ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন নির্বাচন করতে পারবেন না শাম্মী আহমেদ ও সাদিক আবদুল্লাহ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪
  • 137

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ (বরিশাল-৪) ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (বরিশাল-৫) নির্বাচন করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বরিশাল-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।এদিকে, বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার বিষয়ে চেম্বার আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগে একই বেঞ্চ। ফলে সাদিক আবদুল্লাহও নির্বাচন করতে পারছেন না।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শাম্মি আহমেদ এর বিষয়ে এ আদেশ দেন। আদালতে শাম্মীর পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। গত ২৬ ডিসেম্বর প্রার্থিতা ফেরত পেতে ও প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে তৃতীয় বারের মতো শাম্মী আহমেদের লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আদালত এ আদেশ দেন।

সেদিন আদালতে শাম্মী আহম্মেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজুসহ ১২ জনের মতো সিনিয়র আইনজীবী। আইনজীবীরা আদালতে বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর অষ্ট্রেলিয়া শাম্মী আহম্মেদের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন গ্রহণ করেছে। সবদিক বিবেচনা করে অন্তত আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত শাম্মী আহম্মেদকে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দিন। তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, আমার আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। এসব বিষয়ে তো আমি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। আগামী ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সব বিচারপতি মিলে শুনব।

এর আগে সকালে প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবারও চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। গত ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার প্রার্থিতা ফিরে পেতে বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদের আবেদনে সাড়া না দিয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আগামী ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে শাম্মীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ। এর আগে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। আবেদনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি।

গত ১৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তা করার ক্ষেত্রে তার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে আদেশ দেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শাম্মী আহমেদ।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্বে অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয় শাম্মী আহমেদের। আর একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বহালই থাকল। আপিল আবেদন শুনানি করে এমন রায় দেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন (ইসি)। পরে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করেন শাম্মী আহমেদ।

এর আগে শাম্মী আহমেদ এবং একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ-সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ পরস্পরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছিলেন ইসিতে। শাম্মী আহমেদ অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও তা গোপন করেছেন বলে অভিযোগ ছিল পঙ্কজের।

নির্বাচন কমিশন বর্ণিত আপিলকারীর দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় শাম্মী আহমেদের অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ করেছিলেন শাম্মী আহমেদ।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

নুর-গোলাম পরওয়ারসহ ৩০২ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন নির্বাচন করতে পারবেন না শাম্মী আহমেদ ও সাদিক আবদুল্লাহ

আপডেট সময় ০২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ (বরিশাল-৪) ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (বরিশাল-৫) নির্বাচন করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বরিশাল-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।এদিকে, বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতার বিষয়ে চেম্বার আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ চলমান থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগে একই বেঞ্চ। ফলে সাদিক আবদুল্লাহও নির্বাচন করতে পারছেন না।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ শাম্মি আহমেদ এর বিষয়ে এ আদেশ দেন। আদালতে শাম্মীর পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। গত ২৬ ডিসেম্বর প্রার্থিতা ফেরত পেতে ও প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে তৃতীয় বারের মতো শাম্মী আহমেদের লিভ টু আপিল শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আদালত এ আদেশ দেন।

সেদিন আদালতে শাম্মী আহম্মেদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, মোতাহার হোসেন সাজুসহ ১২ জনের মতো সিনিয়র আইনজীবী। আইনজীবীরা আদালতে বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর অষ্ট্রেলিয়া শাম্মী আহম্মেদের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন গ্রহণ করেছে। সবদিক বিবেচনা করে অন্তত আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত শাম্মী আহম্মেদকে নির্বাচনের মাঠে থাকার সুযোগ দিন। তখন চেম্বার বিচারপতি বলেন, আমার আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। এসব বিষয়ে তো আমি একা সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না। আগামী ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সব বিচারপতি মিলে শুনব।

এর আগে সকালে প্রতীক বরাদ্দ চেয়ে আবারও চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। গত ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার প্রার্থিতা ফিরে পেতে বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদের আবেদনে সাড়া না দিয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আগামী ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেন আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে শাম্মীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক, ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ। এর আগে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। আবেদনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি।

গত ১৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তা করার ক্ষেত্রে তার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে আদেশ দেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে শাম্মী আহমেদের রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শাম্মী আহমেদ।

এর আগে ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্বে অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিল হয় শাম্মী আহমেদের। আর একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বহালই থাকল। আপিল আবেদন শুনানি করে এমন রায় দেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন (ইসি)। পরে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করেন শাম্মী আহমেদ।

এর আগে শাম্মী আহমেদ এবং একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ-সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ পরস্পরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছিলেন ইসিতে। শাম্মী আহমেদ অষ্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও তা গোপন করেছেন বলে অভিযোগ ছিল পঙ্কজের।

নির্বাচন কমিশন বর্ণিত আপিলকারীর দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয়। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় শাম্মী আহমেদের অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠানোর পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ করেছিলেন শাম্মী আহমেদ।