সিনিয়র রিপোর্টার
জুলাই গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক দুই মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে বুধবার।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) এ কথা জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান।
প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, প্রোডাকশন ওয়ারেন্টে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামকে আগামী ৪ ডিসেম্বর (বুধবার) ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
গত জুলাই-অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের চেষ্টায় ‘গণহত্যার’ দুই অভিযোগে ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দলটির অন্য নেতাদের মত ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমুরও কোনো হদিস মিলছিল না। ওইদিন শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দ্বাদশ সংসদের ঝালকাঠিতে আমুর বাসবভনে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে তার ওই বাসভবন থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর গত ১৪ অগাস্ট ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে আমির হোসেন আমুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম উত্তরায় গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হন গত ১৮ নভেম্বর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় কয়েকটি মামলায় সাবেক ঢাকা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল ইসলামকে আসামি করা হয়।
এর মধ্যে নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় আদালত তাকে রিমান্ডেও পাঠিয়েছিল। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা ২০০৮ নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আসেন। এরপর থেকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ পর্যন্ত টানা চারবার জয়ী হন।
নবম সংসদে জয়ের পর ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য সরকারের পরের মেয়াদে ২০১৪ সালে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে পরের দুই মেয়াদের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
তার বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশে বিদেশে অঢেল সম্পদ গড়েছেন তিনি। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারীর নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম ক্রয় করে সরকারি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।