ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোনো দলের সঙ্গে নয়, আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে: অরিন্দম বাগচী

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩
  • 256

অনলাইন ডেস্ক : ভারতেরপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সচিব অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে। একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সম্পর্ক হয়। যখন যে সরকার থাকে, সরকারের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক হয় দুই দেশের উন্নয়নের জন্য। আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করি।’

আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভারত সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা সেখানে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবির প্রসঙ্গে বাগচী বলেন, ‘ভারতের সংবিধানে এমন কিছু নেই, ভারতে এমন কিছু হয় না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে যা বলা আছে, হয়তো সেটাই হবে। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ’

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে সেদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, সেখানে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।’

ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ না পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের বিরোধিতা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব তথ্য যারা ছড়ায় তারা ব্রিকসের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া জানে না। ভারত সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত।’

চীন ইস্যুতে ভারতেরপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। বাংলাদেশ যদি মনে করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তাদের ভালো, তাহলে সেটা তারা করবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। তারা তাদের সংবিধান অনুযায়ী চলবে।’

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে উল্লেখ করে যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্থ বলেন, ‘গত সাত-আট বছর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে। হয়তো কখনো একটু ধীর কখনো দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, কিন্তু এগিয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৬টি প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৬৪টি ক্ষুদ্র বিনিয়োগও আছে। দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারত এর উদাহরণ। ওদিকের রাজ্যগুলোতে এখন উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ‘

স্মিতা বলেন, ‘বাংলাদেশির ভিসা ইস্যু করেছে। সম্প্রতি ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আপনারা ভ্রমণ করলে ভারতই লাভবান হয়। সুতরাং এ সমস্যা কেটে যাবে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। ভারতে আসার জন্য এখন ডলার আনার দরকার নেই। টাকা-রুপি কার্ড চালু হয়ে গেলে ভ্রমণকারীরা ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারবেন। ইউপে’র মাধ্যমে ভারতে সব ধরনের খরচ করতে পারবে। তাছাড়া ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ সময় বাংলাদেশিদের জন্য ভারত আরও বেশি স্কলারশিপ ভবিষ্যতে বাড়াবে বলে জানান তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের সীমারেখা আকাশেও নয়। নিরাপত্তা ইস্যুতে, কানেক্টিভিটি এবং উন্নয়ন সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড মহামারিকালেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তৃতীয় দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারছে।’

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কোনো দলের সঙ্গে নয়, আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে: অরিন্দম বাগচী

আপডেট সময় ০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক : ভারতেরপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সচিব অরিন্দম বাগচী বলেছেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে নয়, আমাদের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে। একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সম্পর্ক হয়। যখন যে সরকার থাকে, সরকারের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক হয় দুই দেশের উন্নয়নের জন্য। আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করি।’

আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) ভারত সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা সেখানে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবির প্রসঙ্গে বাগচী বলেন, ‘ভারতের সংবিধানে এমন কিছু নেই, ভারতে এমন কিছু হয় না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানে যা বলা আছে, হয়তো সেটাই হবে। এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ’

বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর তৎপরতার প্রেক্ষাপটে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিষয়ে সেদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, সেখানে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।’

ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ না পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের বিরোধিতা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব তথ্য যারা ছড়ায় তারা ব্রিকসের সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া জানে না। ভারত সুযোগ পেলেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়। তারই অংশ হিসেবে নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত।’

চীন ইস্যুতে ভারতেরপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। বাংলাদেশ যদি মনে করে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে তাদের ভালো, তাহলে সেটা তারা করবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। তারা তাদের সংবিধান অনুযায়ী চলবে।’

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে উল্লেখ করে যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) স্মিতা পান্থ বলেন, ‘গত সাত-আট বছর দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় এগোচ্ছে। হয়তো কখনো একটু ধীর কখনো দ্রুত গতিতে এগিয়েছে, কিন্তু এগিয়েছে। উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪৬টি প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৬৪টি ক্ষুদ্র বিনিয়োগও আছে। দুই দেশের যোগাযোগ খাতে ভারত বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ, ত্রিপুরার সঙ্গে রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারত এর উদাহরণ। ওদিকের রাজ্যগুলোতে এখন উন্নয়ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ‘

স্মিতা বলেন, ‘বাংলাদেশির ভিসা ইস্যু করেছে। সম্প্রতি ভিসা নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সাময়িক। শিগগির এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আপনারা ভ্রমণ করলে ভারতই লাভবান হয়। সুতরাং এ সমস্যা কেটে যাবে। দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক কীভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা নিয়েও কাজ করছে ভারত। ভারতে আসার জন্য এখন ডলার আনার দরকার নেই। টাকা-রুপি কার্ড চালু হয়ে গেলে ভ্রমণকারীরা ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারবেন। ইউপে’র মাধ্যমে ভারতে সব ধরনের খরচ করতে পারবে। তাছাড়া ভারত এখন নিত্যনতুন উদ্ভাবন, সবুজ জ্বালানি, প্রযুক্তি প্রভৃতি দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ সময় বাংলাদেশিদের জন্য ভারত আরও বেশি স্কলারশিপ ভবিষ্যতে বাড়াবে বলে জানান তিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের সীমারেখা আকাশেও নয়। নিরাপত্তা ইস্যুতে, কানেক্টিভিটি এবং উন্নয়ন সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। কোভিড মহামারিকালেও বাংলাদেশে ভারতের উন্নয়ন সহায়তা কার্যক্রম থেমে থাকেনি। তৃতীয় দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ভারতের কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারছে।’

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (বাংলাদেশ-মিয়ানমার বিভাগ) নবনীতা চক্রবর্তী প্রমুখ।