ঢাকা , সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা আন্দোলন : বৃহস্পতিবারও দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪
  • 102

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দেশব্যাপী অর্ধদিবস ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে এই ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ওই একই সময়ে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হবেন এবং পরবর্তী ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে।

বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহবাগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলন’-এর অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা গত ৫ জুন থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজপথে রয়েছে। ফলে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন তারা শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেটের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আগারগাঁও, মহাখালীসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি এলাকা অবরোধ করেন। কারওয়ান বাজার রেলগেট ও মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে কাঠের গুড়ি ফেলে রাখায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, ততদিন কর্মসূচি চলবে।

এর আগে, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার ও শনিবার থেকে সোমবার একই দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। গত শনিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্লকেড করার ঘোষণা দেয়। যার নাম দেয় ‘বাংলা ব্লকেড’। সবশেষ ৯ জুলাই সারা দেশে একযোগে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছি। এটার স্থায়ী সমাধান তখনই হবে, যদি আইন পাস করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা হয়। আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। নির্বাহী বিভাগ যদি একটি আদেশ জারি অথবা একটি ত্রুটিহীন পরিপত্র জারি করা হয় তবে আমাদের আর রাজপথে দেখবেন না।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পর সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থা বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।

গত ৫ জুন রায় ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ার বাধা দূর হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলাটিতে পক্ষভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান আবেদন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

হাজারীবাগে ভবন নির্মাণে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ১

কোটা আন্দোলন : বৃহস্পতিবারও দেশব্যাপী ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা

আপডেট সময় ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

সিনিয়র রিপোর্টার

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দেশব্যাপী অর্ধদিবস ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে এই ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করবে। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ওই একই সময়ে শিক্ষার্থীরা জমায়েত হবেন এবং পরবর্তী ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে।

বুধবার (১০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শাহবাগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দেলন’-এর অন্যতম সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

আসিফ মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা গত ৫ জুন থেকে ধারাবাহিকভাবে রাজপথে রয়েছে। ফলে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিন তারা শাহবাগ, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেটের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আগারগাঁও, মহাখালীসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি এলাকা অবরোধ করেন। কারওয়ান বাজার রেলগেট ও মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে কাঠের গুড়ি ফেলে রাখায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হয়, ততদিন কর্মসূচি চলবে।

এর আগে, মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার ও শনিবার থেকে সোমবার একই দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। গত শনিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্লকেড করার ঘোষণা দেয়। যার নাম দেয় ‘বাংলা ব্লকেড’। সবশেষ ৯ জুলাই সারা দেশে একযোগে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছি। এটার স্থায়ী সমাধান তখনই হবে, যদি আইন পাস করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা হয়। আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। নির্বাহী বিভাগ যদি একটি আদেশ জারি অথবা একটি ত্রুটিহীন পরিপত্র জারি করা হয় তবে আমাদের আর রাজপথে দেখবেন না।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পর সরকার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পুরো কোটাব্যবস্থা বাতিল করে। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিট করেন।

গত ৫ জুন রায় ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নবম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ার বাধা দূর হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন মামলাটিতে পক্ষভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান আবেদন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে কোটা বহালে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।