ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি ধীরজ সাহুর বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর পাওয়া গেল ৩৫৩ কোটি

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 46
অনলাইন ডেস্ক : বলিউডে বেশ জনপ্রিয় দুটি চলচিত্রের নাম অক্ষয়ের স্পেশাল ২৬ ও অজয়ের রেইড। যে ছবিগুলোতে দেখা যায় সিবিআই অথবা আয় বিভাগের কর্মকর্তারা রেইড দিচ্ছেন বড় বড় এমপি মন্ত্রীদের বাসায়। যেখান থেকে বের হয়ে আসছে কোটি কোটি টাকা। রেইড ছবিটিতে তো একদম বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছিলো বিহারের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে যার ঘরে যে পরিমান টাকা পাওয়া গিয়েছিলো তা গুনে শেষ করতে লেগেছিলো বেশ কয়েকদিন। তবে চলচিত্রের এ ঘটনা এবার বাস্তবে আবারও ঘটলো ভারতের ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায়। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা। রবিবার রাতে টাকা গোনা শেষে ভারতীয় আয়কর দপ্তর থেকে টাকার এই পরিমাণের তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়েছে।  মোট ১৭৬টি ব্যাগে এবং ৩টি ব্যাঙ্ক থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা গুনতে আনা হয়েছিল ৪০টি মেশিন। ৯টি দল টানা ৫ দিন ধরে টাকা গোনার কাজ করেছে। এই দলে ২৪ জন কর্মকর্তাসহ ব্যাংক ও পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। নোটবন্দির পরেও যে কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতারা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার কংগ্রেসের রাজ্যসভার এমপি ধীরজ সাহুর ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। তল্লাশির প্রথম দিনেই আলমারি ও বাক্স থেকে বান্ডিল টাকা উদ্ধার হয়। তারপর টাকা গুনতে ব্যাংক থেকে নিয়ে আসা হয় টাকা গোনার মেশিন। আয়কর কর্মকর্তা থেকে প্রশাসনের কর্মীরা টাকা গোনার কাজে হাত লাগান। তারপর টানা কয়েকদিন ধরে গণনার শেষে টাকার যে পরিমাণ দাঁড়াল, তা শুনলে সবারই চোখ কপালে উঠবে। এদিকে কংগ্রেস দাবি করেছে, দলের সঙ্গে সাংসদের ব্যবসার কোনো যোগসূত্র নেই। দলের পক্ষ থেকে প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, “ধীরজ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের কোনো সম্পর্ক নেই। একমাত্র সংশ্লিষ্ট এমপির ব্যাখ্যা দিতে পারবেন কীভাবে এত টাকা উদ্ধার হল তার বাড়ি থেকে।”
আয়কর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওড়িশার একটি মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা ও তার সঙ্গে যুক্ত নানা দোকানে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির সূত্র ধরেই এই অভিযান চালানো হয়। ঝাড়খণ্ডের বোকারো ও রাঁচিতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া ওড়িশার সম্বলপুর ও সুন্দরগড়েও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের এমপি ধীরজ সাহু এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। কে এই ধীরজ সাহু : বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধীরজ সাহুর জন্ম ১৯৫৫ সালে রাঁচীতে। তার বাবা রায় সাহেব বলদেব এবং মা সুশীলা দেবী। ধীরজের বাবা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেস-যোগ থাকায় ধীরজেরও ছাত্র রাজনীতিতে উত্থান হয় যুব কংগ্রেসের হাত ধরেই।
১৯৭৭ সালে রাজনীতির জগতে পা রাখেন ধীরজ। ধীরজের ভাই শিবপ্রসাদ সাহুও কংগ্রেস নেতা। দু’বার রাঁচী থেকে এমপি হয়েছেন। ধীরজ স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার পরিবার ঝাড়খণ্ডের লোহারডাগাতে থাকে। ২০১০ সালে প্রথম বার রাজ্যসভার এমপি হন ধীরজ। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হন তিনি।
২০১৮ সালে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য যে হলফনামা দিতে হয়েছিল ধীরজকে, সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এছাড়া ধীরজ জানিয়েছিলেন, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে তার আয়ের পরিমাণ ছিল এক কোটি টাকা। ধীরজের হলফনামা অনুযায়ী, তার নামে মোট দেড় কোটি টাকার চারটি গাড়ি রয়েছে। ৮৭ লাখ টাকার একটি বিএমডব্লিউ, ৩২ লাখ টাকার ফরচুনার, ২৪ লাখ টাকার রেঞ্জ রোভার, সাড়ে ৮ লাখ টাকার পাজেরো।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

আহতদের দেখতে শনিবার পঙ্গু হাসপাতালে গেলেন প্রধানমন্ত্রী

এমপি ধীরজ সাহুর বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর পাওয়া গেল ৩৫৩ কোটি

