সিনিয়র রিপোর্টার

কুমিল্লা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূইয়া, স্ত্রী মাহমুদা আখতার ও ছেলে মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও তার স্ত্রী নিলীমা দাসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিততে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়ার আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে, দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক রেজাউল করিম দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত নিষেধাজ্ঞার আবেদন মঞ্জুর করেন।

সুবিদ আলীর আবেদন বলা হয়, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূইয়া ও তার ছেলে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি, লুটপাট, ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধানের বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।

অনুসন্ধানকালে গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।

মৃণাল কান্তি দাসের আবেদনে বলা হয়, মৃণাল কান্তি দাস ১০ বছর সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। মৃণাল কান্তি দাস অবৈধ আয়ে ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ১ হাজার ৭৮৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট কেনেন, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।

পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় তার সাড়ে ৭ কাঠার একটি প্লট রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা। তার ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯১ টাকা রয়েছে। ৮৬ লাখ ৫৩ হাজার ৬৩১ টাকার গাড়ি এবং তার স্ত্রী নিলীমা দাসের নামে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১০৫ কাঠার প্লটের ওপর বহুতল ভবন রয়েছে। গোপন সূত্রে জানা গেছে, তার স্ত্রীর নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ১৯১ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছেন তিনি।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, মৃণাল কান্তি দাস এবং তার স্ত্রী নিলীমা দাস অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।