ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে শহরে থাকতে লাগে না টাকা, সবাই স্বাধীন!

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩
  • 178

বিশ্বে এমনও এক স্থান আছে যেখানে নেই সরকারের শাসনব্যবস্থা। সেখান মানুষ স্বাধনিভাবে বাঁচেন। নেই নারী-পুরুষ, ধনী-গরীব কিংবা ধর্মের বিভেদ।

এমনই এক স্থানের অবস্থান চেন্নাই শহর থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে। শহরটির নাম অরোভিল। এই শহরে স্বাধীনচেতা যে কেউ গিয়েই থাকতে পারেন।

তবে সেখানে থাকতে হলে কিছু নিয়মও মানতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, যারাই ওই শহরে থাকুন না কেন তাদের সবাইকে চাকর হিসেবে সেখানে থাকতে হবে।

১৯৬৮ সালে মিরা আলফাজোস নামের এক নারী এই স্বাধীন শহর প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্থানকে সিটি অব ডনও বলা হয়। আপনি জেনে একটু আশ্চর্য হবেন, এই শহরে বসতি স্থাপনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল জাতি-ধর্ম-উচ্চ-নীচ-বৈষম্য থেকে যেন মানুষ বাঁচতে পারেন।

অরোভিল ধর্মীয় বিশ্বাসের বাইরে সত্যের পথ অনুসরণে বিশ্বাসী। এই স্থানের মাঝখানে একটি মন্দির আছে, যাকে ‘মাতৃমন্দির’ বলা হয়। যারা নির্জনে যোগব্যায়াম করেন তাদের জন্য এটি আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রাখে। সেখানকার এই মন্দির কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম বা সম্প্রদায়ের অন্তর্গত নয়।

বর্তমানে অরোভিলে বসবাসকারীরা প্রায় ৫০ দেশ থেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে সব ধরনের বয়স, সামাজিক শ্রেণি ও সংস্কৃতির মানুষ আছেন। বর্তমানে সেখানকার জনসংখ্যা ২ হাজার ৪০০ জন।

জানলে অবাক হবেন, অরোভিল সরকার ছাড়াই চলে। এই শহরটি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যেকের সমন্বয়ে চালিত হয়। সেখানে বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র ও সংস্কৃতির মানুষ থাকলেও তারা একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে এমনো কেউ কেউ আছেন যারা একে অন্যের ভাষাও বোঝেন না, তবুও তাদের মধ্যে বোঝাবুঝি ভালো।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, অরোভিলে টাকার বিনিময় নেই। সেখানকার মানুষেরা বাইরের বিশ্বের সঙ্গে অর্থ লেনদেন করতে পারে, তবে এই শহরে এটি হয় না।

অরোভিলে বিভিন্ন সুবিধা আছে। অরোভিলের নিজস্ব স্থাপত্য ও শহর পরিকল্পনা ব্যুরো আছে। সেখানে আরও আছে আর্কাইভাল সুবিধা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, একটি অডিটোরিয়াম, ৪০টি বিজোড় শিল্প, রেস্টুরেন্ট, খামার, গেস্টহাউস ইত্যাদি। শুধু তাই নয় বাসিন্দাদের জন্য একটি কম্পিউটার, একটি ই-মেইল নেটওয়ার্কও (ওরনেট) আছে।

কীভাবে অরোভিলে পৌঁছাবেন?
অরোভিলের নিজস্ব কোনো বিমানবন্দর নেই। এর নিকটতম বিমানবন্দর হলো চেন্নাইয়ে, যা ১৩৫ কিলোমিটার দূরে। চেন্নাই থেকে একটি ক্যাব ভাড়া করে অরোভিলে পৌঁছাতে আপনাকে প্রায় ২১০০ টাকা খরচ করতে হবে।

অরোভিলের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হলো ভিলুপুরম। যা ৩২ কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে একটি ক্যাব ভাড়া করে অরোভিলে পৌঁছাতে পারবেন সহজেই।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

কাউকে তার মতের জন্য শত্রু মনে করবো না : প্রধান উপদেষ্টা

যে শহরে থাকতে লাগে না টাকা, সবাই স্বাধীন!

