সিনিয়র রিপোর্টার : সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এই টাকা কোথায় গেল? এই টাকাগুলো কোথায় আছে? সেটার সন্ধান দিলে আমরা জবাব দেবো।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিপিডির রিপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ রিপোর্ট কে দিয়েছে? দেবপ্রিয়ই দিক বা মুস্তাফিজই দিক, আমার বক্তব্য হচ্ছে, এই টাকাগুলো কোথায় গেছে? আপনারা টাকার সন্ধান দেন, আমরা টাকাগুলো ফিরিয়ে আনতে চাই।
প্রসঙ্গত- শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪: চলমান সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জানায়, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋণ, অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ঋণ, অর্থ লোপাটসহ নানান ধরনের আর্থিক অনিয়ম হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে তাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নীতি প্রয়োগ করা এটা তো আমেরিকারই বহুল প্রচারিত ঘোষণা। আইআরআই এবং এনডিআরের পাঁচ জন প্রতিনিধি এখন বাংলাদেশে আছে। আমরা এ ব্যাপারে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
নির্বাচন সংক্রান্ত নানা অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ সব নির্বাচন কমিশন দেখবে। যেহেতু এটি নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত বিষয়। আচরণবিধি যথাযথ প্রয়োগ, বিশৃঙ্খলা নিয়ে আইন প্রয়োগ করবে কমিশন। আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল সবাই প্রতিদ্বন্দ্বী। এই প্রতিযোগিতা যদি বিশৃঙ্খলায় আবর্ত হয়, নির্বাচন কমিশন তারা যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, সেটা নেবে। আওয়ামী লীগ দল হিসেবে আপত্তি করবে না।
একজন গণমাধ্যমকর্মী প্রশ্ন করেন- গত ১৫ বছরে এমন কী ঘটেছে যে এত উন্নয়নের পরও আওয়ামী লীগের এত সমালোচনা। একা একা নির্বাচন করতে হচ্ছে; জবাবে তিনি বলেন, যারা নির্বাচন করছে না তাদের গিয়ে প্রশ্নটা করুন। এই প্রশ্নের জবাব আমি কেন দেবো? আমরা দেশ পরিচালনা করছি। সব কিছু শতভাগ পারফেক্ট হবে এমন দাবি আমরা করি না। সমালোচনার বিষয় থাকলে সমালোচনা হবে। সমালোচনা শুদ্ধ করে। সমালোচনা-বিতর্ক হলে তখন শুদ্ধ হওয়ার একটা সুযোগ থাকে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা আর মামুরা’ ভোট হচ্ছে-এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বদিউল আলম মজুমদার বিএনপির একজন খাস দালাল। বিএনপির (জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব) রিজভী যা বলেন, উনিও তাই বলছেন।’
নির্বাচনী শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ক্রমেই অবনতি হচ্ছে আমরা দেখছি। প্রতিদিনই সংঘাতের খবর আমরা দেখছি, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটছে এ ব্যাপারে কাদের বলেন, ‘সংঘাতের আশঙ্কা সব সময় আমাদের এ অঞ্চলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থাকে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ১১৭ জন…এখানে হচ্ছে কিন্তু আমি বড় ধরনের কোনো সংঘাত হওয়ার আশঙ্কা করছি না। আমার দলের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমাদের নেত্রীর এ ব্যাপারে টলারেন্স জিরো। আওয়ামী লীগ হোক, স্বতন্ত্র প্রার্থী হোক। আওয়ামী লীগে নামে যারা শান্তি বিঘ্নিত করবে, নির্বাচনের পরিবেশকে দূষিত করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। দলের পক্ষ থেকে এটা আমাদের প্রত্যাশা।