ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চকবাজারে চাঞ্চল্যকর প্লাস্টিক ব্যবসায়ী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী গ্রেপ্তার

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • 9

সিনিয়র রিপোর্টার

রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকায় চাঞ্চল্যকর প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৪৬) হত্যার ঘটনায় হত্যাকারী সাবিনা আক্তার (২৫) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। এ সময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

চকবাজার মডেল থানা সূ্ত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকার ৬৬/১, আরএনডি রোডের এশিয়া টাওয়ারে ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ন আলামত ফুলদানির ভাঙ্গা অংশ, ধারালো চাকু ও অন্যান্য আলামত জব্দ করে।

এরপর ভিকিটিম নজরুল ইসলামের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. তহিদুল ইসলাম ওরফে তাপস বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় গত ৪ ডিসেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রুজুকৃত মামলাটি তদন্তকালে আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ও সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্য  বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত হিসেবে মোছা. সাবিনা আক্তারকে শনাক্ত করা হয়। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে পাঁচটায় যশোরের বাঘার পাড়া থানার মির্জাপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম নজরুল ইসলামের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

থানা সূত্র আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মোছা. সাবিনা আক্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে সাবিনা আক্তার জানায়, মামলার ঘটনার প্রায় এক মাস পূর্বে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে চাকুরীর জন্য ভিকটিম নজরুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী সন্তান বাসায় না থাকায় ভিকটিম নজরুল ইসলাম সাবিনা আক্তারকে গত (২ ডিসেম্বর) রাতে বাসায় ডেকে নেন।

সাবিনা আক্তার নজরুল ইসলামের বাসায় রাতে অবস্থান করেন। এ সময়ে চাকুরী ও বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সাবিনা আক্তার প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ভোর সাড়ে পাঁচটায় দিকে নজরুল ইসলামকে পাটার শিল দিয়ে মাথা ও মুখে গুরুতর আঘাত করেন ও মুখে বালিশ চাপা দেন। ফলে নজরুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এরপর নজরুল ইসলামের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে নজরুলের পুরুষাঙ্গ কেটে আলাদা করে নির্মমভাবে হত্যা করে।

গ্রেপ্তারকৃত সাবিনা আক্তারের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত শিল পাটার রক্তমাখা শিল এবং ঘটনার দিন তার পরিহিত বোরকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্বে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী-মসজিদের ইমাম একসঙ্গে পালিয়েছেন : দুদক চেয়ারম্যান

চকবাজারে চাঞ্চল্যকর প্লাস্টিক ব্যবসায়ী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, হত্যাকারী গ্রেপ্তার

আপডেট সময় ০৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকায় চাঞ্চল্যকর প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৪৬) হত্যার ঘটনায় হত্যাকারী সাবিনা আক্তার (২৫) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। এ সময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

চকবাজার মডেল থানা সূ্ত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকার ৬৬/১, আরএনডি রোডের এশিয়া টাওয়ারে ৫ম তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ন আলামত ফুলদানির ভাঙ্গা অংশ, ধারালো চাকু ও অন্যান্য আলামত জব্দ করে।

এরপর ভিকিটিম নজরুল ইসলামের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. তহিদুল ইসলাম ওরফে তাপস বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় গত ৪ ডিসেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রুজুকৃত মামলাটি তদন্তকালে আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ও সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্য  বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত হিসেবে মোছা. সাবিনা আক্তারকে শনাক্ত করা হয়। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে পাঁচটায় যশোরের বাঘার পাড়া থানার মির্জাপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম নজরুল ইসলামের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

থানা সূত্র আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মোছা. সাবিনা আক্তার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। হত্যার ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে সাবিনা আক্তার জানায়, মামলার ঘটনার প্রায় এক মাস পূর্বে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে চাকুরীর জন্য ভিকটিম নজরুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী সন্তান বাসায় না থাকায় ভিকটিম নজরুল ইসলাম সাবিনা আক্তারকে গত (২ ডিসেম্বর) রাতে বাসায় ডেকে নেন।

সাবিনা আক্তার নজরুল ইসলামের বাসায় রাতে অবস্থান করেন। এ সময়ে চাকুরী ও বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সাবিনা আক্তার প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ভোর সাড়ে পাঁচটায় দিকে নজরুল ইসলামকে পাটার শিল দিয়ে মাথা ও মুখে গুরুতর আঘাত করেন ও মুখে বালিশ চাপা দেন। ফলে নজরুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এরপর নজরুল ইসলামের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে নজরুলের পুরুষাঙ্গ কেটে আলাদা করে নির্মমভাবে হত্যা করে।

গ্রেপ্তারকৃত সাবিনা আক্তারের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত শিল পাটার রক্তমাখা শিল এবং ঘটনার দিন তার পরিহিত বোরকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে চকবাজার মডেল থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।