অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্রুত সাজা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে, যাদের কাজ হলো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা ও গায়েবি মামলার তালিকা করে নির্দিষ্ট কিছু মামলার দ্রুত বিচার করে সাজা দেওয়ার জন্য আদালতগুলোকে নির্দেশ দেওয়া। কাজটা শুরু হয়েছে এবং গতকাল মঙ্গলবার ১৫ জন নেতাকে চার বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। সোমবার অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিশিরাতের সরকার শুধু খালেদা জিয়াকেই একটার পর একটা বানোয়াট অভিযোগে কারাদণ্ড দিচ্ছে না, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকেও তার অনুপস্থিতিতে কয়েকটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাদণ্ড দিয়েছে। এমনকি তার স্ত্রী রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকা সত্ত্বেও শুধু জিয়া পরিবারের সদস্য হওয়ার অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে সাজা দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে ৯ বছর, দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে ৪ বছর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানকে ১৩ বছর, তার স্ত্রীকে ৩ বছর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে ৪ বছর, দলের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে ৭০ বছর, দলের সহ-গ্রামসরকার বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকনসহ ১৫ জন নেতা-কর্মীকে ৪ বছর করে, রাজশাহী জেলা বিএনপি সভাপতি আবু সাঈদ চাঁদকে ৩ বছর, যুবদল নেতা ইসহাক সরকারকে ২ বছর এবং ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রেজাওয়ানুল হক সবুজকে ২ বছরসহ যুবদল, ছাত্রদল ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফখরুল।
এসব নেতাদের তড়িঘড়ি করে রায় দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর বেশির ভাগ রায়ই হয়েছে গত দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে। অতি দ্রুত সাজা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিদিনই বিএনপি ও অঙ্গ দলের নেতা-কর্মীদের মামলার শুনানি চলছে। কিছুদিন আগে সাতক্ষীরা জেলায় এবং ঈশ্বরদীতে দলের ও অঙ্গ দলের বহু নেতা-কর্মীদের ফাঁসি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আইনের নামে সরকার যা করছে, তা বেআইনি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়। সভায় অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য জোর দাবি জানাই।’