সিনিয়র রিপোর্টার
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের নতুন ঘোষিত এক দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ মোড়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অবস্থান নিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় ও নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও চানখারপুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওঠার রাস্তা অবরোধ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হল, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শাহবাগে অবস্থান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ফলে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে অবরোধের কারণে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে লেকচার থিয়েটার ভবন, মাস্টার দা সূর্য সেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, ভিসি চত্বর, টিএসসির রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগে এসে জড়ো হন তারা।
শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা, একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো; ব্লকেড ব্লকেড, বাংলা ব্লকেড; ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’; ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’; ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ,; ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন৷
শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শেষে সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, মহাসড়ক অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দেন। যাকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ হিসেবে ঘোষণা করেন। যে কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার (৭ জুলাই) শাহবাগ, চানখারপুল, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা। নিউমার্কেট-সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন ইডেন ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি শেষে রাত ৮টার দিকে আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সোমবার সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ ঘোষণা করেন। এ সময় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র ধর্মঘট চলবে বলে জানান তিনি।
কোটা বাতিলে চার দফা দাবি বাতিল করে রবিবার এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে আন্দোলনস্থল থেকে। আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবিটি ঘোষণা করেন। দাবিটি হলো- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যুনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা সকল প্রকার নাতিপুতি কোটা-পৌষ্য কোটাকে অযৌক্তিক কোটা মনে করছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। আজকেই আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যাব।