ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর খালে ভেসে উঠলো শিশু সেহলিজের মরদেহ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৪:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • 61

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের নগরের চকবাজার থানার কাপাসগোলা এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া সাত মাসের শিশু সেহলিজের মরদেহ চাক্তাই খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর স্থানীয়রা তার মরদেহটি খালে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন বলে জানান উদ্ধারকারী বাহিনীটির উপপরিচালক (চট্টগ্রাম) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, সকালে চাক্তাই খালে শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বাকলিয়া থানার চাক্তাই খালের চামড়াগুদাম অংশে সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে সেহলিজের মরদেহ ভাসতে দেখেন কয়েকজন যুবক। এ সময় তারা মরদেহটি খাল থেকে পাড়ে তুলে আনেন। খবর পেয়ে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পরিচয় নিশ্চিতের পর আইন অনুসারে শিশুটির পরিবারকে মরদেহটি হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চকবাজার থানার কাপাসগোলার নবাব হোটেলের পাশের হিজরা খালের নালায় পড়ে যায়। রিকশাআরোহী শিশুটির মা সালমা ও দাদী আয়েশাকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ ছিল শিশুটি।

নিখোঁজ শিশু সেহলিজের মা সালমা বেগম জানান, তারা কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বৃষ্টির মওসুমে ভরা নালা ও খালে পড়ে প্রাণহানির নজির পুরোনো।

এর আগে ২০২৪ সালের জুনে চট্টগ্রামের বন্দর থানার পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা ও আবিদার পাড়ার মাঝামাঝি এলাকার খাল থেকে আট বছর বয়সী শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা বক্স ড্রেনের ঢাকনা খোলা থাকায় শিশুটি খেলতে গিয়ে খালে পড়ে যেতে পারে তখন স্থানীয়রা বলছিলেন।

২০২৩ সালে বন্দর নগরীতে নালায় ডুবে যায় এক শিশু। দুই বছরের সেই শিশুটি বাসার কাছেই ড্রেনে পড়ে তলিয়ে যায়। সেসময় টানা বৃষ্টিতে নগরীর খাল ও নালাগুলো ভরে যায়। তার মধ্যে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

২০২১ সালের ৩০ জুনে চট্টগ্রামে ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকার চশমা হিলে অটোরিকশা ড্রেনে পড়ে চালক ও যাত্রীর প্রাণ যায়। এরপর ২৫ আগস্ট মুরাদপুর এলাকায় খালে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমদ নামে একজন। ফুটপাত দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে তিনি ভরা নালায় পড়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেন।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আগ্রাবাদে নবী টাওয়ারের কাছাকাছি নাছিরছড়া খালে পড়ে তলিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিয়া। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় কয়েক টন আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে ১৯ বছরের সাদিয়ার লাশ উদ্ধার হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে ‘খেলনা কুড়াতে’ চশমা খালে নেমে ১১ বছরের এক শিশু তলিয়ে যায়। এর আগের বছরগুলোতেও চট্টগ্রামে নালা ও খালে পড়ে প্রাণহানির নজির রয়েছে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করলেন মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক

নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর খালে ভেসে উঠলো শিশু সেহলিজের মরদেহ

আপডেট সময় ০৪:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের নগরের চকবাজার থানার কাপাসগোলা এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া সাত মাসের শিশু সেহলিজের মরদেহ চাক্তাই খাল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের প্রায় ১৪ ঘণ্টা পর স্থানীয়রা তার মরদেহটি খালে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিশুটির মরদেহ দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন বলে জানান উদ্ধারকারী বাহিনীটির উপপরিচালক (চট্টগ্রাম) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, সকালে চাক্তাই খালে শিশুর মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বাকলিয়া থানার চাক্তাই খালের চামড়াগুদাম অংশে সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে সেহলিজের মরদেহ ভাসতে দেখেন কয়েকজন যুবক। এ সময় তারা মরদেহটি খাল থেকে পাড়ে তুলে আনেন। খবর পেয়ে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পরিচয় নিশ্চিতের পর আইন অনুসারে শিশুটির পরিবারকে মরদেহটি হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একটি অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চকবাজার থানার কাপাসগোলার নবাব হোটেলের পাশের হিজরা খালের নালায় পড়ে যায়। রিকশাআরোহী শিশুটির মা সালমা ও দাদী আয়েশাকে উদ্ধার করা গেলেও নিখোঁজ ছিল শিশুটি।

নিখোঁজ শিশু সেহলিজের মা সালমা বেগম জানান, তারা কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়। বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বৃষ্টির মওসুমে ভরা নালা ও খালে পড়ে প্রাণহানির নজির পুরোনো।

এর আগে ২০২৪ সালের জুনে চট্টগ্রামের বন্দর থানার পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা ও আবিদার পাড়ার মাঝামাঝি এলাকার খাল থেকে আট বছর বয়সী শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা বক্স ড্রেনের ঢাকনা খোলা থাকায় শিশুটি খেলতে গিয়ে খালে পড়ে যেতে পারে তখন স্থানীয়রা বলছিলেন।

২০২৩ সালে বন্দর নগরীতে নালায় ডুবে যায় এক শিশু। দুই বছরের সেই শিশুটি বাসার কাছেই ড্রেনে পড়ে তলিয়ে যায়। সেসময় টানা বৃষ্টিতে নগরীর খাল ও নালাগুলো ভরে যায়। তার মধ্যে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।

২০২১ সালের ৩০ জুনে চট্টগ্রামে ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকার চশমা হিলে অটোরিকশা ড্রেনে পড়ে চালক ও যাত্রীর প্রাণ যায়। এরপর ২৫ আগস্ট মুরাদপুর এলাকায় খালে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমদ নামে একজন। ফুটপাত দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে তিনি ভরা নালায় পড়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেন।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আগ্রাবাদে নবী টাওয়ারের কাছাকাছি নাছিরছড়া খালে পড়ে তলিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিয়া। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় কয়েক টন আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে ১৯ বছরের সাদিয়ার লাশ উদ্ধার হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে ‘খেলনা কুড়াতে’ চশমা খালে নেমে ১১ বছরের এক শিশু তলিয়ে যায়। এর আগের বছরগুলোতেও চট্টগ্রামে নালা ও খালে পড়ে প্রাণহানির নজির রয়েছে।