ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতে ড. ইউনূস বলেছেন : ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্য প্রাণোদিত’

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩
  • 107

অনলাইন ডেস্ক :   গ্রামীন টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মামলার বাদী পক্ষের সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে মামলাটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এমতাবস্থায় মামলাটি খারিজ করে আমাকে অভিযোগ থেকে অব্যহতি দেওয়া খুব জরুরি।’

আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় প্রদত্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্যে ড. ইউনূস আদালতে এ কথা বলেন। ড. ইউনূসের পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।’ ড. ইউনূস বলেন, ‘শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘন করা হলে ২৩৬ ধারায় সরকার প্রতিকারের একাধিক বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারা না মেনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কখনও বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন শ্রম আইন স্বয়ং কোনো ধারা লঙ্ঘনের প্রতিকারের বিধান রাখা হয়, তখন সে ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায় আইনগতভাবে উল্লেখিত ধারাগুলোর লঙ্ঘন ফৌজদারি অপরাধ নয়। কিন্তু উপরোক্ত তিনটি ধারাকে অন্যায়ভাবে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।’

মামলার অন্য তিন বিবাদী গ্রামীন টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের ভাষ্য, ‘এই মামলার চারজন বিবাদীর মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকসহ অর্ধশতাধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কোনো কোম্পানিতে তার নিজস্ব কোনো শেয়ার নেই। সুতরাং তার পকেটে কোনো লভ্যাংশ ঢোকে না।’

তারা আরও বলেন, ‘যখনই দেশের গরিবদের একটা সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখেছেন, তার সমাধানে একটা বিজনেস মডেল বানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীন কল্যাণ। এমন ব্যবসার ধারণা বা মডেল তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় দিয়ে মালিকানায় নিজেকে কখনও জড়াননি। দেশে-বিদেশে কোথাও নিজের নামে কোনো জায়গা-জমি, গাড়ি-বাড়ি তার নেই।’

বিবাদীদের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশে একজন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেখান যিনি এতগুলো ইমপ্যাক্ট তৈরি করেছেন। এতগুলো বিদেশি ব্র্যান্ড কোম্পানিকে জয়েন্ট ভেঞ্চারে সঙ্গে বাংলাদেশে এনেছেন। এত এত মানব সম্পদ তৈরি করেছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা কোনো কিছুই নিজের কোনো আর্থিক লাভের জন্য করেননি। এ ধরনের অসংখ্য অবদান রাখার পরও এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে মিথ্যা অপরাধে দাঁড়াতে হচ্ছে বিচারের কাঠগড়ায়।’

এ সময় ‘এই মিথ্যা অভিযোগ’ থেকে অব্যহতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। এর আগে ড. ইউনূসসহ বিবাদীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও সাক্ষীদের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে শোনান আদালত। এরপরই বিবাদীরা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য পেশ করেন। এ সময় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সংস্কার শেষে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন : উপদেষ্টা নাহিদ

আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতে ড. ইউনূস বলেছেন : ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্য প্রাণোদিত’

আপডেট সময় ০৩:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক :   গ্রামীন টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মামলার বাদী পক্ষের সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে মামলাটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এমতাবস্থায় মামলাটি খারিজ করে আমাকে অভিযোগ থেকে অব্যহতি দেওয়া খুব জরুরি।’

আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় প্রদত্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্যে ড. ইউনূস আদালতে এ কথা বলেন। ড. ইউনূসের পক্ষে লিখিত বক্তব্যটি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।’ ড. ইউনূস বলেন, ‘শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘন করা হলে ২৩৬ ধারায় সরকার প্রতিকারের একাধিক বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারা না মেনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কখনও বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন শ্রম আইন স্বয়ং কোনো ধারা লঙ্ঘনের প্রতিকারের বিধান রাখা হয়, তখন সে ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায় আইনগতভাবে উল্লেখিত ধারাগুলোর লঙ্ঘন ফৌজদারি অপরাধ নয়। কিন্তু উপরোক্ত তিনটি ধারাকে অন্যায়ভাবে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।’

মামলার অন্য তিন বিবাদী গ্রামীন টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের ভাষ্য, ‘এই মামলার চারজন বিবাদীর মধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংকসহ অর্ধশতাধিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কোনো কোম্পানিতে তার নিজস্ব কোনো শেয়ার নেই। সুতরাং তার পকেটে কোনো লভ্যাংশ ঢোকে না।’

তারা আরও বলেন, ‘যখনই দেশের গরিবদের একটা সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখেছেন, তার সমাধানে একটা বিজনেস মডেল বানিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য বানিয়েছেন গ্রামীন কল্যাণ। এমন ব্যবসার ধারণা বা মডেল তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় দিয়ে মালিকানায় নিজেকে কখনও জড়াননি। দেশে-বিদেশে কোথাও নিজের নামে কোনো জায়গা-জমি, গাড়ি-বাড়ি তার নেই।’

বিবাদীদের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশে একজন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান দেখান যিনি এতগুলো ইমপ্যাক্ট তৈরি করেছেন। এতগুলো বিদেশি ব্র্যান্ড কোম্পানিকে জয়েন্ট ভেঞ্চারে সঙ্গে বাংলাদেশে এনেছেন। এত এত মানব সম্পদ তৈরি করেছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা কোনো কিছুই নিজের কোনো আর্থিক লাভের জন্য করেননি। এ ধরনের অসংখ্য অবদান রাখার পরও এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে মিথ্যা অপরাধে দাঁড়াতে হচ্ছে বিচারের কাঠগড়ায়।’

এ সময় ‘এই মিথ্যা অভিযোগ’ থেকে অব্যহতি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। এর আগে ড. ইউনূসসহ বিবাদীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও সাক্ষীদের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে শোনান আদালত। এরপরই বিবাদীরা তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য পেশ করেন। এ সময় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।