সিনিয়র রিপোর্টার : ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তার কথিত উপদেষ্টা মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফির কখনো কথা হয়নি। তবে ২০২১ সালে করোনা মহামারির সময় ১০-১৫ জনের একটি জুম মিটিংয়ে বাইডেনের স্ত্রীর সঙ্গে তার একবার কথা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারা গেটে মিয়া আরেফিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এদিন বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ডিবিপ্রধানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম আরেফিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘২৮ অক্টোবর ঢাকায় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে বিএনপির হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, পুলিশের গায়ে আঘাত করা, একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা ও সন্ধ্যায় বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া আরেফিকে সঙ্গে নিয়ে হাসান সোহরাওয়ার্দীর পার্টি অফিসে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন একসূত্রে গাঁথা। এর সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতারা জড়িত। আমরা তাদের অনেককে ধরে এনেছি, জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আমরা সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সোহরাওয়ার্দীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সেখান যে গরমিল ছিল তা জানতে কাশিমপুর কারাগারে এসেছি। জিজ্ঞাসাবাদে আরেফি বলেছেন, তাকে দেশে এনে বিভিন্ন নেতা-কর্মী যেমন- মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আব্দুল আউয়াল মিন্টুর নম্বর দিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তিনি আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসায়ও যান। এসব কাজ করতে সহায়তা করেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। তিনি ওই সেনা কর্মকর্তার ট্র্যাপে পড়েছেন। তার কথাতেই মিথ্যা পরিচয়ে বক্তব্য রাখেন।’
এই কাজের পেছনে আরেফির কী উদ্দেশ্য বা লাভ ছিল, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘তার লাভ বলতে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী ভালো অবস্থানে যাবেন। তখন তাকে দিয়ে তিনি (আরেফি) লাভবান হবেন বা ভালো কিছু পাবেন। তবে আরেফি স্বীকার করেছেন যে, তিনি বুঝতে পারেননি। তার সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। এখন তিনি অনুতপ্ত।’
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আরেফি। তিনি নিজের পরিচয় দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ হিসেবে। ২৯ অক্টোবর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আরেফিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।