নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ ও চীন আর্থিক নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে লেনদেন নিষ্পত্তিতে স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়াতে সম্মতি দিয়েছে। বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দিনের সরকারি সফর শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত হয়।এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনা ব্যাংকগুলোকে দেশে শাখা স্থাপনের জন্য স্বাগত জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও চীন আন্তর্জাতিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়ে সমন্বয় জোরদার করতে সম্মত হয়েছে। একইসঙ্গে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিন্ন স্বার্থ যৌথভাবে রক্ষায় আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন, মানবাধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি রূপান্তর ও পরিবেশ সুরক্ষা সম্পর্কিত বহুপক্ষীয় বিষয়গুলোতে নিজেদের অবস্থান আরও সমন্বিত ও বৃহত্তর ঐকমত্য গড়ে তুলতে সম্মতি জানিয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের পেশ করা বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগের বিভিন্ন দিক নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত চীন। এছাড়াও সবার জন্য শান্তি, উন্নয়ন ও অভিন্ন সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (জিএসআই) এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ (জিসিআই) বাংলাদেশের পক্ষকে উপস্থাপন করেছে চীন।
প্রসঙ্গত, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি’র আমন্ত্রণে ৮ থেকে ১০ জুলাই সরকারি সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাতে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সফরকালে শেখ হাসিনা শি’র সঙ্গে বৈঠক করেন এবং চীনা পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সৌহার্দ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ইস্যুতে গভীর মতবিনিময় করেছে ও বিস্তৃত ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীতে চীনা পক্ষকে অভিনন্দন জানানো হয় এবং নতুন যুগে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে দেশটির ঐতিহাসিক অর্জন ও রূপান্তরের প্রশংসা করা হয়।
চীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে এবং নির্ধারিত সময়ে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রগতির প্রতি অব্যাহত সমর্থন ব্যক্ত করেছে। উভয় পক্ষ ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রশংসা করে এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে সম্মত হয়।