ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধে আগামী সপ্তাহে কৃষ্ণসাগরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ন্যাটো ও ইউক্রেন। এ আলোচনায় রাশিয়ার হুমকি ও আক্রমণের শঙ্কা কাটিয়ে কীভাবে একটি নিরাপদ কোরিডরের মাধ্যমে শস্য রপ্তানি করা যায়, তা নিয়ে কথা হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় এ বিষয়ে আলোচনার জন্য অনুরোধ করেছেন। এরপরই জোটের মুখপাত্র ওআনু লুঙ্গেস্কু জানান, শস্যচুক্তি থেকে রাশিয়া বেরিয়ে যাওয়ার পরে কৃষ্ণসাগরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা করবে ন্যাটো-ইউক্রেন কাউন্সিল। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকবেন।
চলতি বছরের ন্যাটো সম্মেলনে ন্যাটো-ইউক্রেন কাউন্সিল গঠিত হয়। এর উদ্দেশ্য হলো, ইউক্রেনীয় বাহিনী ও মিত্রবাহিনীর মধ্যে ভালো সমন্বয় সৃষ্টি করা, জেলেনস্কির দেশকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দেওয়া ও ন্যাটোতে ইউক্রেনের অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিতে কাজ করা।
লুঙ্গেস্কু বলেন, ফোনালাপে জেলেনস্কি ও ন্যাটো মহাসচিব শস্যচুক্তি থেকে রাশিয়ার বের হয়ে যাওয়া ও খাদ্যশস্য রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ন্যাটো মুখপাত্রের দাবি, কৃষ্ণসাগরের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনগামী যেকোনো পণ্য পরিবহনকারী জাহাজকে সামরিক উপকরণবাহী নৌযান হিসেবে গণ্য করার যে হুমকি রাশিয়া দিয়েছে, তাতে বিশ্বজুড়ে আবারও খাদ্যসংকট সৃষ্টি হবে। বিপাকে পড়বে তৃতীয় বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ।
জেলেনস্কি শনিবার রাতের এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ন্যাটো-ইউক্রেন কাউন্সিল পারষ্পারিক সহযোগিতাকে একটি নতুন ও উন্নত স্তরে নিয়ে গেছে। এ কাউন্সিলের কর্মকাণ্ড ও সিদ্ধান্ত রাশিয়ার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে রাশিয়া বলেছে, খাদ্য ও সার রপ্তানি নিশ্চিত করতে মস্কো যেসব দাবি জানিয়েছিল, পশ্চিমা দেশগুলো সেগুলো উপেক্ষা করছে। আর এ কারণেই তারা শস্যচুক্তি প্রত্যাহার করেছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তিতে আর ফিরবে না বলেও জানিয়েছে রাশিয়া।
গত ১৩ জুলাই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, শিপিং ও বিমার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আমাদের খাদ্য ও সার রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করেছে। তাই এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে, মস্কো শস্যচুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে।
রাশিয়া এ চুক্তি নবায়নে রাজি না হওয়ার পরপরই জাতিসংঘের সহায়তা প্রধান নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছিলেন, ক্রেমলিনের এ সিদ্ধান্তে শস্যের দাম বেড়ে যাবে ও বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ খাদ্যসংকটে পড়বে।
সূত্র: রয়টার্স