আপডেট সময় ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

বিশ্বে এমনও এক স্থান আছে যেখানে নেই সরকারের শাসনব্যবস্থা। সেখান মানুষ স্বাধনিভাবে বাঁচেন। নেই নারী-পুরুষ, ধনী-গরীব কিংবা ধর্মের বিভেদ।

এমনই এক স্থানের অবস্থান চেন্নাই শহর থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে। শহরটির নাম অরোভিল। এই শহরে স্বাধীনচেতা যে কেউ গিয়েই থাকতে পারেন।

তবে সেখানে থাকতে হলে কিছু নিয়মও মানতে হবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, যারাই ওই শহরে থাকুন না কেন তাদের সবাইকে চাকর হিসেবে সেখানে থাকতে হবে।

১৯৬৮ সালে মিরা আলফাজোস নামের এক নারী এই স্বাধীন শহর প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্থানকে সিটি অব ডনও বলা হয়। আপনি জেনে একটু আশ্চর্য হবেন, এই শহরে বসতি স্থাপনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল জাতি-ধর্ম-উচ্চ-নীচ-বৈষম্য থেকে যেন মানুষ বাঁচতে পারেন।

অরোভিল ধর্মীয় বিশ্বাসের বাইরে সত্যের পথ অনুসরণে বিশ্বাসী। এই স্থানের মাঝখানে একটি মন্দির আছে, যাকে ‘মাতৃমন্দির’ বলা হয়। যারা নির্জনে যোগব্যায়াম করেন তাদের জন্য এটি আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রাখে। সেখানকার এই মন্দির কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম বা সম্প্রদায়ের অন্তর্গত নয়।

বর্তমানে অরোভিলে বসবাসকারীরা প্রায় ৫০ দেশ থেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে সব ধরনের বয়স, সামাজিক শ্রেণি ও সংস্কৃতির মানুষ আছেন। বর্তমানে সেখানকার জনসংখ্যা ২ হাজার ৪০০ জন।

জানলে অবাক হবেন, অরোভিল সরকার ছাড়াই চলে। এই শহরটি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রত্যেকের সমন্বয়ে চালিত হয়। সেখানে বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র ও সংস্কৃতির মানুষ থাকলেও তারা একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে এমনো কেউ কেউ আছেন যারা একে অন্যের ভাষাও বোঝেন না, তবুও তাদের মধ্যে বোঝাবুঝি ভালো।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, অরোভিলে টাকার বিনিময় নেই। সেখানকার মানুষেরা বাইরের বিশ্বের সঙ্গে অর্থ লেনদেন করতে পারে, তবে এই শহরে এটি হয় না।

অরোভিলে বিভিন্ন সুবিধা আছে। অরোভিলের নিজস্ব স্থাপত্য ও শহর পরিকল্পনা ব্যুরো আছে। সেখানে আরও আছে আর্কাইভাল সুবিধা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, একটি অডিটোরিয়াম, ৪০টি বিজোড় শিল্প, রেস্টুরেন্ট, খামার, গেস্টহাউস ইত্যাদি। শুধু তাই নয় বাসিন্দাদের জন্য একটি কম্পিউটার, একটি ই-মেইল নেটওয়ার্কও (ওরনেট) আছে।

কীভাবে অরোভিলে পৌঁছাবেন?
অরোভিলের নিজস্ব কোনো বিমানবন্দর নেই। এর নিকটতম বিমানবন্দর হলো চেন্নাইয়ে, যা ১৩৫ কিলোমিটার দূরে। চেন্নাই থেকে একটি ক্যাব ভাড়া করে অরোভিলে পৌঁছাতে আপনাকে প্রায় ২১০০ টাকা খরচ করতে হবে।

অরোভিলের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হলো ভিলুপুরম। যা ৩২ কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে একটি ক্যাব ভাড়া করে অরোভিলে পৌঁছাতে পারবেন সহজেই।