ঢাকা , সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৭:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • 24

অনলাইন ডেস্ক  :  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মানবদেহে ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে অনেক সময় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে।  তিনি বলেন, তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো আমরা যে এন্টিবায়োটিক খাচ্ছি, তা আবার পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে কেউ ভাবছে না, এই যে ভাববার বিষয় তা আমাদের ঠিক করতে হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪’-উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ফরিদা আখতার।

ফরিদা আখতার বলেন, ওয়ান হেলথ বলতে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে শুধু তাদের বিষয় নিয়েই কাজ করবে। ওয়ান+ওয়ান=ওয়ান হবে, না ওয়ান বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বুঝাবে তা ভেবে দেখা উচিৎ। 

তিনি বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত দেরি হয়েছে, এখনই কাজ করার সময়-প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবিষয়ে বোঝার ক্ষেত্রে এখনও ঘাটতি রয়েছে। এখন সময় এসেছে দায়িত্ব নেয়ার, কোনো কাজ কোথায় করবো তা জেনে বুঝে করা অতীব জরুরি। 

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে এর অর্থ এই নয় যে স্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা অনেক উন্নত। আমরা বেঁচে আছি তবে ভালোভাবে বাঁচছি না। সুস্থ্যতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর নয় বরং ওষুধ ছাড়া আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে। এখনও অনেক মানুষ অসুখ হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার ফলে মানুষ তথা রাষ্ট্রের খরচ বাড়ছে আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য কথাতেই আপত্তি রয়েছে, তার মানে খাদ্য নিরাপদ নয়-খাদ্য নিরাপদ হতে হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে প্রমাণ হয়েছে তরুণরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। খাদ্যকে অনিরাপদ করার জন্য বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে, তা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না-এখানে আমাদের কাজ করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশকে সুস্থ রাখতে তরুণ ছাত্রদের এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। বক্তারা প্রাণিজাত খাদ্য উৎপাদন ও চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ উত্তম খামার চর্চায় খামারীকে উৎসাহ প্রদান, এন্টিবায়োটিক প্রত্যাহার সম্পর্কে খামারীকে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তারা বলেন, প্রেসক্রিপশনের সময় সঠিক এন্টিবায়োটিক নির্বাচন, মাত্রা, ব্যবহার ও প্রয়োগবিধি নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণু সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে এন্টিবায়োটিক নির্বাচন করা এবং সম্ভব হলে এন্টিবায়োটিকের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, ফ্লেমিং ফান্ড গ্রান্ট বাংলাদেশের টিম লিডার প্রফেসর ড. শাহ্ মনির হোসেন, সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং ফর ওয়ান হেলথের চিফ অব পার্টি অধ্যাপক ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশে নিযুক্ত খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি টিম লিডার ড. ইরিখ ব্রুম।

এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান, প্রাণির স্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ক্ষমতার তথ্য উপস্থাপনা করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. শাহীনুর ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. নূর আসাদ উজ জামান। পরে এএমআর ভিডিও অ্যাওয়ার্ডে প্রতিযোগিদের মধ্যে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দুদেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক চায় দিল্লি : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৭:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক  :  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মানবদেহে ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে অনেক সময় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে।  তিনি বলেন, তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো আমরা যে এন্টিবায়োটিক খাচ্ছি, তা আবার পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে কেউ ভাবছে না, এই যে ভাববার বিষয় তা আমাদের ঠিক করতে হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪’-উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন ফরিদা আখতার।

ফরিদা আখতার বলেন, ওয়ান হেলথ বলতে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে শুধু তাদের বিষয় নিয়েই কাজ করবে। ওয়ান+ওয়ান=ওয়ান হবে, না ওয়ান বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বুঝাবে তা ভেবে দেখা উচিৎ। 

তিনি বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত দেরি হয়েছে, এখনই কাজ করার সময়-প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবিষয়ে বোঝার ক্ষেত্রে এখনও ঘাটতি রয়েছে। এখন সময় এসেছে দায়িত্ব নেয়ার, কোনো কাজ কোথায় করবো তা জেনে বুঝে করা অতীব জরুরি। 

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে এর অর্থ এই নয় যে স্বাস্থ্যের দিক থেকে আমরা অনেক উন্নত। আমরা বেঁচে আছি তবে ভালোভাবে বাঁচছি না। সুস্থ্যতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর নয় বরং ওষুধ ছাড়া আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে। এখনও অনেক মানুষ অসুখ হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে, এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার ফলে মানুষ তথা রাষ্ট্রের খরচ বাড়ছে আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য কথাতেই আপত্তি রয়েছে, তার মানে খাদ্য নিরাপদ নয়-খাদ্য নিরাপদ হতে হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে প্রমাণ হয়েছে তরুণরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। খাদ্যকে অনিরাপদ করার জন্য বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে, তা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না-এখানে আমাদের কাজ করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশকে সুস্থ রাখতে তরুণ ছাত্রদের এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। বক্তারা প্রাণিজাত খাদ্য উৎপাদন ও চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ উত্তম খামার চর্চায় খামারীকে উৎসাহ প্রদান, এন্টিবায়োটিক প্রত্যাহার সম্পর্কে খামারীকে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তারা বলেন, প্রেসক্রিপশনের সময় সঠিক এন্টিবায়োটিক নির্বাচন, মাত্রা, ব্যবহার ও প্রয়োগবিধি নিশ্চিত করতে হবে। জীবাণু সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে এন্টিবায়োটিক নির্বাচন করা এবং সম্ভব হলে এন্টিবায়োটিকের বিকল্প ব্যবহার করতে হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, ফ্লেমিং ফান্ড গ্রান্ট বাংলাদেশের টিম লিডার প্রফেসর ড. শাহ্ মনির হোসেন, সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং ফর ওয়ান হেলথের চিফ অব পার্টি অধ্যাপক ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশে নিযুক্ত খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি টিম লিডার ড. ইরিখ ব্রুম।

এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান, প্রাণির স্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ক্ষমতার তথ্য উপস্থাপনা করেছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. শাহীনুর ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. নূর আসাদ উজ জামান। পরে এএমআর ভিডিও অ্যাওয়ার্ডে প্রতিযোগিদের মধ্যে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।