ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিশা-ডিপজলকে জয়ের মালা দিয়ে বরণের পর হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
  • 125

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনে হেরে ফুলের মালা দিয়ে বিজয়ী সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে বরণ করে নিয়েছিলেন নিপুণ। হাসিমুখেই সেদিন সকালে সব শেষ হয়। একে অপরকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথাও বলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু হাসিমুখ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। মনে মনে কী যেন পুষে রেখেছিলেন নিপুণ। যার ফলাফল দেখা গেল, শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আয়োজন শেষ হওয়ার চার সপ্তাহে এসে। 

জানা গেছে, ফুলের মালা দিয়ে যাঁদের বরণ করে নিয়েছিলেন, সেই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পুরো কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত বুধবার হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ। গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের মেয়াদের নির্বাচন। এতে নিপুণ ও মাহমুদ কলি প্যানেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিশা-ডিপজল প্যানেল। সারা দিন ভোট গ্রহণ শেষে পরদিন ২০ এপ্রিল সকালে ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, নিপুণের প্যানেলের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিতও ছিলেন নিপুণ। এরপর তিনি ডিপজল ও মিশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। মিশা ও ডিপজল তাঁদের পরিয়ে দেওয়া মালা নিপুণকে পরিয়ে দেন। নিপুণের প্রশংসা করে সেদিন মিশা সওদাগর বলেছিলেন, আমরা জিতেছি, এটা বড় কথা নয়, নিপুণসহ তাঁর প্যানেলের সবাই আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা সবাই এক।

ডিপজলও বলেছিলেন, নিপুণকে আমি এনেছিলাম চলচ্চিত্রে। তাতে হার-জিত বড় কথা নয়। ওকে আমি মেয়ের মতোই স্নেহ করি। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে থাকতে চাই। কোনো ভাগাভাগি চাই না। নির্বাচনের চার সপ্তাহে এসে সব সমীকরণ যেন পাল্টে গেল। নিপুণ করেছেন হাইকোর্টে রিট। সেই খবর শুনে মিশা সওদাগর হুংকার ছুড়েছেন। ডিপজল বলছেন, কেস খেলবা আসো। যেটা খেলার মন চায়, সেটাই খেলো।

রিট করা প্রসঙ্গে এত দিন পর এসে নিপুণ বলছেন, ‘ভোট শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা সাতটা থেকে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কথাবার্তা রহস্যজনক মনে হয়েছে। তা ছাড়া যতই রাত বাড়ছিল, ততই ভোট কেন্দ্র ও বাইরের পরিবেশ আমার কাছে হুমকিস্বরূপ মনে হচ্ছিল। সেদিনের এমন পরিবেশ আমি আগে কখনো দেখিনি এফডিসিতে। পুরো আঙিনা তারা দখলে নিয়েছিল। ভোটের গণনা শেষ হতে তখনো অনেক সময় বাকি ছিল, কিন্তু তাদের হাবভাবে মনে হচ্ছিল, তখনই তারা পুরো প্যানেল জিতে গেছে। আমি নিজেও নিরাপদ মনে করিনি ভোট গণনার পুরো রাত। তাই আমিসহ আমার প্যানেলের কয়েকজন ১ নম্বর স্টুডিওর মেকআপ রুমে তালা মেরে ভেতরে বসে ছিলাম ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।’

রিট করার পেছনে অভিযোগ হিসেবে নিপুণ আরও বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন বাতিল ভোটের সংখ্যা সঠিক দেননি। আমার জানামতে, ৮১টি ভোট বাতিল হয়েছে। কিন্তু তারা ৪০টি ভোট বাতিল দেখিয়েছে। এ নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো কিছুই আমাদের প্যানেলকে জানায়নি নির্বাচন কমিশন।’ তাহলে অনিয়ম জেনেও কেন বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন—এমন প্রশ্নে নিপুণের বক্তব্য এ রকম, ‘ওই সময় সেটি করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তা ছাড়া মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, আপিল বোর্ডের যোগসাজশে ভেতরে-ভেতরে এত বড় অনিয়ম চলে আসছিল, সেটি ফলাফল প্রকাশের অনেক সময় পর স্পষ্ট হয়েছে।’ গত বৃহস্পতিবার শিল্পী সমিতির নতুন কমিটিকে সংবর্ধনা দিয়েছেন মিশা ও ডিপজল–সমর্থিত শিল্পীরা। এ সময়ে নিপুণের রিট এবং বর্তমান কমিটি নিয়ে তাঁর কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন মিশা ও ডিপজল। মিশা সওদাগর কারও নাম উল্লেখ না করে দেওয়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যিনি সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন, তাঁকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝিয়ে দেব শিল্পী সমিতির সংগঠন কী? এবার শিল্পী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কে? এবার শিল্পী সমিতির ক্যাবিনেটটা কী?’

