মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন : সাংবাদিকতায় অনেক সময় নিরপক্ষেতার কথা বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়
-
ডেস্ক :
-
আপডেট সময়
১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
- 144
অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমজাকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সাংবাদিকতায় অনেক সময় নিরপক্ষেতার কথা বলতে গিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হয়। সবক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা হয় না। কারণ হত্যা এবং হত্যাকারীর বিষয়ে অপরাধীর পক্ষ নেয়া যাবে না। তখন সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা যেন বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখি। অন্যায়কে কখনো প্রশ্রয় দিব না। শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে ২০২৪ সালের কার্যকরী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, সত্যের পথ অনেক কষ্টের। যে কোন পেশার লোকজনের জন্যই সত্যের পথে থাকা খুবই কঠিন। যুগ পরিবর্তন হচ্ছে, পেশাগত কাজে আমাদের পরিবর্তন আসছে। তাই যারা গণমাধ্যমে কাজ করছেন তাদেরকে প্রযুক্তির সাথে নিজেদেরকে দক্ষ করে তুলতে হবে। গণমাধ্যমে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিশ্চয়ই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় অনুধাবন করেন এবং তা সমাধান করবেন। দীপু মনি বলেন, সাংবাদিকরা আমার খুবই আপনজন। বাবার কারণে শৈশব কেটেছে দৈনিক ইত্তেফাকের ছাপাখানায় ছুটাছুটি করে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইত্তেফাকে জড়িত ছিলেন। আমি যখন চাঁদপুরে এসেছি তখন থেকেই সাংবাদিকদের সাথে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত সেই সম্পর্ক অটুট রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরকে নিয়ে আমরা সকলে কাজ করতে চাই। আমিও যেন সততা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে চাঁদপুরের জন্য কাজ করতে পারি সেই প্রত্যাশা। প্রেসক্লাবের যারা নতুন দায়িত্ব এসেছেন, তাদের জন্য এই বছরটা ভাল কাটে সেই কামনা করছি। অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি। তিনি বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া, গণমাধ্যমের বিকাশ ছাড়া গণতন্ত্রের পূর্ণতা পাবে না। সকল বাস্তবতায় আমরা গণমাধ্যমকে পূর্ণাঙ্গভাবে সকল ধরনের সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। যতক্ষণ না গণমাধ্যম শক্তিশালী ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে আমরা সাথে আছি।
সেক্ষেত্রে আমরাও আপনাদের কাছ থেকে একই ধরনের সহযোগিতা চাই এবং কীভাবে আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অর্থাৎ গণমাধ্যম এবং সরকারের মধ্যে একটি সহযোগিতার মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা এবং আরো শক্ত ভিত্তির এই গণমাধ্যমকে দাঁড় করানোর জন্য চেষ্টা করতে পারি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম কিভাবে সরকারকে সঠিক তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে জবাবদিহিতায় আনতে পারে, এমন কী সমালোচনাও করতে পারে সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সাথে আমি যে কথাটি গত কিছুদিন ধরে বলে আসছি এবং এখনো বলছি-আপনাদেরকে সাথে নিয়ে ওই গুজব ও অপ্রপ্রচার প্রতিরোধ করতে চাই। তিনি বলেন, আজকে পেশাদার সাংবাদিকরাই তাদের এই পেশায় শৃঙ্খলার দাবি তুলছেন। আমরা তুলছি না। আপনাদের কাছ থেকেই বারবার দাবি আসছে। কিন্তু আমরা শৃঙ্খলা কিংবা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। কারণ বিষয়টি আমাদের ওপরে চলে আসবে। তখন বলা হবে শৃঙ্খলার নামে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সরকার। শৃঙ্খলা আপনাদের দাবি, আমরা তার সাথে একমত হলাম। অন্য পেশায় এভাবে অপেশাদার লোক চলে আসে। এক্ষেত্রে আমরা সকলের পরমার্শ নিয়ে কাজ করতে চাই। আরাফাত বলেন, চাঁদপুর সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা ছিল না। এখানে এসে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এখানে অনেক গুণী মানুষ আছেন। চাঁদপুর প্রেসক্লাব আজকে কয়েকজন গুনী মানুষকে সংবর্ধিত করেছেন। কৃতি সন্তানদের সম্মানিত করলে পরবর্তী প্রজন্ম অনুপ্রেরণা পায়। এটি একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত। চাঁদপুরে প্রথম এসে এই প্রেসক্লাবের সাথে আমার নামটিও সংযুক্ত হলো। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই জেলার সাংবাদিকসহ অন্য পেশার লোকজনের আচার আচরণ ও উপস্থাপনায় বুঝিয়েছেন তারা শুধুমাত্র চাঁদপুরেই নয়, তারা জাতীয়ভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বশির আহমেদ, পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটওয়ারী ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেয়া হয় চাঁদপুরের কৃতি সন্তান আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা, ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার ও সাংবাদিক কবির বকুল এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন মজমুদারকে।
ট্যাগস