আপডেট সময় ০২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
অনলাইন ডেস্ক : বলিউডে বেশ জনপ্রিয় দুটি চলচিত্রের নাম অক্ষয়ের স্পেশাল ২৬ ও অজয়ের রেইড। যে ছবিগুলোতে দেখা যায় সিবিআই অথবা আয় বিভাগের কর্মকর্তারা রেইড দিচ্ছেন বড় বড় এমপি মন্ত্রীদের বাসায়। যেখান থেকে বের হয়ে আসছে কোটি কোটি টাকা। রেইড ছবিটিতে তো একদম বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছিলো বিহারের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে যার ঘরে যে পরিমান টাকা পাওয়া গিয়েছিলো তা গুনে শেষ করতে লেগেছিলো বেশ কয়েকদিন। তবে চলচিত্রের এ ঘটনা এবার বাস্তবে আবারও ঘটলো ভারতের ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশায়। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৫৩ কোটি টাকা। রবিবার রাতে টাকা গোনা শেষে ভারতীয় আয়কর দপ্তর থেকে টাকার এই পরিমাণের তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়েছে।  মোট ১৭৬টি ব্যাগে এবং ৩টি ব্যাঙ্ক থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা গুনতে আনা হয়েছিল ৪০টি মেশিন। ৯টি দল টানা ৫ দিন ধরে টাকা গোনার কাজ করেছে। এই দলে ২৪ জন কর্মকর্তাসহ ব্যাংক ও পুলিশ সদস্যরা ছিলেন। নোটবন্দির পরেও যে কত টাকার দুর্নীতি হয়েছে, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতারা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার কংগ্রেসের রাজ্যসভার এমপি ধীরজ সাহুর ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। তল্লাশির প্রথম দিনেই আলমারি ও বাক্স থেকে বান্ডিল টাকা উদ্ধার হয়। তারপর টাকা গুনতে ব্যাংক থেকে নিয়ে আসা হয় টাকা গোনার মেশিন। আয়কর কর্মকর্তা থেকে প্রশাসনের কর্মীরা টাকা গোনার কাজে হাত লাগান। তারপর টানা কয়েকদিন ধরে গণনার শেষে টাকার যে পরিমাণ দাঁড়াল, তা শুনলে সবারই চোখ কপালে উঠবে। এদিকে কংগ্রেস দাবি করেছে, দলের সঙ্গে সাংসদের ব্যবসার কোনো যোগসূত্র নেই। দলের পক্ষ থেকে প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লিখেছেন, “ধীরজ সাহুর ব্যবসার সঙ্গে জাতীয় কংগ্রেসের কোনো সম্পর্ক নেই। একমাত্র সংশ্লিষ্ট এমপির ব্যাখ্যা দিতে পারবেন কীভাবে এত টাকা উদ্ধার হল তার বাড়ি থেকে।”
আয়কর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওড়িশার একটি মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা ও তার সঙ্গে যুক্ত নানা দোকানে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির সূত্র ধরেই এই অভিযান চালানো হয়। ঝাড়খণ্ডের বোকারো ও রাঁচিতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া ওড়িশার সম্বলপুর ও সুন্দরগড়েও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের এমপি ধীরজ সাহু এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। কে এই ধীরজ সাহু : বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধীরজ সাহুর জন্ম ১৯৫৫ সালে রাঁচীতে। তার বাবা রায় সাহেব বলদেব এবং মা সুশীলা দেবী। ধীরজের বাবা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেস-যোগ থাকায় ধীরজেরও ছাত্র রাজনীতিতে উত্থান হয় যুব কংগ্রেসের হাত ধরেই।
১৯৭৭ সালে রাজনীতির জগতে পা রাখেন ধীরজ। ধীরজের ভাই শিবপ্রসাদ সাহুও কংগ্রেস নেতা। দু’বার রাঁচী থেকে এমপি হয়েছেন। ধীরজ স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তার পরিবার ঝাড়খণ্ডের লোহারডাগাতে থাকে। ২০১০ সালে প্রথম বার রাজ্যসভার এমপি হন ধীরজ। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হন তিনি।
২০১৮ সালে রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য যে হলফনামা দিতে হয়েছিল ধীরজকে, সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, তার সম্পত্তির পরিমাণ ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এছাড়া ধীরজ জানিয়েছিলেন, ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে তার আয়ের পরিমাণ ছিল এক কোটি টাকা। ধীরজের হলফনামা অনুযায়ী, তার নামে মোট দেড় কোটি টাকার চারটি গাড়ি রয়েছে। ৮৭ লাখ টাকার একটি বিএমডব্লিউ, ৩২ লাখ টাকার ফরচুনার, ২৪ লাখ টাকার রেঞ্জ রোভার, সাড়ে ৮ লাখ টাকার পাজেরো।