ট্যাগস

মিশা-ডিপজলকে জয়ের মালা দিয়ে বরণের পর হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ

আপডেট সময় ০৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনে হেরে ফুলের মালা দিয়ে বিজয়ী সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে বরণ করে নিয়েছিলেন নিপুণ। হাসিমুখেই সেদিন সকালে সব শেষ হয়। একে অপরকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথাও বলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু হাসিমুখ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। মনে মনে কী যেন পুষে রেখেছিলেন নিপুণ। যার ফলাফল দেখা গেল, শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আয়োজন শেষ হওয়ার চার সপ্তাহে এসে। 

জানা গেছে, ফুলের মালা দিয়ে যাঁদের বরণ করে নিয়েছিলেন, সেই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পুরো কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে গত বুধবার হাইকোর্টে রিট করেছেন নিপুণ। গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের মেয়াদের নির্বাচন। এতে নিপুণ ও মাহমুদ কলি প্যানেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিশা-ডিপজল প্যানেল। সারা দিন ভোট গ্রহণ শেষে পরদিন ২০ এপ্রিল সকালে ঘোষিত ফলাফলে জানা যায়, নিপুণের প্যানেলের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিতও ছিলেন নিপুণ। এরপর তিনি ডিপজল ও মিশাকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। মিশা ও ডিপজল তাঁদের পরিয়ে দেওয়া মালা নিপুণকে পরিয়ে দেন। নিপুণের প্রশংসা করে সেদিন মিশা সওদাগর বলেছিলেন, আমরা জিতেছি, এটা বড় কথা নয়, নিপুণসহ তাঁর প্যানেলের সবাই আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা সবাই এক।

ডিপজলও বলেছিলেন, নিপুণকে আমি এনেছিলাম চলচ্চিত্রে। তাতে হার-জিত বড় কথা নয়। ওকে আমি মেয়ের মতোই স্নেহ করি। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে থাকতে চাই। কোনো ভাগাভাগি চাই না। নির্বাচনের চার সপ্তাহে এসে সব সমীকরণ যেন পাল্টে গেল। নিপুণ করেছেন হাইকোর্টে রিট। সেই খবর শুনে মিশা সওদাগর হুংকার ছুড়েছেন। ডিপজল বলছেন, কেস খেলবা আসো। যেটা খেলার মন চায়, সেটাই খেলো।

রিট করা প্রসঙ্গে এত দিন পর এসে নিপুণ বলছেন, ‘ভোট শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা সাতটা থেকে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ও আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের কথাবার্তা রহস্যজনক মনে হয়েছে। তা ছাড়া যতই রাত বাড়ছিল, ততই ভোট কেন্দ্র ও বাইরের পরিবেশ আমার কাছে হুমকিস্বরূপ মনে হচ্ছিল। সেদিনের এমন পরিবেশ আমি আগে কখনো দেখিনি এফডিসিতে। পুরো আঙিনা তারা দখলে নিয়েছিল। ভোটের গণনা শেষ হতে তখনো অনেক সময় বাকি ছিল, কিন্তু তাদের হাবভাবে মনে হচ্ছিল, তখনই তারা পুরো প্যানেল জিতে গেছে। আমি নিজেও নিরাপদ মনে করিনি ভোট গণনার পুরো রাত। তাই আমিসহ আমার প্যানেলের কয়েকজন ১ নম্বর স্টুডিওর মেকআপ রুমে তালা মেরে ভেতরে বসে ছিলাম ভোটের ফলাফল পর্যন্ত।’

রিট করার পেছনে অভিযোগ হিসেবে নিপুণ আরও বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন বাতিল ভোটের সংখ্যা সঠিক দেননি। আমার জানামতে, ৮১টি ভোট বাতিল হয়েছে। কিন্তু তারা ৪০টি ভোট বাতিল দেখিয়েছে। এ নিয়ে স্পষ্ট করে কোনো কিছুই আমাদের প্যানেলকে জানায়নি নির্বাচন কমিশন।’ তাহলে অনিয়ম জেনেও কেন বিজয়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন—এমন প্রশ্নে নিপুণের বক্তব্য এ রকম, ‘ওই সময় সেটি করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তা ছাড়া মিশা-ডিপজল প্যানেলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন, আপিল বোর্ডের যোগসাজশে ভেতরে-ভেতরে এত বড় অনিয়ম চলে আসছিল, সেটি ফলাফল প্রকাশের অনেক সময় পর স্পষ্ট হয়েছে।’ গত বৃহস্পতিবার শিল্পী সমিতির নতুন কমিটিকে সংবর্ধনা দিয়েছেন মিশা ও ডিপজল–সমর্থিত শিল্পীরা। এ সময়ে নিপুণের রিট এবং বর্তমান কমিটি নিয়ে তাঁর কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন মিশা ও ডিপজল। মিশা সওদাগর কারও নাম উল্লেখ না করে দেওয়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যিনি সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন, তাঁকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝিয়ে দেব শিল্পী সমিতির সংগঠন কী? এবার শিল্পী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কে? এবার শিল্পী সমিতির ক্যাবিনেটটা কী?’