ঢাকা , রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন, ট্রাম্প-কমলা বাক্যবাণ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
  • 22

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে, ওয়াশিংটন ডিসিতে এ ঘটনা ঘটে। ভাইস-প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীর প্রতি এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। বিপরীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে ট্রাম্প কমলাকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক চিফ অব স্টাফ জন কেলিকে উদ্ধৃত করে কমলা ট্রাম্পকে মানসিক ভারসাম্যহীন ও অস্থির বলে অভিহিত করেছেন। জন কেলিও নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।

কমলা হ্যারিস জন কেলিকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফ্যাসিস্টের সাধারণ সংজ্ঞার সঙ্গে খাপ খায়। কমলা হ্যারিস অভিযোগ করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হিটলার-প্রীতি আছে। হ্যারিস বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী একচেটিয়া ক্ষমতা চেয়েছিলেন। পরে তাকে আবারো জিজ্ঞাস করা হয় যে, ট্রাম্প ফ্যাসিবাদী- এটি তিনি বিশ্বাস করেন কিনা, জবাবে তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন। 

এদিকে, কমলা হ্যারিসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সে লিখেছেন, কমলা হ্যারিস বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথা বলেই যাচ্ছেন। আমাকে অ্যাডলফ হিটলার এবং তার মনে মনে আরো যা যা কিছু আছে, বলে ডাকতে যাচ্ছেন। তিনি হ্যারিসকে ‘কমরেড কমলা হ্যারিস’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন। 

এদিকে ট্রাম্পের প্রচারণা দল ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে। প্রচারণা দলের মুখপাত্র স্টিভেন চেয়াং বলেছেন যে কমলা হ্যারিস ক্রমশ মরিয়া হয়ে উঠছেন। কারণ, তিনি নড়বড়ে হয়ে পড়েছেন এবং তার প্রচারণা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। 

নির্বাচনকে সামনে রেখে একপক্ষ আরেক পক্ষের নামে বিষোদগার করবে, এটি এক রকম স্বাভাবিক প্রবণতা। এ ধরনের বাকযুদ্ধের মূল লক্ষ্য থাকে, সমর্থকদের ভোট দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করা ও প্রতিপক্ষের প্রচারাভিযানকে ব্যাহত করা।

ডেমোক্রেটিক গ্রুপ থার্ড ওয়ে’র পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট ম্যাট বেনেটের মতে, কমলা হ্যারিস কেন জন কেলির বক্তব্যকে ধরে মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট। হ্যারিসকে লক্ষ্য করে ম্যাট বলেন, কমলা এখন যা করছেন, তা কৌশলগত। তার এটি নিশ্চিত করা দরকার ছিল, জন কেলি যা বলেছেন, ভোটাররা যেন তা জানতে পারেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের এই সর্বশেষ মন্তব্যটিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রচারণা কৌশলও বলা যেতে পারে, যাতে করে দ্বিধাদ্বন্দে থাকা রিপাবলিকানের সমর্থকরা ডেমোক্রেটিক প্রার্থীকে ভোট দেয়।

নির্বাচনকে নিয়ে করা বিভিন্ন জরিপে এটিই দেখা যাচ্ছে, এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে। দেশটির বড় বড় শহরগুলোর আশেপাশে ফিলাডেলফিয়া, ডেট্রয়েট, ফিনিক্সের মতো ছোট শহর আছে। সেসব শহরতলীতে শিক্ষিত কর্মজীবীদের বসবাস। তারা বরাবরই রিপাবলিকানের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এবার জরিপগুলো থেকে সেসব স্থানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার ঘাটতি টের পাওয়া যায়।

বেনেট বলেন, অসন্তুষ্ট রিপাবলিকানদেরকে, বিশেষ করে যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন কি দেবেন না- তা নিয়ে সংশয়ে আছে, হ্যারিস তাদেরকে দলে টানতে চাইছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রায় দুই কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন নাগরিক ডাকযোগে কিংবা সশরীরে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি ভোটার পেনসিলভানিয়ার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য পেনসিলভানিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কমলা এবং ট্রাম্প দুজনই বারবার এ অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মার্কিন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত অন্য দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতেও জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছেন তারা।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সহযোগী তৌফিকাসহ আনিসুল হকের ‘অবৈধ সম্পদের’ খোঁজে দুদক 

ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন, ট্রাম্প-কমলা বাক্যবাণ

আপডেট সময় ০৫:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকালে, ওয়াশিংটন ডিসিতে এ ঘটনা ঘটে। ভাইস-প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থীর প্রতি এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন। বিপরীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে ট্রাম্প কমলাকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক চিফ অব স্টাফ জন কেলিকে উদ্ধৃত করে কমলা ট্রাম্পকে মানসিক ভারসাম্যহীন ও অস্থির বলে অভিহিত করেছেন। জন কেলিও নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে ‘ফ্যাসিস্ট’র সঙ্গে তুলনা করেছেন।

কমলা হ্যারিস জন কেলিকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফ্যাসিস্টের সাধারণ সংজ্ঞার সঙ্গে খাপ খায়। কমলা হ্যারিস অভিযোগ করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হিটলার-প্রীতি আছে। হ্যারিস বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী একচেটিয়া ক্ষমতা চেয়েছিলেন। পরে তাকে আবারো জিজ্ঞাস করা হয় যে, ট্রাম্প ফ্যাসিবাদী- এটি তিনি বিশ্বাস করেন কিনা, জবাবে তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দেন। 

এদিকে, কমলা হ্যারিসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সে লিখেছেন, কমলা হ্যারিস বাগাড়ম্বরপূর্ণ কথা বলেই যাচ্ছেন। আমাকে অ্যাডলফ হিটলার এবং তার মনে মনে আরো যা যা কিছু আছে, বলে ডাকতে যাচ্ছেন। তিনি হ্যারিসকে ‘কমরেড কমলা হ্যারিস’ হিসেবে সম্বোধন করেছেন। 

এদিকে ট্রাম্পের প্রচারণা দল ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে। প্রচারণা দলের মুখপাত্র স্টিভেন চেয়াং বলেছেন যে কমলা হ্যারিস ক্রমশ মরিয়া হয়ে উঠছেন। কারণ, তিনি নড়বড়ে হয়ে পড়েছেন এবং তার প্রচারণা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। 

নির্বাচনকে সামনে রেখে একপক্ষ আরেক পক্ষের নামে বিষোদগার করবে, এটি এক রকম স্বাভাবিক প্রবণতা। এ ধরনের বাকযুদ্ধের মূল লক্ষ্য থাকে, সমর্থকদের ভোট দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করা ও প্রতিপক্ষের প্রচারাভিযানকে ব্যাহত করা।

ডেমোক্রেটিক গ্রুপ থার্ড ওয়ে’র পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট ম্যাট বেনেটের মতে, কমলা হ্যারিস কেন জন কেলির বক্তব্যকে ধরে মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট। হ্যারিসকে লক্ষ্য করে ম্যাট বলেন, কমলা এখন যা করছেন, তা কৌশলগত। তার এটি নিশ্চিত করা দরকার ছিল, জন কেলি যা বলেছেন, ভোটাররা যেন তা জানতে পারেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের এই সর্বশেষ মন্তব্যটিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা প্রচারণা কৌশলও বলা যেতে পারে, যাতে করে দ্বিধাদ্বন্দে থাকা রিপাবলিকানের সমর্থকরা ডেমোক্রেটিক প্রার্থীকে ভোট দেয়।

নির্বাচনকে নিয়ে করা বিভিন্ন জরিপে এটিই দেখা যাচ্ছে, এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে। দেশটির বড় বড় শহরগুলোর আশেপাশে ফিলাডেলফিয়া, ডেট্রয়েট, ফিনিক্সের মতো ছোট শহর আছে। সেসব শহরতলীতে শিক্ষিত কর্মজীবীদের বসবাস। তারা বরাবরই রিপাবলিকানের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এবার জরিপগুলো থেকে সেসব স্থানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তার ঘাটতি টের পাওয়া যায়।

বেনেট বলেন, অসন্তুষ্ট রিপাবলিকানদেরকে, বিশেষ করে যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন কি দেবেন না- তা নিয়ে সংশয়ে আছে, হ্যারিস তাদেরকে দলে টানতে চাইছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রায় দুই কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন নাগরিক ডাকযোগে কিংবা সশরীরে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি ভোটার পেনসিলভানিয়ার।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য পেনসিলভানিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কমলা এবং ট্রাম্প দুজনই বারবার এ অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মার্কিন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত অন্য দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতেও জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছেন তারা।