাকি দুজন হলেন- উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ কবির ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবদুস সামাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া আট শিক্ষার্থীকে হলের সিট বাতিল করার পাশাপাশি তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে। শিগগির তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির রিপোর্ট সিন্ডিকেটে যাবে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে একদল শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে কয়েক দফায় নির্যাতন করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। কয়েক বছর ধরে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। এর আগে তিনি কাঁঠালতলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। 

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা : ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, হল প্রভোস্টকে অপসারণ

আপডেট সময় ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত আট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। হলে তাদের বরাদ্দ করা সিটও বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া ওই হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে অপসারণ করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক মুসলিম হলের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত আট জন ছাত্রের আবাসিক সিট হল প্রশাসন বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত আট জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে।

এতে আরো বলা হয়, ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। 

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বুধবার রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলের মর্মান্তিক ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় হল প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং এই কমিটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় রিপোর্ট পেশ করেছে।

ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তদন্ত কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত আট জন অভিযুক্তের মধ্যে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত এই আট জনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে ও সকলের সহযোগিতা কামনা করছে।

প্রসঙ্গত, হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষার্থীরা (প্রাথমিক তদন্তে চিহ্নিত) হলেন- পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জালাল মিয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আল হোসাইন সাজ্জাদ, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম। এই ছয়জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাকি দুজন হলেন- উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ কবির ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবদুস সামাদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া আট শিক্ষার্থীকে হলের সিট বাতিল করার পাশাপাশি তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে। শিগগির তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির রিপোর্ট সিন্ডিকেটে যাবে এবং রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে একদল শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে কয়েক দফায় নির্যাতন করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। কয়েক বছর ধরে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। এর আগে তিনি কাঁঠালতলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।