ঢাকা , সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হচ্ছে না বইমেলা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
  • 25

সিনিয়র রিপোর্টার

আগামী ২০২৫ সালের অমর একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হচ্ছে না। গত ৬ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাংলা একাডেমিকে চিঠি দিয়ে এমনটি জানিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ আয়োজন করতে হবে।

একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম অবশ্য বলেছেন, বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করতে চেষ্টা করে যাব। 

তিনি বলেন, অমর একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করা যাবে না, এমন একটি সিদ্ধান্ত এসেছে। একাডেমি প্রাঙ্গণেই মেলা আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। তবে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে চাই।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আমি জানি না এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা। তবে সরকার যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা আয়োজনের অনুমতি না দেয়, তাহলে সবাই মিলে সরকারকে বোঝাতে হবে যে বইমেলা এখানে না হলে গুরুত্ব হারাবে। বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করলেই ভালো। এটি লেখক, প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারা সবাই মিলে বোঝালে, আশা করি সরকার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে।

গত এক দশক বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন হয়ে আসছে। চলতি বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ আয়োজন হয়। 

এদিকে মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি না মিললে শুধু বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে জায়গার সঙ্কুলান হবে না বলে মত অনেক লেখক, কবি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রকাশকের। এমনকি বাংলা একাডেমি সংশ্লিষ্টরাও মনে করেন, মেলা একাডেমি প্রাঙ্গনে সুষ্ঠুভাবে করা দায়। তাদের অনেকে এ খবর শুনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। 

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারা’র প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা।

১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানমালার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল স্থাপন করে বই বেচে মুক্তধারা। ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরো অনেকে যোগ দেয়, সেই থেকে একুশে বইমেলার সূচনা।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। এর পরের বছরই বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি মেলার সঙ্গে যুক্ত হয়।

মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ১৯৮৩ সালে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা করা যায়নি। পরের বছর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা।

১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নাম দিয়ে ধারাবাহিকভাবে মেলা পরিচালনা করছে। ২০২১ সাল থেকে মেলার প্রাতিষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দুদেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক চায় দিল্লি : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হচ্ছে না বইমেলা

আপডেট সময় ০৪:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

আগামী ২০২৫ সালের অমর একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হচ্ছে না। গত ৬ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাংলা একাডেমিকে চিঠি দিয়ে এমনটি জানিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেই অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ আয়োজন করতে হবে।

একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম অবশ্য বলেছেন, বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করতে চেষ্টা করে যাব। 

তিনি বলেন, অমর একুশে বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করা যাবে না, এমন একটি সিদ্ধান্ত এসেছে। একাডেমি প্রাঙ্গণেই মেলা আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। তবে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা করতে চাই।

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আমি জানি না এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা। তবে সরকার যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা আয়োজনের অনুমতি না দেয়, তাহলে সবাই মিলে সরকারকে বোঝাতে হবে যে বইমেলা এখানে না হলে গুরুত্ব হারাবে। বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজন করলেই ভালো। এটি লেখক, প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তারা সবাই মিলে বোঝালে, আশা করি সরকার সিদ্ধান্ত পাল্টাবে।

গত এক দশক বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার আয়োজন হয়ে আসছে। চলতি বছর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ আয়োজন হয়। 

এদিকে মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি না মিললে শুধু বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে জায়গার সঙ্কুলান হবে না বলে মত অনেক লেখক, কবি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রকাশকের। এমনকি বাংলা একাডেমি সংশ্লিষ্টরাও মনে করেন, মেলা একাডেমি প্রাঙ্গনে সুষ্ঠুভাবে করা দায়। তাদের অনেকে এ খবর শুনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। 

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির গেটে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারা’র প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা।

১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানমালার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল স্থাপন করে বই বেচে মুক্তধারা। ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরো অনেকে যোগ দেয়, সেই থেকে একুশে বইমেলার সূচনা।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। এর পরের বছরই বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি মেলার সঙ্গে যুক্ত হয়।

মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ১৯৮৩ সালে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা করা যায়নি। পরের বছর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা।

১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নাম দিয়ে ধারাবাহিকভাবে মেলা পরিচালনা করছে। ২০২১ সাল থেকে মেলার প্রাতিষ্ঠানিক নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’।