সিনিয়র রিপোর্টার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজী নববর্ষ-২০২৫ উদযাপনকে কেন্দ্র করে আতশবাজি, পটকা, ক্লাস্টার বোমা, রকেট বোমা ফোটানো বন্ধসহ ঢাকা মহানগরী এলাকায় বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদফতর থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
নগরবাসীকে নতুন ইংরেজি বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে রাজধানীতে তিন হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, ৩০০ ফিট, উত্তরা দিয়াবাড়ী এলাকায় বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আমাদের পুলিশ ফোর্সের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদফতরের ম্যাজিস্ট্রেটরা থাকবেন। তারাও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। সেখানে আমাদের ফোর্স তাদের সহযোগিতা করবে।’
https://ac312f61a4ac079f738059f460521a85.safeframe.googlesyndication.com/safeframe/1-0-40/html/container.html পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আতশবাজি ফুটিয়ে ইংরেজী নববর্ষকে বরণ করা হয়, বাংলাদেশে উদযাপন করলে সমস্যা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থার্টি ফার্স্ট উদযাপিত হয়। বেশিরভাগ দেশে এটি নববর্ষ, আমাদের দেশে নয়। তাছাড়া অন্যান্য দেশে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ইংরেজী নববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করা হয়, পুরো শহরজুড়ে আতশবাজি ফোটানো হয় না। আমরাও এ বছর ঢাকা মহানগরীর একটি নির্দিষ্ট স্থানে থার্টি ফার্স্ট ও ইংরেজী নববর্ষ উদযাপনের আয়োজন করার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু এ বছর আমরা সেটি পারিনি। আশা করি, আগামী বছর আমরা সেটি করতে পারবো।’
থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোনও থ্রেট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে গত এক সপ্তাহ ডিএমপি রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ১৭২ কেজি আতশবাজি, পটকা, ক্লাস্টার বোমা, রকেট বোমা জব্দ করেছে। এ বিষয়ে পাঁচটি মামলা হয়েছে এবং পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
শুধু পুলিশ বা পরিবেশ অধিদফতর দিয়ে শব্দদূষণ বন্ধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বসবাস। সামান্য পুলিশ সদস্য দিয়ে এতো মানুষকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ জন্য প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। তাহলে শব্দদূষণ রোধ এবং বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠেকানো সম্ভব।’
পুলিশের মনোবল ফিরে এসেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পুলিশের মনোবলের যে ঘাটতি ছিল, এটি আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমাদের এখন কোনও সমস্যা নেই। আমরা যে কোমায় গিয়েছিলাম, সেটি থেকে ফিরে এসেছি। আমাদের অফিসারদের মনোবল এখন অনেক ভালো।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, আপনারা জানেন শব্দদূষণ নানা ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে থাকে। নতুন বছর উদযাপন করতে গিয়ে যেন শব্দদূষণ না হয় সে ব্যাপারে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নানা ধরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে দিনে ও রাতে ঢাকা মহানগরীতে পর্যাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থাকবে। আতশবাজি ও পটকা ফুটিয়ে শব্দদূষণ প্রতিরোধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্তর একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম এর সঞ্চালনায় ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, পিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান পিপিএম (বার) সহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।