সিনিয়র রিপোর্টার
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শিক্ষা ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে জলকামানও ব্যবহার করে পুলিশ।
এর আগে, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনরতরা। এসময় পুলিশি বাধার সম্মুখীন হলে তারা শাহবাগ থানার সামনে ফুলের দোকানগুলোর সামনে অবস্থান নেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ ও ৩৫ প্রত্যাশীদের অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে বাগবিতণ্ডা চলছিল। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের জাদুঘরের সামনে থেকে সরিয়ে দেন। এ সময় ‘বয়স না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আবু সাইদের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘এক দুই তিন চার, পঁয়ত্রিশ আমার অধিকার‘ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
অবস্থান কর্মসূচি অংশ নিয়ে আবু নাঈম বলেন, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের একটি কমিশন গঠন করে দেওয়া হয়েছিল। তারা আমাদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে বয়স ৩৫ করার পক্ষে সুপারিশ করে। এখন সেই সুপারিশকে অগ্রাহ্য করে ৩২ করা হলো। তারা যদি তাদের কমিশনের ওপরেই আস্থা রাখতে না পারে তাহলে কীভাবে হবে। আমরা বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের ৩৫ দিয়ে দিতে হবে এবং শিগগিরই সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। শাহবাগে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আন্দোলনরতরা শিক্ষা ভবনের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এরপর সেই বাধা ডিঙাতে গেলে তাদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করে একটি অধ্যাদেশের খসড়ায় নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২ বছর। গত ২৪ অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়, সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানসিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নিম্নরূপ আলোচনার মাধ্যমে উক্ত অধ্যাদেশটি অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সব ক্যাডারের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারিত হবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতাবহির্ভূত সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারিত হবে।
স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা প্রয়োজনীয় অভিযোজন সাপেক্ষে প্রযোজ্য হবে। প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা বহাল থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আরো জানিয়েছে, এ অধ্যাদেশের আলোকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮‘-এর ধারা ৫৯-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪‘ পুনর্গঠনপূর্বক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিন বার অবতীর্ণ হতে পারবে- এরূপ বিধি সংযোজন করবে।