যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য দুঃসংবাদ : ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য
-
ডেস্ক :
-
আপডেট সময়
০৪:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
- 135
অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য বড় রকমের দুঃসংবাদ। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ ফাস্ট ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। ফলে অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হওয়া ১০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা যায়, অ্যাসাইলাম আবেদন করে ব্যর্থ হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তির অধীনে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। মূলত ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর দেশটির ভিসা ব্যবস্থার অপব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিরা শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে। গত বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন শুধুমাত্র স্থায়ীভাবে দেশটিতে থাকার প্রয়াসে। আর দেশটিতে প্রবেশের পর আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন তারা।
অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় ব্রিটেনে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। তবে দেশটিতে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদনের মাত্র পাঁচ শতাংশই সফল হয়েছে। অর্থাৎ ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে। এমন অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তির অধীনে কেবল ব্যর্থ আশ্রয়প্রার্থীরাই নয়, বিদেশি নাগরিকদের যারা অপরাধী এবং যেসব ব্যক্তি ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের পর বাড়তি সময় অতিবাহিত করেছেন তাদেরও নির্বাসনের কাজ সহজতর হবে। এছাড়া, রিটার্ন চুক্তিটির ফলে বাধ্যতামূলক কোনো সাক্ষাৎকার ছাড়াই অভিযুক্তদের দেশে ফেরত পাঠনো যাবে কারণ এসকল অভিবাসীদের দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য সহায়ক প্রমাণ রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে লন্ডনে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় পক্ষ রিটার্ন চুক্তিটিতে সম্মত হয়। সেখানে উভয় দেশ তাদের মধ্যকার অংশীদারিত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতা আরো জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার কথা জানায়। মাইকেল টমলিনসন বলেন, ‘অবৈধভাবে এখানে আসা বা থাকা বন্ধ করার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের অপসারণের কাজ ত্বরান্বিত করা আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশ (যুক্তরাজ্যের) একটি মূল্যবান অংশীদার এবং আমরা তাদের সাথে এই ইস্যুর পাশাপাশি অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করছি। এই ধরনের চুক্তিগুলো অবৈধ অভিবাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে বলে আমরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট প্রমাণ দেখতে পেয়েছি। বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর বৈশ্বিক সমাধান প্রয়োজন এবং আমি সবার জন্য ন্যায্য ব্যবস্থা তৈরি করতে বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রেকর্ড ২১ হাজার ৫২৫ জন ভিসাধারী যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি। এর মানে যুক্তরাজ্যের ভিসা নিয়ে প্রবেশকারী প্রতি ১৪০ জনের মধ্যে একজন দেশটিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছে। আর ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয় আবেদনকারীদের মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে পাকিস্তানিরা। পাকিস্তানের প্রায় ১৭ হাজার ৪০০ জন নাগরিক দেশটিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। আর এরপরই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। বাংলাদেশি আশ্রয় আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এরপর ভারতের ৭ হাজার ৪০০ জন, নাইজেরিয়ার ৬ হাজার ৬০০ জন এবং আফগানিস্তানের রয়েছে ৬ হাজার জন। এদিকে, গত বছর যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার নেই এমন ২৬ হাজার লোককে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি।
ট্যাগস