সিনিয়র রিপোর্টার : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বৈঠকে দলটিকে ২৬টি আসনে ছাড় দিতে রাজি হয় আওয়ামী লীগ। এই ২৬ আসনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগে থেকে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী না থাকায় ২৫টিতে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকবে না বলে জানা গেছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মধ্যরাত পর্যন্ত সমঝোতা সেই অবস্থানেই ছিল।
যেসব আসনে থাকছে না নৌকার প্রার্থী সেগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ইমদাদুল হক, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নাসিরুল ইসলাম খান, রংপুর-১ আসনে রেজাউল করিম রাজু, রংপুর-৩ তুষার কান্তি মণ্ডল, নীলফামারী-৪ জাকির হোসেন বাবুল, কুড়িগ্রাম-১ আছলাম হোসেন সওদাগর, কুড়িগ্রাম-২ জাফর আলী, গাইবান্ধা-১ আফরুজা বারী, গাইবান্ধা-২ মাহবুব আরা বেগম গিনি, সিলেট-৩ হাবিবুর রহমান, নীলফামারী-৩ গোলাম মোস্তফা, বগুড়া-৩ সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ শাহজাহান আলম, চট্টগ্রাম-৮ নোমান আল মাহমুদ, বগুড়া-২ তৌহিদুর রহমান মানিক, সাতক্ষীরা-২ আসাদুজ্জামান বাবু, ফেনী-৩ আবুল বাশার, চট্টগ্রাম-৫ মোহাম্মদ আবদুস সালাম, পটুয়াখালী-১ আফজাল হোসেন, ময়মনসিংহ-৫ আব্দুল হাই আকন্দ, ময়মনসিংহ-৮ আব্দুছ ছাত্তার, পিরোজপুর-৩ আশরাফুর রহমান, হবিগঞ্জ-১ মুশফিক হুসেন চৌধুরী, মানিকগঞ্জ-১ আব্দুস সালাম ও বরিশাল-৩ আসনে সরদার মো. খালেদ হোসেন।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টিকে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব আসনে নৌকার প্রার্থী প্রত্যাহার করা হবে। আজ বিকাল ৪টার মধ্যে নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। তবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে থাকবেন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আমাদের সমঝোতা হয়েছে। তাদেরকে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন দেওয়ার কথা বলেছি। তাদের চাওয়া অনেক বেশি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদেরও দেয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে।
এদিকে জাপা নির্বাচনে থাকবে কি না-এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শেুরু হয়েছে। তবে আজ বিকালে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানাবে দলটি। আজ দুপুরে দলের চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনে থাকা না থাকা সরকারের সঙ্গে সমঝোতার বিষয় নয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। নিজেদের প্রয়োজনে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত- টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাপার এবারের দাবি ছিল ৫০ আসন। ৩৫-এর কম আসনে সমঝোতায় রাজি নয়-এমন মনোভাবও জানিয়েছিল দলটি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার কয়েক দফা বৈঠক হলেও শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে জাপা নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের পছন্দমতো তালিকা করেছে। যেখানে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, সেগুলোকে ছাড় হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ জাপা যাদের আসনে ছাড় চেয়েছে, আওয়ামী লীগ সেসবের বেশির ভাগই বাদ দিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত ২৬ জনের তালিকায় এমন প্রার্থীদের নাম রয়েছে, যাদের নাম জাপা থেকে দেওয়া হয়নি।