সিনিয়র রিপোর্টার : রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ৬টি নাগরিক সংগঠন। তারা বলছে, সত্যিকারের নির্বাচন বলতে যা বুঝায় তা হয়নি, প্রতিযোগিতামূলক হয়নি।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) একটি যৌথ বিবৃতিতে গত (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
যৌথ বিবৃতি দেওয়া সংগঠনগুলো হলো- এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন (সিআইভিআইসিইউএস), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এডিএন), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রোজেক্ট (অস্ট্রেলিয়া) ও অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন)।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নির্বাচন যথাযথ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক-কোনোটিই হয়নি। গণতান্ত্রিক নীতি এবং নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রতি আনুগত্য নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছিল।নির্বাচন কমিশন ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে যে তথ্য দিয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলো থেকে যেসব খবর পাওয়া গেছে এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা যেসব তথ্য দিয়েছেন, তাতে ভিন্ন চিত্র পাওয়া যায়।এমন বহু খবর ও তথ্য-প্রমাণ আছে, যেগুলো নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন ব্যাপক অনিয়মের চিত্র দেয়।
সুশীল সমাজের প্ল্যাটফর্মগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা বাংলাদেশে স্বাধীনতা, ন্যায্যতা, অংশগ্রহণ এবং অন্তর্ভুক্তির মূলনীতিকে প্রতিফলিত করে এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রকৃত ইচ্ছার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি নতুন নির্বাচনের জন্য চাপ দেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে বেপরোয়াভাবে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনের ঘটনা ছিল উদ্বেগজনক। ভয় দেখানো, পরোয়ানা ছাড়া হয়রানি, মিথ্যা অভিযোগে বহু মানুষকে আটক এবং বিরোধী রাজনীতিক ও বিরোধী দলগুলোর সমর্থকদের ওপর পরিচালিত সহিংসতা একটি বিশৃঙ্খল নির্বাচনী পরিবেশের চিত্র দেয়। এটি কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের কারণেই সম্ভব হয়ে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো দেশজুড়ে বিরোধী নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের ধরপাকড় করে।
তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বানোয়াট মামলায় কারাবন্দী সকল রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের মুক্তি দিতে হবে। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বাধীনভাবে যেন মত প্রকাশ, সংগঠন ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
তাদের মতে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, অংশগ্রহণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের শর্তগুলো পূরণ করবে এবং তাতে বাংলাদেশের জনগণের সত্যিকার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।