ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 174

অনলাইন ডেস্ক :  রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাতে হাসপাতালে যান তিনি। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান যুগান্তরকে বলেন, দলের মহাসচিব ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।‌  এর আগে চলতি মাসে আরো দুইবার হাসপাতালে দলীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘অত্যন্ত জটিল’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে তারা জানিয়েছেন, লিভারের জটিলতায় দেশে যে চিকিৎসা আছে, তার সর্বোচ্চটা দেওয়া হয়েছে। এখন এর বাইরে তাদের কিছু করার নেই। তাকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্ল্যান্ট) করা প্রয়োজন। মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য যুগান্তরকে জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে ফুসফুস থেকে পানি অপসারণ করে দেড় ঘণ্টা পর আবারও কেবিনে নেওয়া হয়। এখন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে গত ৪সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোটভাই শামীম এস্কান্দর আবেদনটি করেছেন। সরকারের মনোভাব যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবারও আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার উত্তরায় এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। অবস্থা সংকটজনক। এ সরকারের আজ্ঞাবহ বিচার বিভাগ মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়ে ৫ বছর আগে কারারুদ্ধ করেছিল। এরপর তাকে গৃহবন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শর্ত দিয়েছে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। চিকিৎসা ব্যবস্থা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কারাগারে থাকলেও সব বন্দিকে চিকিৎসা দিতে হবে। তার চিকিৎসকরা ও দলের পক্ষ থেকে বলেছি, মানবিক কারণে চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশে উন্নত হাসপাতালে পাঠানো হোক। পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রীর যদি সুচিকিৎসা না হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয় তাহলে যে কোনো দুর্ঘটনার জন্য শেখ হাসিনার সরকার দায়ী থাকবে, জবাব দিতে হবে।’

গত ৯ আগষ্ট থেকে রাজধানী এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। হাসপাতালে তার সঙ্গে রয়েছেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। এর আগে গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্‌যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন—খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্‌রোগে ভুগছেন। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে একাধিকবার পরামর্শও দেয় মেডিকেল বোর্ড।

দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কিছু শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। তারপর থেকে তিনি গুলশানে তার ভাড়াবাড়িতে থাকছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

আরব আমিরাতে মিটল ১০ বছরের আক্ষেপ : জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

আপডেট সময় ০২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক :  রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাতে হাসপাতালে যান তিনি। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান যুগান্তরকে বলেন, দলের মহাসচিব ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন।‌  এর আগে চলতি মাসে আরো দুইবার হাসপাতালে দলীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘অত্যন্ত জটিল’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। 

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে তারা জানিয়েছেন, লিভারের জটিলতায় দেশে যে চিকিৎসা আছে, তার সর্বোচ্চটা দেওয়া হয়েছে। এখন এর বাইরে তাদের কিছু করার নেই। তাকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে লিভার প্রতিস্থাপন (ট্রান্সপ্ল্যান্ট) করা প্রয়োজন। মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য যুগান্তরকে জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে ফুসফুস থেকে পানি অপসারণ করে দেড় ঘণ্টা পর আবারও কেবিনে নেওয়া হয়। এখন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার অনুমতি চেয়ে গত ৪সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোটভাই শামীম এস্কান্দর আবেদনটি করেছেন। সরকারের মনোভাব যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবারও আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।

শুক্রবার উত্তরায় এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। অবস্থা সংকটজনক। এ সরকারের আজ্ঞাবহ বিচার বিভাগ মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়ে ৫ বছর আগে কারারুদ্ধ করেছিল। এরপর তাকে গৃহবন্দি রেখে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শর্ত দিয়েছে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না। চিকিৎসা ব্যবস্থা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কারাগারে থাকলেও সব বন্দিকে চিকিৎসা দিতে হবে। তার চিকিৎসকরা ও দলের পক্ষ থেকে বলেছি, মানবিক কারণে চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশে উন্নত হাসপাতালে পাঠানো হোক। পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশনেত্রীর যদি সুচিকিৎসা না হয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো না হয় তাহলে যে কোনো দুর্ঘটনার জন্য শেখ হাসিনার সরকার দায়ী থাকবে, জবাব দিতে হবে।’

গত ৯ আগষ্ট থেকে রাজধানী এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। হাসপাতালে তার সঙ্গে রয়েছেন ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। এর আগে গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদ্‌যন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন—খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্‌রোগে ভুগছেন। তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠাতে একাধিকবার পরামর্শও দেয় মেডিকেল বোর্ড।

দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কিছু শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। তারপর থেকে তিনি গুলশানে তার ভাড়াবাড়িতে থাকছেন। প্রতি ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।